রবিবার, ২৮ জুন, ২০২০ ০০:০০ টা

হতাশায় পদপ্রত্যাশীরা

করোনায় আওয়ামী লীগের সহযোগী সংগঠনের কমিটি গঠনে বিলম্ব

রফিকুল ইসলাম রনি

গঠনতন্ত্র অনুযায়ী আওয়ামী লীগের সহযোগী ও ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠনগুলোর মেয়াদ দুই বছর। চার সহযোগী ও একটি ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠনের সাত মাস আগে সম্মেলন হলেও এখনো পূর্ণাঙ্গ কমিটি হয়নি। আগামীতে নির্ধারিত সময়ে সম্মেলন হলে আর বাকি থাকে ১৩ মাস। করোনার এই সময়ে কমিটি ঘোষণার কোনো লক্ষণ দেখছেন না পদ-পদবি প্রত্যাশীরা। ফলে অনেকটা হতাশা ও পরিচয়হীনভাবে সময় কাটছে তাদের। গত ৬ নভেম্বর কৃষক লীগ, ৯ নভেম্বর জাতীয় শ্রমিক লীগ, ১৬ নভেম্বর স্বেচ্ছাসেবক লীগের সম্মেলন হয়েছে। যুবলীগের জাতীয় কংগ্রেস হয়েছে ২৩ নভেম্বর, ২৯ নভেম্বর মৎস্যজীবী লীগ এবং স্বেচ্ছাসেবক লীগের মহানগর দক্ষিণ ও উত্তর যথাক্রমে ১১ ও ১২ নভেম্বর সম্মেলন হয়।

গঠনতন্ত্র অনুযায়ী যুবলীগের ১৫১, স্বেচ্ছাসেবক লীগের ১৫১, কৃষক লীগের ১১১, মৎস্যজীবী লীগের ১১১, জাতীয় শ্রমিক লীগের ৩৫, মহানগর স্বেচ্ছাসেবক লীগের ১০১ সদস্যবিশিষ্ট কমিটি। দীর্ঘ সাত মাসেও পূর্ণাঙ্গ কমিটি না হওয়ায় পূর্ব ঘোষিত নেতাদের বাদে পদ খালি রয়েছে ৭৪২টি। বিপরীতে প্রায় সাত হাজার বায়োডাটা জমা পড়েছে বলে জানা গেছে। তবে দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতারা জানিয়েছেন, যুবলীগ বাদে প্রতিটি সংগঠন কমিটির খসড়া করে চূড়ান্ত অনুমোদনের জন্য সাংগঠনিক নেত্রী আওয়ামী লীগ সভানেত্রী প্রধানমন্ত্রীর কাছে জমা দিয়েছেন। চূড়ান্ত অনুমোদন পেলেই তা প্রকাশ করা হবে। পদপ্রত্যাশীদের অপেক্ষা বাড়লেও বর্তমান পরিস্থিতিতে পূর্ণাঙ্গ কমিটি হচ্ছে না বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাবেক সহ-প্রচার সম্পাদক ওবায়দুল হক খান বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, পূর্ণাঙ্গ কমিটি না থাকায় অনেক নেতা-কর্মী কাজে উৎসাহ হারাচ্ছেন। কমিটি ঘোষণা করা হলে কাজে আরও বেশি উৎসাহ পাব। পূর্ণাঙ্গ কমিটির সর্বশেষ অবস্থা জানতে চাইলে কৃষক লীগ সভাপতি সমীর চন্দ বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, সম্মেলন শেষে ২৩ দিনের মাথায় কৃষক লীগের সাংগঠনিক নেত্রী ও আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনার কাছে প্রস্তাবিত কমিটি আমরা জমা দিয়েছি। এখন ওনার সদয় অনুমোদনের অপেক্ষায় আছি। কবে নাগাদ পূর্ণাঙ্গ কমিটির তালিকা পেতে পারেন বলে আশা করছেন জানতে চাইলে কৃষক লীগ সভাপতি বলেন, করোনা সংক্রমণের মধ্যে আমরা এটা নিয়ে খুব একটা ভাবছি না। নেত্রী যখন দেবেন, তখনই আমরা ছেড়ে দেব। কংগ্রেসের পর সাত মাস পার হলেও এখনো পূর্ণাঙ্গ কমিটি প্রস্তুত করতে পারেনি যুবলীগ। পদ-প্রত্যাশীদের বায়োডাটা যাচাই-বাছাইয়ের মধ্যেই করোনার হানায় পিছিয়ে পড়েছেন তারা। এ প্রসঙ্গে যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক মাইনুল হোসেন খান নিখিল বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, আমাদের কংগ্রেস হওয়ার পর ঢাকা সিটি নির্বাচন। এরপর করোনাসহ নানা কারণে পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠন করতে দেরি হয়েছে। তবে আমরা কাজ করছি। খুব শিগগিরই খসড়া তালিকা করে সাংগঠনিক নেত্রী রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনার কাছে জমা দেব। ছাত্রলীগের সাবেক নেতাদের বেশি প্রাধান্য পেয়ে থাকে ক্ষমতাসীন দলের সহযোগী সংগঠন স্বেচ্ছাসেবক লীগে। তবে এবার খসড়া কমিটি আগেই ফাঁস হওয়ায় দেখা গেছে ১/১১ সময়ে যেসব ছাত্রনেতা মাঠে সক্রিয় ছিলেন তাদের নাম নেই। স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাধারণ সম্পাদক আফজালুর রহমান বাবু বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, যারা বায়োডাটা জমা দিয়েছিলেন তাদের মধ্যে থেকে যাচাই-বাছাই করেই খসড়া তালিকা আওয়ামী লীগ সভানেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে জমা দিয়েছি। তিনি চূড়ান্ত অনুমোদন দিলেই আমরা কমিটি ঘোষণা করব। মৎস্যজীবী লীগের সাধারণ সম্পাদক আলী আজগর নস্কর বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, প্রকৃত মৎস্যজীবীদের যাচাই-বাছাই করেই আমরা খসড়া করে চূড়ান্ত অনুমোদনের জন্য জমা দিয়েছি। এ পরিস্থিতিতে কমিটি কবে হবে তা বলা মুশকিল। জাতীয় শ্রমিক লীগের সভাপতি ফজলুল হক মন্টু বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, সম্মেলনের কয়েক দিনের মধ্যেই আমরা খসড়া তালিকা জমা দিয়েছি। এখন অপেক্ষায় আছি, কখন কমিটি অনুমোদন হয়। স্বেচ্ছাসেবক লীগ ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সভাপতি কামরুল হাসান রিপন বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, আমরা কমিটি করেছিলাম। কিন্তু কেন্দ্র এখন কমিটি দিতে নিষেধ করেছে। আগে করোনা পরিস্থিতি স্বাভাবিক হোক তারপর কমিটি অনুমোদন করা হবে বলেও জানান তিনি।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর