শিরোনাম
বৃহস্পতিবার, ২ জুলাই, ২০২০ ০০:০০ টা

ট্রান্সকম গ্রুপের চেয়ারম্যান লতিফুর রহমান আর নেই

বসুন্ধরা গ্রুপ চেয়ারম্যানের শোক

নিজস্ব প্রতিবেদক

ট্রান্সকম গ্রুপের চেয়ারম্যান লতিফুর রহমান আর নেই

বিশিষ্ট ব্যবসায়ী ও ট্রান্সকম গ্রুপের চেয়ারম্যান লতিফুর রহমান আর নেই (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)। গতকাল বেলা সাড়ে ১১টায় কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামে নিজ বাসভবনে তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। লতিফুর রহমান স্ত্রী, ছেলে, দুই মেয়েসহ আত্মীয়স্বজন ও অসংখ্য গুণগ্রাহী রেখে গেছেন। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৭৫ বছর। বিশিষ্ট শিল্পপতি ও ট্রান্সকম গ্রুপের চেয়ারম্যান লতিফুর রহমানের মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করেছেন বসুন্ধরা গ্রুপের চেয়ারম্যান আহমেদ আকবর সোবহান। এক শোকবার্তায় তিনি বলেন, দেশের শিল্প-বাণিজ্যের অন্যতম পথিকৃৎ লতিফুর রহমান বাংলাদেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে এক গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখে গেছেন। নতুন প্রজন্মের উদ্যোক্তাদের মধ্যে তিনি সবসময় অনুপ্রেরণার উৎস হয়ে বেঁচে থাকবেন। বসুন্ধরা চেয়ারম্যান মরহুমের রুহের মাগফিরাত কামনা এবং তাঁর শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা জানান। এ ছাড়া লতিফুর রহমানের মৃত্যুতে বিশিষ্টজনরা শোক জানিয়েছেন।

পারিবারিক সূত্র জানিয়েছে, লতিফুর রহমানের মৃতদেহ গতকাল সন্ধ্যার পর ঢাকায় আনা হয়। গুলশানের আজাদ মসজিদে বাদ এশা জানাজা শেষে রাতেই বনানী কবরস্থানে তাঁর লাশ দাফন করা হয়।

লতিফুর রহমানের জন্ম জলপাইগুড়িতে ১৯৪৫ সালের ২৮ আগস্ট। তিনি ঢাকায় থাকতেন গেন্ডারিয়ায়।

তিনি পড়াশোনা শুরু করেন সেন্ট ফ্রান্সিস স্কুলে। সেখান থেকে ১৯৫৬ সালে শিলংয়ের সেন্ট এডমন্ডস স্কুলে। তারপর কলকাতার সেন্ট জেভিয়ার্স কলেজে। ১৯৬৫ সালে ঢাকায় ফিরে আসেন লতিফুর রহমান। ঢাকায় এসে ১৯৬৬ সালে ডব্লিউ রহমান জুট মিলে ট্রেইনি হিসেবে কাজ শুরু করেন তিনি। দেড় বছর কাজ শেখার পর নির্বাহী হিসেবে যোগ দেন। এভাবে কাজ করেন ১৯৭১ সাল পর্যন্ত।

১৯৭২ সালে তিনি সবকিছু নতুন করে শুরু করেছিলেন প্রায় শূন্য হাতে। নিজের হাতে তৈরি বাংলাদেশের শীর্ষস্থানীয় ব্যবসায়িক গ্রুপ ট্রান্সকম গ্রুপের চেয়ারম্যান ছিলেন লতিফুর রহমান।

ট্রান্সকম গ্রুপে এখন কাজ করছেন ১০ হাজারের বেশি মানুষ। ব্যবসা পরিচালনার ক্ষেত্রে নীতি-নৈতিকতা, সুনাম আর সততার স্বীকৃতি হিসেবে ২০১২ সালে তিনি পান বিজনেস ফর পিস অ্যাওয়ার্ড, যা ব্যবসা-বাণিজ্যের জগতে নোবেল বলে খ্যাত।

লতিফুর রহমান প্রথম আলোর পরিচালনাকারী প্রতিষ্ঠান মিডিয়াস্টার লিমিটেডের চেয়ারম্যান ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক ছিলেন। এ ছাড়া ইংরেজি দৈনিক দ্য ডেইলি স্টার পরিচালনাকারী প্রতিষ্ঠান মিডিয়াওয়ার্ল্ডের প্রতিষ্ঠাতা পরিচালক ছিলেন তিনি।

লতিফুর রহমান ঢাকা মেট্রোপলিটন চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির সাতবারের প্রেসিডেন্ট এবং বাংলাদেশ এমপ্লয়ার্স ফেডারেশনের সভাপতি ছিলেন।

উল্লেখ্য, চার বছর আগে এই দিনে ২০১৬ সালের ১ জুলাই রাতে ঢাকার গুলশানে হোলি আর্টিজান বেকারিতে নৃশংস জঙ্গি হামলায় প্রাণ হারান লতিফুর রহমানের প্রিয় নাতি ফারাজ আইয়াজ হোসেন।

শোক : বিশিষ্ট শিল্পপতি ও ট্রান্সকম গ্রুপের চেয়ারম্যান লতিফুর রহমানের মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করেছেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল, পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ, বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি, প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রী ইমরান আহমদ, তথ্য প্রতিমন্ত্রী ডা. মুরাদ হাসান, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী ডা. মো. এনামুর রহমান, পানিসম্পদ প্রতিমন্ত্রী জাহিদ ফারুক ও একই মন্ত্রণালয়ের উপমন্ত্রী এ কে এম এনামুল হক শামীম। এ ছাড়া জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল-জাসদের সভাপতি হাসানুল হক ইনু ও সাধারণ সম্পাদক শিরীন আখতার, জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান জি এম কাদের, ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) মেয়র মো. আতিকুল ইসলাম, বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর গভীর শোক প্রকাশ করেছেন। এফবিসিসিআইর সাবেক পরিচালক এবং ট্রান্সকম গ্রুপের চেয়ারম্যান শিল্পপতি লতিফুর রহমানের মৃত্যুতে শোক ও দুঃখ প্রকাশ করেছেন এফবিসিসিআইর সভাপতি শেখ ফজলে ফাহিম, ঢাকা মেট্রোপলিটন চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির সভাপতি ব্যারিস্টার নিহাদ কবির, আমিন মোহাম্মদ গ্রুপের চেয়ারম্যান এম এম এনামুল হক, ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (ডিসিসিআই) সভাপতি শামস মাহমুদ, সাবেক বাণিজ্যমন্ত্রী ও বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরীসহ থিঙ্কট্যাঙ্ক বিজনেস ইনিশিয়েটিভ লিডিং ডেভেলপমেন্ট (বিল্ড) ট্রাস্টি বোর্ড মেম্বার, ম্যানেজমেন্ট ও কর্মী।

সর্বশেষ খবর