শুক্রবার, ৩ জুলাই, ২০২০ ০০:০০ টা
বর্বরতা

বান্দরবানে দুই ভাই, রাজশাহীতে কলেজছাত্রকে পিটিয়ে হত্যা

প্রতিদিন ডেস্ক

বান্দরবানে দুই ভাইকে এবং রাজশাহীতে এক কলেজছাত্রকে পিটিয়ে হত্যার ঘটনা ঘটেছে। বান্দরবানে মঙ্গলবার বিকালে এবং রাজশাহীতে বুধবার রাতে হত্যার এ দুই ঘটনা ঘটে। নিজস্ব প্রতিবেদক ও প্রতিনিধির পাঠানো খবর- বান্দরবান : বান্দরবানের রুমায় অস্ত্র নিয়ে পাড়াবাসীর ওপর হামলার অভিযোগে দুই ভাইকে পিটিয়ে হত্যার ঘটনা ঘটেছে, তারা ছিলেন পাহাড়ে পপি চাষ মামলার আসামি। উপজেলার রেমাক্রি প্রাংসা ইউনিয়নের হ্লাচিংপাড়ায় মঙ্গলবার বিকালে এ ঘটনা ঘটে বলে রুমা থানার ওসি আবুল কাসেম জানান।

নিহতরা হলেন- প্রাংসা ইউনিয়নের ৩ নম্বর ওয়ার্ডের তাইংরাগ্রপাড়ার থোয়াহ্লাচিং মারমার ছেলে থোয়াইবাঅং মারমা (৩৮) ও ক্যসুইথোয়াই মারমা (৩২)। নিহতদের ছোট ভাই ক্যমংহ্লা মারমা বলেন, মঙ্গলবার হ্লাচিংপাড়ায় একটি সামাজিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। সেখানে পাড়ার দুই ব্যক্তির মধ্যে ঝগড়া ও বাকবিতন্ডা হলে তার ভাইয়েরা মীমাংসা করার জন্য সেখানে যায়। এক পর্যায়ে একজন বয়স্ক ব্যক্তি মাটিতে পড়ে গেলে রটানো হয় যে, আমার দুই ভাই পাড়ার মুরব্বির গায়ে হাত তুলেছে। এরপর সেখানে উপস্থিত লোকজন তাদের এলোপাতাড়ি মারধর করে এবং পরে একটা পাহাড়ের পাশে তাদের বেঁধে হত্যা করে। স্থানীয়দের অভিযোগ, ওই ঝগড়ার ঘটনাকে কেন্দ্র করে দুই ভাই দেশীয় অস্ত্র নিয়ে পাড়ার বাসিন্দাদের ওপর হামলা করেছিল। তবে এ অভিযোগ অস্বীকার করেছেন ক্যমংহ্লা মারমা। ওসি বলেন, ঘটনাটি মঙ্গলবার ঘটলেও স্থানীয়রা বুধবার বিকালে পুলিশকে খবর  দেয়। এলাকাটি মোবাইল নেটওয়ার্ক বিচ্ছিন্ন এবং দুর্গম হওয়ায় ওই দিন লাশ উদ্ধার করা যায়নি। বুধবার সেখান থেকে লাশ নিয়ে রওনা হলেও রাত হয়ে যাওয়ায় কেওক্রাডং এলাকায় রাতযাপন করতে হয়েছে। ফলে গতকাল সকালেও রুমায় লাশ  পৌঁছায়নি বলে জানান এ পুলিশ কর্মকর্তা। রাজশাহী : রাজশাহীর বাঘা উপজেলায় হৃদয় আহমেদ (২০) নামে এক কলেজছাত্রকে পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছে। এ ঘটনায় পুলিশ চারজনকে গ্রেফতার করেছে। নিহত হৃদয় উপজেলার কলিগ্রাম এলাকার দিল মোহাম্মদ দুখুর ছেলে। বুধবার রাতে আহত অবস্থায় রাজশাহী থেকে ঢাকায় নেওয়ার পথে হৃদয়ের মৃত্যু হয়। এর আগে দুপুরে একটি গাছের ডাল কাটাকে কেন্দ্র করে প্রতিবেশী একটি পরিবারের সদস্যরা তাকে রড ও হাতুড়ি দিয়ে পিটিয়ে আহত করে। গ্রেফতার চারজন হলেন- সাদেক আলী, তার স্ত্রী রুমিয়া বেগম এবং পুত্রবধূ আজমিরা বেগম ও কল্পনা খাতুন। বাঘা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নজরুল ইসলাম এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, হৃদয়ের মৃত্যুর ঘটনায় তার বাবা দিল মোহাম্মদ হত্যা মামলা করেছেন। মামলার বাকি আসামিদেরও গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে। ওসি জানান, বুধবার দুপুরে হৃদয় তার বাড়ির পাশের একটি গাছের ডাল কাটছিল। এ সময় প্রতিবেশী সাদেক আলী দাবি করেন ওই গাছটি তাদের। এ নিয়ে কথা কাটাকাটি শুরু হয়। এ সময় সাদেক আলী তার পরিবারের সদস্যদের নিয়ে হৃদয়ের ওপর হামলা করেন। তাকে বাঁচাতে গেলে আরও কয়েকজন আহত হন। এরপর তাদের সবাইকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। রাতে হৃদয়ের শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে তাকে ঢাকায় নেওয়া হচ্ছিল। পথেই তার মৃত্যু হয়। পরে মৃতদেহ বাড়িতে আনা হয়। এরপর খবর পেয়ে মৃতদেহটি উদ্ধার করে থানায় নেওয়া হয়। ময়নাতদন্তের জন্য গতকাল সকালে মৃতদেহটি রাজশাহী মেডিকেল কলেজ মর্গে পাঠানো হয়। ওসি জানান, মামলার এজাহারে ১৫ জন আসামির নাম উল্লেখ করা হয়েছে। এদের মধ্যে চারজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। বাকিরা পলাতক। তাদেরও গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে বলেও জানান ওসি।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর