শিরোনাম
শনিবার, ৪ জুলাই, ২০২০ ০০:০০ টা

আজ থেকে লকডাউনে ওয়ারী

নিজস্ব প্রতিবেদক

করোনা সংক্রমণ রোধে আজ লকডাউন শুরু হচ্ছে পুরান ঢাকার ওয়ারীতে। এ অবস্থায় জীবন-জীবিকার তাগিদে অনেকে এলাকা ছেড়েছেন। এরই মধ্যে প্রায় সবগুলো সড়কেই ব্যারিকেড দিয়েছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। লকডাউনে জরুরি বিধিনিষেধ এড়াতে আসবাবপত্র নিয়ে ওয়ারী এলাকা ছেড়েছেন অনেকে। আবার এলাকার বাইরে কর্মস্থল হওয়ায় কাজ হারানোর শঙ্কায় আছেন কেউ কেউ। এলাকার ভিতরে যাদের রুটি-রুজির ব্যবস্থা তারাও পড়েছেন বিপাকে। এমন বাস্তবতায় ২১ দিনের জন্য লকডাউনে যাচ্ছে ওয়ারী এলাকা। এলাকাবাসী জানান, হুট করে লকডাউন দিয়ে দিল। আমরা চলব কীভাবে? খাব কি? ঘরভাড়াই বা কীভাবে দেব? অফিসে না গেলে চাকরি থাকবে না। আজ থেকে লকডাউন হলেও এলাকার মোট ১৭টি প্রবেশ পথের মধ্যে ১৫টিতে বাঁশের বেড়া দিয়ে বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। খোলা থাকছে র‌্যাংকিন স্ট্রিট, টিপু সুলতান ক্রসিং এবং হট কেকের মোড়। ইতিমধ্যে প্রায় ২০০ স্বেচ্ছাসেবক প্রস্তুত রাখা হয়েছে বাসিন্দাদের জরুরি সেবার জন্য। ওয়ারী বালিকা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে খোলা হয়েছে করোনা পরীক্ষার জন্য নমুনা সংগ্রহের বুথ। লকডাউন বাস্তবায়নে পুলিশ ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পাশাপাশি থাকবে সেনাবাহিনীর টহল। বলধা গার্ডেনের কাছে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন ও পুলিশের একটি কন্ট্রোল রুম থাকবে।

পুলিশ জানিয়েছে, লকডাউন শুরু হলে রেড জোনে অতি জরুরি প্রয়োজন ছাড়া বাসা থেকে বের হওয়া নিষেধ। এসব এলাকার ভিতরে সব ধরনের চলাচল বন্ধ, প্রবেশ বা বের হওয়ার সুযোগ থাকবে নিয়ন্ত্রিত। ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের ৪১ নম্বর ওয়ার্ডের টিপু সুলতান রোড, জাহাঙ্গীর রোড, ঢাকা-সিলেট হাইওয়ে (জয়কালী মন্দির থেকে বলধা গার্ডেন) আউটার রোড এবং ইনার রোড হিসেবে লারমিনি রোড, হরে রোড, ওয়ার রোড, র‌্যাংকিন রোড এবং নওয়াব রোড এ রেড জোনের আওতায় পড়বে। এ অঞ্চলে ২১ দিন থাকবে সাধারণ ছুটি। সরকারি-বেসরকারি সব অফিস-কারখানা বন্ধ থাকবে। সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারী যারা এ এলাকায় বসবাস করেন, তারাও থাকবেন ছুটির আওতায়। দোকান-পাট, বিপণিবিতান, ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানও বন্ধ রাখতে হবে, খোলা থাকবে শুধু ওষুধের দোকান। এসব এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, বিভিন্ন সড়কের মোড়ে মোড়ে বাঁশ দিয়ে বানানো হচ্ছে ব্যারিকেড। মোড়ে মোড়ে টানানো হয়েছে ‘লকডাউন’ লেখা ব্যানার। লকডাউনের জন্য প্রস্তুতি নিতে র‌্যাংকিন স্ট্রিটের একটি সুপার শপে সকাল থেকে কেনাকাটার ভিড় দেখা যায়। এলাকাজুড়ে রিকশায় করে মাইকিং করা হয়। বেশ কয়েকটি শপিংমল, বিভিন্ন ব্র্যান্ডের শো-রুম এবং ফাস্ট ফুডের দোকান খোলা ছিল। তবে লকডাউন শুরুর আগের দিন সড়ক ও অলি-গলিগুলো ছিল অনেকটাই ফাঁকা। ৪১ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর সারোয়ার হাসান আলো জানান, যাওয়া-আসার জন্য ১৭টি স্পটের মধ্যে দুটি খোলা থাকবে। আসা করি এলাকাবাসী সরকারি নির্দেশনা মেনে চলবেন। ওয়ারী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আজিজুর রহমান জানান, তারা সব প্রস্তুতি নিয়েছেন। কভিড-১৯ এর সংক্রমণ বেশি হওয়ায় গত ৩০ জুন দক্ষিণ সিটির ওয়ারী এলাকা রেড জোন হিসেবে ঘোষণা দেয় জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়। এর আগে রাজধানীর পূর্ব রাজারবাগ ২১ দিন লকডাউন করা হয়।

এই রকম আরও টপিক

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর