রবিবার, ৫ জুলাই, ২০২০ ০০:০০ টা

ভোট নয়, পরবর্তী প্রজন্ম নিয়ে ভাবেন শেখ হাসিনা

রফিকুল ইসলাম রনি

ভোট নয়, পরবর্তী প্রজন্ম নিয়ে ভাবেন শেখ হাসিনা

জাহাঙ্গীর কবির নানক

আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য সাবেক স্থানীয় সরকার পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় প্রতিমন্ত্রী জাহাঙ্গীর কবির নানক বলেছেন, সব রাজনীতিক পরবর্তী নির্বাচন নিয়ে ভাবেন। আর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভাবেন পরবর্তী প্রজন্ম নিয়ে। ২০৪১ সালে কেমন হবে, ২১০০ সাল কেমন হবে, সে পরিকল্পনা ও ব্যবস্থা শেখ হাসিনা করে রেখেছেন। গতকাল বাংলাদেশ প্রতিদিনের সঙ্গে টেলিফোনে একান্ত আলাপকালে তিনি এসব কথা বলেন।

আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য জাহাঙ্গীর কবির নানক বলেন, বৈশ্বিক মহামারী করোনার কারণে বিশ্ব নেতারা যখন হিমশিম খাচ্ছেন তখন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মানুষের জীবন ও জীবিকা সচল করতে নানামুখী পদক্ষেপ গ্রহণ করেছেন। ব্যবসায়ীদের প্রণোদনা দিচ্ছেন। কিছু দিন আগে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন সরকার বাংলাদেশের ইতিহাসে সর্ববৃহৎ ৫ লাখ ৬৮ হাজার কোটি টাকার বাজেট ঘোষণা করে এবং তা সংসদে পাস করা হয়েছে। রূপকল্প ২০৪১ বাস্তবায়নের জন্য তিনি নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছেন। তিনি বলেন, এখানেই শেষ নয়, পরবর্তী প্রজন্মের জন্য শত বছরের মহাপরিকল্পনা বাংলাদেশ ডেল্টা প্ল্যান-২১০০ ঘোষণা করেছেন প্রধানমন্ত্রী। এই ডেল্টা প্ল্যান বাস্তবায়নে প্রধানমন্ত্রীকে চেয়ারপারসন করে ‘ডেল্টা গভর্ন্যান্স কাউন্সিল’ গঠন করা হয়েছে। বিএনপির এমপিদের বাজেটের কপি পোড়ানো প্রসঙ্গে সাবেক প্রতিমন্ত্রী বলেন, এবারের বাজেট অর্থনীতিকে অধিকতর শক্তিশালী ও সম্ভাবনা রূপদানের বাজেট। করোনা পরিস্থিতির মধ্যে এই বাজেট প্রণয়ন কাজটি খুবই কঠিন। সেই অসাধ্যকে সাধন করেছেন বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা। কিন্তু বিএনপির এমপিরা বাজেট কপি ছিঁড়ে শুধু সংসদকেই অবমাননা করেননি, গণতন্ত্রকে অশ্রদ্ধা করেছেন।  করোনার কারণে সাংগঠনিক কার্যক্রম বন্ধ থাকলেও অভ্যন্তরীণ কোন্দল বেড়েই চলেছে- এ ব্যাপারে দলীয় পদক্ষেপ কী জানতে চাইলে নানক বলেন, করোনার কারণে সাংগঠনিক কার্যক্রম বন্ধ কথাটি পুরোপুরি সঠিক নয়। হয়তো জেলা-উপজেলা সম্মেলন বন্ধ। আমরা কিন্তু কাজ করে যাচ্ছি। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী উপলক্ষে বৃক্ষ রোপণ কর্মসূচি চলছে। করোনা প্রতিরোধ সামগ্রী বিতরণসহ খাদ্যসামগ্রী নিয়ে জনগণের পাশে রয়েছে। এরমধ্যে ঘূর্ণিঝড় আম্ফান ও বর্তমানে বন্যার সময়ে দলীয় নেতা-কর্মীরা ক্ষতিগ্রস্তদের পাশে দাঁড়িয়েছেন। এটাও সাংগঠনিক কাজের অংশ। তিনি বলেন, কিছু কিছু এলাকায় বিচ্ছিন্ন ঘটনার খবর পাচ্ছি। আমরা দলীয়ভাবে ব্যবস্থা গ্রহণ করছি। একই সঙ্গে স্থানীয় প্রশাসনকে অপরাধীর শাস্তি নিশ্চিত করতে বলেছি। নানক বলেন, অভ্যন্তরীণ কোন্দলের জন্য যত বড় নেতাই জড়িত থাকুক না কেন আমরা কঠোর হস্তে দমন করব। এখানে নেতৃত্বের প্রতিযোগিতা থাকবে। কিন্তু রক্তারক্তি ও হানাহানির ঘটনা কোনোভাবেই বরদাস্ত করা হবে না।  স্বাস্থ্য খাতের সমন্বয়হীনতা ও পাটকল বন্ধে জোট শরিকদের সমালোচনা প্রসঙ্গে আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য নানক বলেন, স্বাস্থ্য খাতে সমন্বয়হীনতা কোথাও নেই। তবে কিছু বিচ্যুতি ও অনিয়মের ঘটনা গণমাধ্যমে প্রকাশ পেয়েছে। যাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছে তাদের ধরা হচ্ছে। আর পাটকল শ্রমিকদের সব সংকট নিরসনের ব্যাপক উদ্যোগ নিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তাদের সব পাওনা একসঙ্গে বুঝিয়ে দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন তিনি। পাশাপাশি পাটকলগুলো আধুনিকায়নের মাধ্যমে বিশ্ববাজারের চাহিদার উপযোগী করে চালুর ক্ষেত্রে এই শ্রমিকদেরই নিয়োগে অগ্রাধিকার দেওয়ার নীতিগত সিদ্ধান্ত দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। করোনাভাইরাস সংক্রমণ পরীক্ষার আরটি-পিসিআর টেস্টের জন্য সরকারি ফি নির্ধারণ করে দেওয়া সম্পর্কে তিনি বলেন, যে ফি নির্ধারণ করে দেওয়া হয়েছে, তা পুনর্বিবেচনা করা যায় কিনা সেজন্য সংশ্লিষ্টদের প্রতি অনুরোধ করছি। কারণ আওয়ামী লীগ গণমানুষের দল। গণমানুষের স্বার্থটা দেখতে হবে। একই সঙ্গে করোনার সংকটকালে সমাজের বিত্তবানদের এগিয়ে আসার আহ্বান জানান তিনি। করোনাকালে আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মীরা সবচেয়ে বড় মানবিকতার পরিচয় দিয়েছেন দাবি করে সাবেক প্রতিমন্ত্রী জাহাঙ্গীর কবির নানক বলেন, করোনার শুরু থেকেই দলীয় সভানেত্রীর নির্দেশে আওয়ামী লীগ, ছাত্রলীগ, যুবলীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগ, কৃষক লীগ, যুব মহিলা লীগ, মহিলাসহ সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মীরা করোনা সামগ্রী বিতরণ, খাদ্য বিতরণসহ অসহায় ও কর্মহীন মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছেন। জীবনের ঝুঁকি নিয়ে অনেক নেতা-কর্মী মাঠে কাজ করেছেন। সে কারণে আমরা কয়েকজন জাতীয় নেতাকে হারিয়েছি।

সর্বশেষ খবর