আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের কষ্টকালে একে অন্যের প্রতি সমব্যথী হওয়ার প্রয়োজনীয়তার ওপর জোর দিয়ে বলেছেন, করোনার আকস্মিক অভিঘাত প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর আয় ও জীবনযাপনে নেতিবাচক প্রভাব ফেলেছে। অনেকেই সঞ্চয় ভেঙে চলছে। অন্যদিকে ঋণগ্রহীতাদের অনেকে ঋণের কিস্তি দিতে হিমশিম খাচ্ছে। এমতাবস্থায় তাদের ওপর কিস্তি শোধের বাড়তি চাপ-জীবনযুদ্ধ থেকে তাদের ছিটকে দিতে পারে। ভেঙে দিতে পারে মনোবল। তিনি গতকাল দুপুরে সংসদ ভবনের সরকারি বাসভবনে সমসাময়িক বিষয় নিয়ে আয়োজিত আনলাইন সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য দিচ্ছিলেন। ঈদের আগে শ্রমিকদের পর্যায়ক্রমে ছুটি দিতে বিজেএমইএ এবং বিকেএমইএর প্রতি আহ্বান জানিয়ে সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেন, সংক্রমণের বিস্তাররোধে তৈরি পোশাক শিল্পসহ অন্যান্য শ্রমঘন শিল্পসমূহ ঈদের আগে পর্যায়ক্রমে ছুটি প্রদানে বিজিএমই এবং বিকেএমই-এর দৃষ্টি আকর্ষণ করছি। তিনি আস্থা প্রকাশ করেন যে ঈদের আগেই শ্রমিকদের বেতন-ভাতা পরিশোধে মালিকরা বরাবরের মতো এবারও সহমর্মিতার নজির স্থাপন করবেন। ঈদুল আজহার তিন দিন আগে থেকে সড়ক মহাসড়কে পণ্যবাহী ট্রাক, কাভার্ড ভ্যান বন্ধ রাখতে সংশ্লিষ্টদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, কৃষি, শিল্প ও রপ্তানিমুখী পণ্য, চিকিৎসা সরঞ্জাম, ত্রাণ, জ্বালানি, ওষুধ, খাদ্যদ্রব্য, পচনশীল পণ্যসহ জরুরি সার্ভিস এর আওতামুক্ত থাকবে। ঈদের আগে পরে আট দিন সড়ক-মহাসড়ক সংলগ্ন সিএনজি স্টেশনগুলো ২৪ ঘণ্টা খোলা রাখতে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়কে অনুরোধ জানানো হয়েছে। ফিটনেসবিহীন যানবাহন চলাচলে বিরত থাকার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, কোরবানির পশুবাহী যানবাহন সাধারণত ধীরগতিতে চলে। এসব পরিবহন মহাসড়কে নষ্ট হয়ে পড়লে তৈরি হয় যানজট। তাই ফিটনেসবিহীন যানবাহনে কোরবানির পশু পরিবহন থেকে বিরত থাকুন। ইতিমধ্যে ফিটনেসবিহীন গাড়ির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে সংশ্লিদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে বলেও জানান সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী। তিনি আরও বলেন, সড়ক-মহাসড়কের ওপরে কিংবা আশপাশে পশুরহাট বসানো যাবে না।

প্রয়োজনে কমসংখ্যক হাট বসানোর বিষয়টি বিবেচনায় আনতে হবে। এক্ষেত্রে অনলাইনে পশু বেচা-কেনার বিষয়টিও বিকল্প হিসেবে বিবেচনা করা যেতে পারে। ওবায়দুল কাদের বলেন, ধর্মীয় অনুভূতির পাশাপাশি কোরবানি ঈদ কেন্দ্রিক অর্থনীতির সঙ্গে অনেক মানুষের জীবন ও জীবিকা সংযুক্ত। পশুপালন, অ্যানিমল ফার্মিং, পশুর চামড়া রপ্তানিসহ ঈদ-অর্থনীতি দেশের সার্বিক অর্থনৈতিক প্রবাহে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। জীবনের পাশাপাশি অর্থনীতির চাকা সচল রাখতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সরকারের যে অবস্থান তা এগিয়ে নিতে কঠোর স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে হবে। বাড়িওয়ালা কর্তৃক শিক্ষার্থীদের মালপত্র ফেলে দেওয়ার ঘটনা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, সংকটে অনেকের আয় কমেছে, হারিয়েছে চাকরি, আবার কেউ কেউ পরিবার নিয়ে কষ্টে জীবনযাপন করছেন, এমন পরিস্থিতিতে একে অপরের প্রতি সমব্যথী হতে হবে।