করোনাভাইরাসের কড়াল গ্রাসে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে করপোরেট বিশ্ব। এতদিনের সুপরিচিত ও বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে-ছিটিয়ে যাওয়া জায়ান্ট ব্র্যান্ডগুলো এখন ভিন্ন এক বাস্তবতার শিকার। ইতিমধ্যেই দেউলিয়াও হয়ে গেছে শত শত কোম্পানি। বন্ধ হয়ে গেছে হাজার হাজার স্টোর। প্রোডাকশন বন্ধ প্রায় প্রতিটিরই। মহামারীকে পাশ কাটিয়ে এখন টিকে থাকার চ্যালেঞ্জ নিয়ে লড়াইয়ে নেমেছে করপোরেট বিশ্ব।
জানা যায়, নারীদের পোশাক, ল্যানজারি ও সৌন্দর্যবর্ধনকারী পণ্য নির্মাতা, বিপণন ও বিক্রয় প্রতিষ্ঠান হিসেবে বিশ্বের সবচেয়ে প্রতিষ্ঠিত মার্কিন ব্র্যান্ড ভিক্টোরিয়াস সিক্রেট। খুচরা বিক্রি করে এমন লিমিটেড ব্র্যান্ডগুলোর মধ্যে ভিক্টোরিয়াস সিক্রেটই এতদিন ধরে সবচেয়ে বেশি রাজস্ব আহরণ করত। কিন্তু করোনার গ্রাসে ভিক্টোরিয়াস সিক্রেটকে দেউলিয়া ঘোষণা করেছে ব্যাংক। শুধু ভিক্টোরিয়াস সিক্রেট নয়, পোশাক ও শৌখিন পণ্য উৎপাদন ও বিপণনকারী করপোরেট ব্র্যান্ডগুলো বড় ধরনের দুর্দশায় পড়েছে। দেশে দেশে চোখ জুড়ানো ১২০০ স্টোর বন্ধ করে দিতে বাধ্য হয়েছে সুপ্রতিষ্ঠিত ব্র্যান্ড জারা। জনপ্রিয় ব্র্যান্ড ল ছপেল্লে তাদের ৪৩৯১টি স্টোর তুলে নিয়েছে। উৎপাদন বন্ধ হয়ে গেছে শ্যানেল, হারমেস ও প্যাটেক ফিলিপ্পির মতো নামিদামি প্রতিষ্ঠানগুলোর। নামি ব্র্যান্ড রোলেক্স বন্ধ করে দিয়েছে প্রোডাকশন। স্পোর্টস সামগ্রীর জনপ্রিয় ব্র্যান্ড নাইকি তাদের দ্বিতীয় ধাপের লে অফ শুরু করতে যাচ্ছে। এমনকি চেইন কফি শপ স্টারবাকস তাদের ৪০০ স্টোর চিরতরে বন্ধ করে দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে। এর সবই হয়েছে করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবে বিশ্বব্যাপী চলা লকডাউনের ক্ষতির কারণে। পর্যটন শিল্পের ক্ষতি হয়েছে অবর্ণনীয়। স্বল্প খরচে ও শেয়ার ট্রাভেলিংয়ের ক্ষেত্রে বিশ্বকে নতুন পথ দেখানো ইন্টারনেটভিত্তিক অ্যাপ এয়ারবিএনবির প্রতিষ্ঠাতা ব্রায়ান চেসকির ভাষায়, ১৩ বছরের চেষ্টা ও পরিশ্রম ধ্বংস হয়ে গেল মহামারীর ছয় সপ্তাহে। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, করোনাভাইরাসের মহামারীতে জায়ান্ট করপোরেট ব্র্যান্ডগুলো মহাসংকটে পড়েছে। প্রায় ১০ হাজার কোম্পানি দেউলিয়া হয়ে গেছে। এমন পরিস্থিতিতেও যদি কোনো কোম্পানি এখনো টিকে থাকে, যদি কোনো পে কাট বা লে অফ না হয়ে থাকে তাহলে সে কোম্পানিকে ভালো হিসেবেই ধরতে হবে। এখন চলতি বছরের বাকি সময়টা করপোরেট শক্তির জন্য চ্যালেঞ্জ হিসেবে থাকবে। কারণ করোনা মহামারী নিয়ন্ত্রণ হওয়ার নয়।