বুধবার, ৮ জুলাই, ২০২০ ০০:০০ টা

বাবা-ছেলেকে হত্যা করে ট্রলার ছিনতাই

ভাইকে চোর বলায় খুন

নিজস্ব প্রতিবেদক, বরিশাল ও ঢাকা

বরিশালের বাকেরগঞ্জ উপজেলায় বাবা ও ছেলে হত্যার তিন দিন পর ঢাকার কেরানীগঞ্জ এলাকা থেকে ডাকাত দলের তিন সদস্যকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। সেখান থেকে উদ্ধার করা হয় ডাকাতি করা ট্রলারসহ অন্যান্য মালামাল।

গতকাল দুপুর ১২টায় বরিশাল পুলিশ লাইনস ইন সার্ভিস ট্রেনিং সেন্টারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য নিশ্চিত করেন পুলিশ সুপার মো. সাইফুল ইসলাম। গ্রেফতারকৃতরা হলো- বাকেরগঞ্জের মো. বাদশা হাওলাদার, মো. শাহিন খান ও মো. ছানি হাওলাদার। এদের মধ্যে ছানির বয়স ১৭ বছর।

গ্রেফতারকৃতদের স্বীকারোক্তির বরাত দিয়ে পুলিশ সুপার জানায়, ট্রলার ডাকাতির উদ্দেশ্যে ঘটনার ৪-৫ দিন আগে থেকেই মাছ ধরার চাই (মাছ ধরার জন্য বাঁশের তৈরি এক  ধরনের ফাঁদ) ব্যবসায়ী মো. হেলাল উদ্দিন হাওলাদার ও তার ছেলে মো. ইয়াসিন হাওলাদারের ওপর নজর রাখছিল তারা। পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী, গত ৩ জুলাই চাই ক্রেতা সেজে তাদের ট্রলারে উঠে ডাকাত বাদশা, শাহিন ও ছানি। পরে তারা তাদের পা ব নদীর তীরে চরলক্ষ্মীপাশা নামক স্থানে নিয়ে প্রথমে ছেলে ইয়াসিনকে গলা কেটে এবং পরে বাবা হেলালকে পানিতে ডুবিয়ে পেট কেটে হত্যা করে এবং ট্রলার, মোবাইল ফোন, টাকা ও জামকাপড় নিয়ে পালিয়ে যায়। পুলিশ তথ্য প্রযুক্তির সহয়াতায় ঢাকার কেরানীগঞ্জ থেকে গত গতকাল তাদের গ্রেফতার করে। উল্লেখ্য, বাকেরগঞ্জের কবাই ইউনিয়নের চরলক্ষ্মীপাশা গ্রামে পা ব নদীর পাড় থেকে গত ৩ জুলাই মো. ইয়াসিনের গলাকাটা লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। পর দিন ৪ জুলাই একই এলাকা থেকে তার বাবা মো. হেলাল উদ্দিনের ক্ষতবিক্ষত লাশ উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনায় হেলাল উদ্দিনের স্ত্রী নাসিমা বেগম বাদী হয়ে বাকেরগঞ্জ থানায় একটি মামলা দায়ের করেন।

গ্রেফতারকৃতদের আদালতের মাধ্যমে কারাগারে সোপর্দ করাসহ আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার কথা জানিয়েছেন পুলিশ সুপার মো. সাইফুল ইসলাম।

রাজধানীর মিরপুরে রুবেল হোসেন (২২) নামে এক যুবককে ছুরিকাঘাতে খুন করা হয়েছে। তিনি অনলাইনভিত্তিক প্রতিষ্ঠান ‘দারাজ’ এর রাইডার হিসেবে চাকরি করতেন। গত সোমবার রাত সাড়ে ৯টার দিকে পশ্চিম শেওড়াপাড়ার শাপলা সরণির ৩৭৪/৩ নম্বর বাসায় এ ঘটনা ঘটে। নিহত রুবেলের পরিবার বলছে, রুবেলের ভাই আকবর পাশের বাসার মিজান নামে একজনকে চোর বলেছে বলে অপবাদ দেয়। এ নিয়ে মিজানের পরিবারের সঙ্গে আকবরের কয়েক দফা ঝগড়া হয়। পরে মিজানের ছোট ভাই নাজমুল হাসান নাজু রুবেলকে ছুরিকাঘাতে হত্যা করে। পুলিশ বলছে, আসামি গ্রেফতার হওয়ার পর হত্যার কারণ সম্পর্কে নিশ্চিত হওয়া যাবে। জানা গেছে, নিহত রুবেলের গ্রামের বাড়ি ভোলার বোরহান উদ্দিনে। চার ভাইয়ের মধ্যে তিনি ছোট। পরিবারের সঙ্গে তিনি শেওড়াপাড়ার ওই বাসাতেই থাকতেন। নিহত রুবেলের ভাই কামাল হোসেন জানান, গত শুক্রবার রাত ১টার দিকে বড় ভাই আকবর বাসার বাইরে বের হন। তিনি বাসার পাশের একটি নারিকেল গাছের আড়ালে একজনকে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখেন। পরে তিনি টর্চলাইট জ্বেলে দেখেন পাশের বাসার মিজান সেখানে দাঁড়িয়ে আছে। তাকে চিনতে পেরে আকবর কিছু না বলেই সেখান থেকে চলে যান। পরদিন সকালে মিজানের মা আকবরের সঙ্গে ঝগড়া করেন। বলেন, আকবর রাতে মিজানকে দেখতে পেয়ে তাকে চোর বলেছে। এ বিষয় নিয়েই গত ৩ দিন ধরে তাদের সঙ্গে ঝগড়া চলে। সর্বশেষ সোমবার রাত সাড়ে ৯টার দিকেও ঝগড়া করে মিজানের ৫ ভাইসহ তার পরিবার। এক পর্যায়ে মিজানের ছোট ভাই নাজমুল রুবেলকে এলোপাতারি ছুরিকাঘাত করে। এ সময় রুবেলের ভাই কামালের বুকেও ছুরিকাঘাত করা হয়। তাদের উদ্ধার করে শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক রুবেলকে মৃত ঘোষণা করেন। নিহত রুবেলের ভাই কামালের বুকে ৬টি সেলাই করা হয়। ডিএমপির মিরপুর জোনের এসি এম এম মঈনুল ইসলাম জানান, তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে এ হত্যাকান্ড। এ ঘটনায় ১০/১২ জনকে আসামি করে মিরপুর মডেল থানায় নিহত রুবেলের মা আছিয়া বেগম একটি হত্যা মামলা করেন। আসামিদের ধরতে অভিযান চলছে।

সর্বশেষ খবর