সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা ড. হোসেন জিল্লুর রহমান বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, এ মুহূর্তে সবচেয়ে বেশি সংকটে দরিদ্র জনগোষ্ঠী। যেহেতু কভিড-১৯ একটা বৈশ্বিক সমস্যা ফলে সারা বিশ্বই এখন দিশাহারা। আমাদের দেশে এর প্রভাবটা হবে চতুর্মুখী। একদিকে বিপুলসংখ্যক মানুষ কর্মহীন হয়ে পড়ছে। আর সবচেয়ে বড় সমস্যা হলো বিপুলসংখ্যক জনগোষ্ঠী শহর থেকে, আবাসস্থল থেকে, কর্মস্থল থেকে ড্রপ আউট হয়ে যাচ্ছে। তার বেশির ভাগই গ্রামে পাড়ি জমাচ্ছে। তাদের পুনর্বাসন করতে হবে। আরও ভালো হবে গ্রামেই তাদের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করতে পারলে। তাহলে শহরেও মানুষের চাপ কিছুটা হলেও কমবে। তবে মনে রাখতে হবে, গ্রামে মানুষের সুযোগ-সুবিধা বাড়াতে হবে। বসবাসের জন্য আদর্শ গ্রামব্যবস্থা, যোগাযোগব্যবস্থা, স্বাস্থ্য ও স্যানিটেশন ব্যবস্থার উন্নয়ন ঘটাতে হবে। না হলে কিন্তু করোনাকাল কেটে গেলে আবারও তারা শহরে ফিরে আসবে। কিন্তু হয়তো আগের মতো আর কাজের সুযোগ পাবে না। এজন্য গ্রামে মানুষের কাজের সুযোগ বাড়াতে হবে। এতে দেশের অর্থনীতির ভারসাম্য রক্ষা হবে। এ ছাড়া দেশের ৮৫ ভাগ মানুষ তো গ্রামেই বাস করে। অর্থনীতির বৃহদাংশও গ্রামীণ অর্থনৈতিক কর্মকান্ডের মাধ্যমেই পরিচালিত হয়। এজন্য গ্রামই হচ্ছে আমাদের অর্থনীতির মূল চালিকাশক্তি। বিশিষ্ট এই অর্থনীতিবিদ আরও বলেন, করোনাভাইরাস মহামারী নতুন করে কাজের সুযোগও কমিয়েছে। যারা বিদেশ থেকে ফিরে এসেছে তারাও তো বেশির ভাগই এখন গ্রামেই আছে। তারা আদৌ আগের কাজে ফিরতে পারবে কিনা, এ নিয়েও সংশয় রয়েছে। ফলে তাদের গ্রামেই কাজে লাগাতে পারলে ভালো হবে। ছোট ছোট উদ্যোক্তার সৃষ্টি হবে। কর্মমুখী প্রশিক্ষণ বাড়াতে হবে। তাহলে তারাই আবার আরেকজনকে কাজ দিতে পারবে। আর রপ্তানির বাজার তো বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। এখন ভরসা শুধু অভ্যন্তরীণ উৎপাদন। এটাকে চাঙ্গা রেখেই চাহিদা বাড়িয়ে সংকট কাটানোর পথ খুঁজতে হবে বলে তিনি মনে করেন।