পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউটের (পিআরআই) নির্বাহী পরিচালক ড. আহসান এইচ মনসুর বলেছেন, কৃষি খাতের অভ্যন্তরীণ উৎপাদন ও গ্রামীণ অর্থনীতি আমাদের খাদ্য চাহিদা মেটাবে কিন্তু সামগ্রিক অর্থনীতি রক্ষা করতে পারবে না। যেমন আমাদের মোট জিডিপির (অর্থনৈতিক উৎপাদনের) ১৪ শতাংশ হলো কৃষি। এর মধ্যে ৯ শতাংশ হচ্ছে ফসল। আর ৫ শতাংশ হলো মাছ, মাংস, দুধ, ডিম ইত্যাদি। তাহলে বাকি থাকে আরও ৮৬ শতাংশ। ফলে সেটা তো আর এই ১৪ শতাংশ দিয়ে পুরো মেকআপ করা সম্ভব নয়। তবে এটা অবশ্যই আমাদের জন্য একটা সাপোর্ট যে আমরা খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ। আমাদের আমিষের কোনো ঘাটতি নেই। এবারও বোরোর বাম্পার ফলন হয়েছে। কৃষক এবার দামও ভালো পাচ্ছেন। ফলে এটা তো অবশ্যই এ মহামারীতে বড় একটা ইতিবাচক ভূমিকা রাখছে। এজন্যই গ্রামের মানুষ বেশ ভালো আছে। তবে তাদের বেশির ভাগেরই এখন কাজ নেই। এখন কাজের মৌসুমও নয়। আবার বিপুলসংখ্যক মানুষ শহর ছেড়ে গ্রামে যাচ্ছে। অনেকেই বিদেশ থেকে চলে এসেছে। এখনো কেউ কেউ আসার প্রস্তুতি নিচ্ছে। তারা পরিজনদের বলে রেখেছে বিমান চলাচল স্বাভাবিক হলেই হয়তো তারাও ফিরে আসবে। ড. আহসান এইচ মনসুর আরও বলেন, যারা শহর থেকে গ্রামে ফিরে যাচ্ছে তাদের কাজ দিতে হবে গ্রামেই। এতে গ্রামের অর্থনীতি আরও উজ্জীবিত হবে। ২০০৯-১০ সালের যে বিশ্বমন্দা সেটা আর এবারের যে মহামারী দুটো কিন্তু ভিন্ন রূপের। ২০০৯-১০-এর মন্দার কারণে শুধু অর্থনীতিই ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে কিন্তু এবার তো মানুষের জীবন চলে যাচ্ছে। সারা বিশ্বের মানুষই এখন জীবন-জীবিকা নিয়ে অনিশ্চয়তার মধ্যে রয়েছে। ফলে শুধু গ্রামীণ অর্থনীতিই আমাদের রক্ষা করতে পারবে না। এই ধরুন যারা কাজ হারাচ্ছে, চাকরিচ্যুত হচ্ছে তাদের তো চাকরি দিতে হবে। আবার শিল্প উৎপাদন, রপ্তানি, রেমিট্যান্স এ সবই তো ঠিক থাকতে হবে। অন্যথায় অর্থনীতির ভারসাম্য রক্ষা করা যাবে না বলে তিনি মনে করেন।