রবিবার, ১২ জুলাই, ২০২০ ০০:০০ টা

সপ্তাহের সর্বনিম্ন পরীক্ষার দিনে শনাক্তের হার সর্বোচ্চ

পরীক্ষা ১১১৯৩ শনাক্ত ২৬৮৬ মৃত্যু ৩০

নিজস্ব প্রতিবেদক

সপ্তাহের সর্বনিম্ন পরীক্ষার দিনে শনাক্তের হার সর্বোচ্চ

এক সপ্তাহের মধ্যে সর্বনিম্ন নমুনা পরীক্ষার দিনে করোনা আক্রান্ত শনাক্ত হলো সর্বোচ্চ হারে। প্রতি ১০০ জনের নমুনা পরীক্ষায় আক্রান্ত পাওয়া গেছে ২৪ জন। এর আগের ছয় দিনে গড় আক্রান্তের হার ছিল ২১ দশমিক ৭৭। সর্বোচ্চ আক্রান্তের হার ছিল ৭ জুলাই ২২ দশমিক ৯৮ শতাংশ। শনিবার সকাল ৮টা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় নমুনা পরীক্ষা করা হয় ১১ হাজার ১৯৩ জনের। এর আগের ছয় দিনের মধ্যে কোনো দিনই নমুনা পরীক্ষা ১৩ হাজারের নিচে নামেনি।

করোনা নিয়ে স্বাস্থ্য অধিদফতরের দেওয়া সাত দিনের তথ্য বিশ্লেষণে এমন চিত্র উঠে এসেছে। গতকাল স্বাস্থ্য অধিদফতরের নিয়মিত বুলেটিনে যোগ দিয়ে কভিড-১৯ এর সর্বশেষ পরিস্থিতি তুলে ধরেন অধিদফতরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক অধ্যাপক নাসিমা সুলতানা। বুলেটিনে জানানো হয়, গত ২৪ ঘণ্টায় ৭৭টি ল্যাবে ১১ হাজার ১৯৩টি নমুনা পরীক্ষায় ২ হাজার ৬৮৬ জনের মধ্যে সংক্রমণ ধরা পড়েছে। নমুনা পরীক্ষা বিবেচনায় শনাক্তের হার ২৪ শতাংশ। এতে শনাক্ত রোগীর সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১ লাখ ৮১ হাজার ১২৯ জনে। এদিকে নমুনা পরীক্ষার এই সংখ্যা আগের ২৪ ঘণ্টার চেয়ে ২ হাজার ২৯৫টি কম এবং সাত দিনের মধ্যে সর্বনিম্ন। নমুনা পরীক্ষা কমে যাওয়ায় দেশে রোগী শনাক্ত কমে যাচ্ছে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। শনাক্তের হার বিবেচনায়  নিলে ২০ হাজার নমুনা পরীক্ষা করলে রোগী পাওয়ার কথা ৪ হাজার ৮০০ জন। অধ্যাপক নাসিমা সুলতানা জানান, ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে করোনাভাইরাসে দেশে ৩০ জনের মৃত্যু হয়েছে। এ নিয়ে মৃতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ২ হাজার ৩০৫ জনে। মৃতদের মধ্যে ১৩ জন ঢাকা বিভাগের, ১০ জন চট্টগ্রাম বিভাগের, ৩ জন রাজশাহী বিভাগের, ৩ জন খুলনা বিভাগের এবং ১ জন বরিশাল বিভাগের। তাদের মধ্যে ত্রিশোর্ধ্ব তিনজন, চল্লিশোর্ধ্ব তিনজন, পঞ্চাশোর্ধ্ব আটজন ও ষাটোর্ধ্ব ১৬ জন। তাদের মধ্যে ২৫ জন পুরুষ ও ৫ জন নারী। তাদের মধ্যে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ১৮ জন ও বাড়িতে থাকা অবস্থায় ১১ জন মারা গেছেন। মৃত অবস্থায় হাসপাতালে আনা হয় ১ জনকে। আইইডিসিআরের ‘অনুমিত’ হিসাবে বাসা ও হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আরও ১ হাজার ৬২৮ জন রোগী সুস্থ হয়ে উঠেছেন গত ২৪ ঘণ্টায়। তাতে সুস্থ রোগীর সংখ্যা দাঁড়াল মোট ৮৮ হাজার ৩৪। বাংলাদেশে করোনাভাইরাসের প্রথম সংক্রমণ ধরা পড়ে ৮ মার্চ, প্রথম মৃত্যুর খবর জানা যায় ১৮ মার্চ। এর মধ্যে ৩০ জুন এক দিনেই মৃত্যু হয় ৬৪ জনের।

আমাদের বিভিন্ন জেলার নিজস্ব প্রতিবেদক ও প্রতিনিধিরা জানিয়েছেন স্থানীয় পর্যায়ে করোনার সর্বশেষ পরিস্থিতি। নোয়াখালী : চব্বিশ ঘণ্টায় নতুন করে আরও ৪৭ জনের করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়েছে এ জেলায়। এ নিয়ে জেলায় মোট শনাক্তের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ২৪৮৭ জন। এ পর্যন্ত মৃত্যু হয়েছে ৫৩ জনের। বগুড়া : নতুন করে করোনা শনাক্ত হয়েছে ৪৮ জনের। এ নিয়ে জেলায় মোট করোনা শনাক্ত হলো ৩ হাজার ৬৫৬ জনের। করোনায় আক্রান্ত হয়ে পল্লী উন্নয়ন একাডেমি বগুড়ার মহাপরিচালক (অতিরিক্ত সচিব) আমিনুল ইসলাম (৫৭) গতকাল রাজশাহী মেডিকেল কলেজে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুবরণ করেন। এ নিয়ে জেলায় মোট মারা গেলেন ৬৭ জন। বাগেরহাট : জেলার ফকিরহাট উপজেলার শালবাড়িয়া গ্রামে করোনা আক্রান্ত হয়ে ইয়াদ আলী (৬০) নামে একজনের মৃত্যু হয়েছে। গতকাল সকালে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের করোনা ইউনিটে তিনি মারা যান। এ নিয়ে ফকিরহাট উপজেলায় দুজনসহ বাগেরহাট জেলায় করোনা আক্রান্ত হয়ে ৫ জন মারা গেলেন। এ ছাড়া বাগেরহাটে নতুন করে ৯ জনের শরীরে করোনা শনাক্ত হয়েছে। এ নিয়ে জেলায় আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়াল ২৮৩ জনে। শ্রীমঙ্গল : মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গলে নতুন করে আটজনের করোনা শনাক্ত হয়েছে। এ নিয়ে শনাক্তের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৭৫ জনে। এ পর্যন্ত মারা গেছেন ৩ জন। দিনাজপুর : ২৪ ঘণ্টায় চিকিৎসক, নার্সসহ ৩৪ জনের করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়েছে। এ নিয়ে জেলায় করোনা শনাক্ত হলো ৯১৪ জনের। এ পর্যন্ত জেলায় মৃত্যুবরণ করেছেন ১৬ জন। কুমিল্লা : করোনা পজিটিভ ও উপসর্গ নিয়ে ২৪ ঘণ্টায় কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ (কুমেক) হাসপাতালে আরও পাঁচজন মারা গেছেন। তাদের একজনের করোনা পজিটিভ ছিল। বর্তমানে করোনা পজিটিভ ও উপসর্গ নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি আছেন ১১৮ জন। এই হাসপাতালে করোনায় ৬৮ জন ও উপসর্গ নিয়ে ১২২ জনের মৃত্যু হয়েছে। ?কালিয়াকৈর : গাজীপুরের কালিয়াকৈরে করোনায় আক্রান্ত হয়ে গতকাল একজনের মৃত্যু হয়েছে। তিনি কালিয়াকৈর উপজেলার বিশাইর এলাকার  কিয়ামদ্দিনের ছেলে শামছুল উদ্দিন (৬০)। তিনি বাড়িতে থেকে চিকিৎসা নিচ্ছিলেন। এ নিয়ে কালিয়াকৈর উপজেলায় করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন ৯ জন। করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন ৪৬৩ জন।

সর্বশেষ খবর