রবিবার, ১২ জুলাই, ২০২০ ০০:০০ টা

করোনায় বন্ধ ৬০ ভাগ স্থানীয় সংবাদপত্র

নিজস্ব প্রতিবেদক

করোনার কারণে আর্থিক সংকটে পুরোপুরি বন্ধ হয়ে গেছে ৬০ দশমিক ৩১ ভাগ স্থানীয় সংবাদপত্র। এ ছাড়া ৩ দশমিক ৯৫ শতাংশ সংবাদপত্র বিজ্ঞাপন বা অর্থ জোগাড় করতে পারলে প্রকাশিত হচ্ছে। এতে স্থানীয় পর্যায়ের প্রাতিষ্ঠানিক, অপ্রাতিষ্ঠানিক, ব্যক্তি ও গোষ্ঠী পর্যায়ের দুর্নীতি, অনিয়ম ও ক্ষমতার অপব্যবহারের ঘটনাগুলো লোকচক্ষুর অন্তরালেই থেকে যাচ্ছে। স্থানীয় পর্যায়ের অপরাধপ্রবণতা বৃদ্ধি পাচ্ছে ও গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। বাংলাদেশ ইনডিপেনডেন্ট জার্নালিস্টস নেটওয়ার্কের (বিআইজেএন) এক জরিপে এ তথ্য উঠে এসেছে। গতকাল এক ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে জরিপের ফলাফল তুলে ধরেন বিআইজেএনের প্রধান সমন্বয়কারী আমীর খসরু। তিনি বলেন, জরিপে ২৩ জুন থেকে ২ জুলাই পর্যন্ত রংপুর, রাজশাহী, খুলনা, বরিশাল, সিলেট ও ঢাকা বিভাগের ৩৪ জেলার ৪৫৬টি স্থানীয় দৈনিক এবং সাপ্তাহিক পত্রিকার তথ্য সংগ্রহ করা হয়। এ ছাড়া কথা বলা হয় স্থানীয় পর্যায়ের গুরুত্বপূর্ণ ২৮৭ ব্যক্তির সঙ্গে। জরিপে দেখা গেছে, আর্থিক সংকটে ৪৫৬টি সংবাদপত্রের মধ্যে ২৭৫টি (৬০.৩১%) সম্পূর্ণভাবে বন্ধ হয়ে গেছে। বিজ্ঞাপন পেলে অথবা অর্থ জোগাড় করতে পারলে ১৮টি (৩.৯৫%) সংবাদপত্র প্রকাশ করা হয়। নিয়মিত প্রকাশের চেষ্টা করছে ১৬৩টি (৩৫.৭৫%) পত্রিকা। সংবাদপত্র বন্ধ হওয়ার প্রভাব সম্পর্কে জরিপে অংশগ্রহণকারী ৮৬ দশমিক ৪১ শতাংশ মানুষ জানিয়েছেন, স্থানীয় পর্যায়ের যেসব অনিয়ম, দুর্নীতি, ক্ষমতার অপব্যবহার, আইনভঙ্গ ও ভোগান্তির খবর জাতীয় পত্রিকায় জায়গা পেত না, সেগুলো কোনো না কোনো স্থানীয় পত্রিকায় ছাপা হতো। এটা অনিয়ম কমাতে ভূমিকা রাখত। স্থানীয়রা যে কোনো সমস্যা নিয়ে ওইসব পত্রিকা ও সাংবাদিকের কাছে যেতে পারতেন। স্থানীয় প্রশাসন, জনপ্রতিনিধি এবং তার ‘সাঙ্গোপাঙ্গরা’ স্থানীয় সংবাদমাধ্যমের কারণে কিছুটা হলেও চাপের মধ্যে থাকতেন। পত্রিকা বন্ধ হওয়ায় সে সুযোগ সংকুচিত হয়ে গেছে। ৮ দশমিক ৭২ শতাংশ জবাবদানকারী বলেছেন, পত্রিকাগুলোর মাধ্যমে নানা ধরনের সাংবাদিকতাবহির্ভূত অপকর্ম করা হতো এবং সাংবাদিক নাম ভাঙিয়ে তারা নানা ধরনের প্রাতিষ্ঠানিক ও অপ্রাতিষ্ঠানিক পক্ষের সঙ্গে অবৈধভাবে যুক্ত ছিল। বিআইজেএনের পর্যবেক্ষণ তুলে ধরে আমীর খসরু বলেন, স্থানীয় পর্যায়ে বিশালসংখ্যক সংবাদপত্র বন্ধ ও অনিয়মিত হওয়ায় স্থানীয় প্রশাসন ও নানা পর্যায়ের প্রতিনিধির দায়িত্ব পালনে জবাবদিহিতা, স্বচ্ছতা ও ভারসাম্য বজায় রাখার বিষয়টি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। এতে নানামাত্রিক কর্তৃত্বপরায়ণতা বেড়ে যাওয়ার শঙ্কা রয়েছে। তৃণমূলের সঙ্গে খবরপ্রাপ্তিতে এককেন্দ্রিকতার সৃষ্টি হতে পারে।

সর্বশেষ খবর