মঙ্গলবার, ১৪ জুলাই, ২০২০ ০০:০০ টা

টেস্ট কমলেও বেড়েছে আক্রান্তের হার

২৪ ঘণ্টায় শনাক্ত ৩০৯৯ জন

নিজস্ব প্রতিবেদক

টেস্ট কমলেও বেড়েছে আক্রান্তের হার

দেশে করোনাভাইরাস আক্রান্ত শনাক্তে টেস্টের সংখ্যা কমলেও বেড়েছে আক্রান্তের হার। করোনা শনাক্তে ল্যাব সংখ্যা বাড়লেও বাড়েনি নমুনা টেস্টের সংখ্যা। সক্ষমতা অনুযায়ী টেস্ট হচ্ছে না ল্যাবগুলোতে। স্বাস্থ্য অধিদফতর সূত্রে জানা যায়, গত ২৪ ঘণ্টায় নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে ১২ হাজার ৪২৩টি। এর মধ্যে করোনা শনাক্ত হয়েছে ৩ হাজার ৯৯ জনের। শনাক্তের হার ২৪ দশমিক ৯৫ শতাংশ। ৭৭টি ল্যাবে এই নমুনা পরীক্ষা করা হয়। অথচ গত ৩০ জুন ৬৮টি ল্যাবে ১৮ হাজার ৪২৬টি নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে। এর মধ্যে করোনা শনাক্ত হয়েছে ৩ হাজার ৬৮৪ জনের। শনাক্তের হার ১৯ দশমিক ৯৮ শতাংশ। দেশে এক দিনে সর্বোচ্চ ৪ হাজার ১৯ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছিল ২ জুলাই। ওই দিন শনাক্তের হার ছিল প্রায় ২২ শতাংশ। এরপর থেকে শনাক্ত কমলেও শনাক্তের হার বাড়ছে। দেশে সর্বোচ্চ নমুনা পরীক্ষা হয় ২৬ জুন, ১৮ হাজার ৪৯৮টি। এরপর থেকে দিন দিন কমেছে নমুনা পরীক্ষার সংখ্যা। দেশে ৮ মার্চ প্রথম করোনা শনাক্ত হয়। ওই দিন করোনা শনাক্তের হার ছিল ৪৩ শতাংশ। ৭ জনের পরীক্ষা করে ৩ জন শনাক্ত করা হয়। এরপর ধীরে ধীরে নমুনা পরীক্ষা বাড়তে থাকে। এরপর ২০ মে পর্যন্ত করোনা শনাক্তের হার ১৫ শতাংশের মধ্যেই ছিল। আর এখন এটি ২৫ শতাংশ। প্রথম দিনের পর এটি দেশে সর্বোচ্চ। স্বাস্থ্য অধিদফতরের তথ্য বলছে, দেশে করোনা সংক্রমণ বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে পরীক্ষা বাড়াতে পরীক্ষাগার বাড়ানো হচ্ছে। পরীক্ষাগার বাড়লেও পরীক্ষার সংখ্যা কমছে। দেশে এখন ৭৭টি পরীক্ষাগারে নমুনা পরীক্ষা করা হয়। এর মধ্যে প্রতিদিনই কিছু না কিছু বন্ধ থাকে। গত শুক্রবার ৯টি ও শনিবার ৫টিতে কোনো পরীক্ষা হয়নি। দেশে সর্বোচ্চ নমুনা পরীক্ষার সময় পরীক্ষাগার ছিল ৬৬টি। ওই দিন ৬১টি পরীক্ষাগারে নমুনা পরীক্ষা করা হয়। গতকাল অনলাইন ব্রিফিংয়ে স্বাস্থ্য অধিদফতরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (প্রশাসন) অধ্যাপক নাসিমা সুলতানা বলেন, নমুনা ও পরীক্ষার সংখ্যা আগের চেয়ে কমেছে। দ্বিতীয়বার পরীক্ষা না করা, ২০০ টাকা ফি নির্ধারণ করায় কিছুটা কমতে পারে। তবে মানুষের আগ্রহও কমে গেছে। দুপুর একটার পর কোনো বুথে লাইন থাকছে না। উপসর্গ থাকলে সবাইকে পরীক্ষা করাতে আসার অনুরোধ করেন তিনি। দেশে প্রথম করোনা শনাক্ত হয় ৮ মার্চ। এরপর প্রথম শতক পূর্ণ করতেই লেগে যায় ৩০ দিন। তারপর গতি কিছুটা বাড়তে থাকে। ৩৮ দিনে ১ হাজার এবং দেশে ৫৮ দিনে ১০ হাজার পার হয়। ৯ জুন থেকে প্রতিদিন তিন হাজারের বেশি শনাক্ত হতে থাকে। ১৭ জুন প্রথম এটি চার হাজার ছাড়ায়। এরপর নমুনা পরীক্ষা কমার সঙ্গে সঙ্গে শনাক্তের সংখ্যাও কমতে থাকে। বর্তমানে লকডাউন চলা ঢাকার ঝুঁকিপূর্ণ এলাকা ওয়ারীতে প্রথম এক সপ্তাহে নমুনা পরীক্ষা করে প্রায় ৫০ শতাংশের করোনা শনাক্ত হয়েছে। এ ব্যাপারে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক ডা. নজরুল ইসলাম বলেন, করোনা টেস্ট না বাড়লে ল্যাব বাড়িয়ে লাভ নেই। একটি আরটিপিসিআর মেশিনে তিন শিফটে দিনে প্রায় ২৭০টি নমুনা পরীক্ষা করা সম্ভব। নমুনা পরীক্ষা কমার কারণে শনাক্তের সংখ্যা কমেছে কিন্তু শনাক্তের হার বাড়ছে। তাই দ্রুত নমুনা পরীক্ষা বাড়িয়ে সংক্রমিত রোগীদের আলাদা করতে হবে।

 

সর্বশেষ খবর