বুধবার, ১৫ জুলাই, ২০২০ ০০:০০ টা

করোনা সংকটে ২৬ পণ্যে নগদ সহায়তার সুপারিশ

রুকনুজ্জামান অঞ্জন

করোনা সংকটে দেশের রপ্তানি খাতকে সহায়তার জন্য নতুন ২০টিসহ মোট ২৬ ধরনের পণ্য রপ্তানির বিপরীতে ৫ থেকে থেকে ২০ শতাংশ হারে নগদ সহায়তা দেওয়ার সুপারিশ চূড়ান্ত করে নোটশিট জারি করেছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। এ ছাড়া করোনা সংকটের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় দেশীয় খাতকে উৎসাহ দিতে কাগজ ও কাগজ জাতীয় পণ্যসহ গত অর্থবছরে সহায়তা পেয়েছে এমন ৬টি খাতকে চলতি অর্থবছরের রপ্তানির বিপরীতে প্রণোদনা বাড়ানোর সুপারিশ করা হয়েছে। সূত্র জানায়, ট্যারিফ কমিশনের কাছ থেকে নগদ সহায়তার জন্য পণ্যের তালিকা পাওয়ার পর সেটি যাচাই-বাছাই শেষে  গতকাল এই ২৬টি পণ্যকে নগদ সহায়তার জন্য চূড়ান্ত করে তৈরিকৃত নোটশিটে অনুমোদন দেন বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি। এখন এই নোটশিট চূড়ান্ত অনুমোদনের জন্য অর্থ মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হবে। বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সচিব. ড. মো. জাফর উদ্দিন বলেন, করোনা সংকটে বৈশ্বিক পরিস্থিতির দিকে লক্ষ্য রেখে দেশের রপ্তানি খাতের সম্প্রসারণে যে পণ্যগুলো ভূমিকা রাখবে মূলত সে ধরনের পণ্যগুলোকেই নগদ সহায়তার জন্য সুপারিশ করা হয়েছে।  সচিব বলেন, কভিড-১৯ প্রাদুর্ভাবের কারণে দেশের কিছু খাত যেমন ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, তেমনি কিছু খাতের জন্য সুযোগ তৈরি হয়েছে। আমরা যাচাই-বাছাই করে উভয় ধরনের খাতের পণ্যগুলোকে নগদ সহায়তার জন্য সুপারিশ করেছি। এর মধ্যে অপ্রচলিত খাত, লাইট ইঞ্জিনিয়ারিং এবং করোনা প্রতিরোধে ব্যবহৃত মেডিকেল ইকুইপমেন্ট রপ্তানির বিষয়গুলো গুরুত্ব পেয়েছে বলে জানান সচিব। যেসব খাত সুপারিশ পেল : করোনা সংকটকে মাথায় রেখে বিশ্বব্যাপী ব্যাপক চাহিদার বিষয়টি বিবেচনা করে কভিড-১৯ প্রতিরোধে ব্যবহৃত পিপিই, মাস্ক, স্যানিটাইজার, ভেন্টিলেটর, হ্যান্ড স্যানিটাইজার, গ্লাভস ইত্যাদি রপ্তানিতে সর্বোচ্চ ২০ শতাংশ হারে নগদ সহায়তার সুপারিশ করা হয়েছে। এ ছাড়া লাইট ইঞ্জিনিয়ারিং খাতে মোটরসাইকেল, বাইসাইকেল, প্লাস্টিকের খেলনা রপ্তানিতে ওই একই হারে নগদ প্রণোদনার সুপারিশ করা হয়েছে। করোনা সংকটে ক্ষতিগ্রস্ত খাতের মধ্যে এবার লাইভ ফিশ (কাঁকড়া ও কুঁচে) রপ্তানির বিপরীতেও সর্বোচ্চ ২০ শতাংশ হারে নগদ সহায়তার সুপারিশ করা হয়।

অন্যান্য পণ্যের মধ্যে স্টেইনলেস স্টিলের তৈরি বিভিন্ন উপকরণ রপ্তানিতে ১৫ শতাংশ, আইসিটি খাতের সফটওয়্যার এবং হার্ডওয়্যার রপ্তানিতে ১০ শতাংশ, সয়া অ্যাসিড অয়েল ১০ শতাংশ, মাছের আঁশ রপ্তানিতে ১৫ শতাংশ, প্রাকৃতিক রাবার এবং লেটেক্স রপ্তানিতে ১৫ শতাংশ, গার্মেন্ট ঝুট থেকে উৎপাদিত তুলা উৎপাদনে ২০ শতাংশ, টেরিটাওয়েল রপ্তানিতে ৫ শতাংশ নগদ সহায়তার সুপারিশ করেছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। এ ছাড়া করোনা সংকটে চ্যালেঞ্জের মুখে পড়ায় বেশ কয়েকটি পণ্যে প্রণোদনা বাড়ানোর সুপারিশ করা হয়েছে। এর মধ্যে দেশে উৎপাদিত কাগজ ও কাগজজাতীয় পণ্যে নগদ সহায়তা বর্তমানের ১০ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ১৫ শতাংশ, ইলেকট্রিক্যাল পণ্য যেমন রেফ্রিজারেটর, এসি রপ্তানিতে ১০ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ২০ শতাংশ এবং নবায়নযোগ্য শক্তিকে উৎসাহ দিতে সোলার মডিউল রপ্তানিতে ১০ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ১৫ শতাংশ প্রণোদনার সুপারিশ করা হয়েছে। এ ছাড়া  ইপিজেডের বাইরে কারখানায় উৎপাদিত ব্যাটারিতে ১৫ শতাংশ প্রণোদনা কার্যকর রয়েছে। এবার ইপিজেডের ভিতরে অবস্থিত কারখানায় উৎপাদিত ব্যাটারি রপ্তানির বিপরীতে ১০ শতাংশ হারে নগদ প্রণোদনার সুপারিশ করেছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।

সর্বশেষ খবর