শুক্রবার, ১৭ জুলাই, ২০২০ ০০:০০ টা
করোনা আজীবন থাকবে না, আমরা ঘুরে দাঁড়াব

গাছ মন ভালো রাখবে, সচ্ছলও করবে : প্রধানমন্ত্রী

নিজস্ব প্রতিবেদক

গাছ মন ভালো রাখবে, সচ্ছলও করবে : প্রধানমন্ত্রী

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গতকাল গণভবনে চারা রোপণ করে জাতীয় বৃক্ষরোপণ অভিযানের উদ্বোধন করেন -বাংলাদেশ প্রতিদিন

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সবাইকে গাছ লাগানোর আহ্বান জানিয়ে বলেন, গাছ লাগালে মনও ভালো রাখবে, অর্থনৈতিক সচ্ছলতাও আনবে। নিজের গাছের একটি ফল বা কাঁচা মরিচ খেলেও ভালো লাগে।

গতকাল সকালে গণভবন চত্বরে ‘জাতীয় বৃক্ষরোপণ কর্মসূচি-২০২০’ এর উদ্বোধন করে তিনি এসব কথা বলেন। তিনি সেখানে তেঁতুল, ছাতিয়ান এবং চালতা-এই তিনটি গাছের চারা রোপণ করেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, যদিও করোনাভাইরাস আমাদের সব অগ্রযাত্রা সাময়িকভাবে থামিয়ে দিয়েছে। তবে আমি আশা করি, জনগণ এর থেকে মুক্তি পাবে। বর্তমান সরকারের নেতৃত্বে দেশ আবারও সমৃদ্ধির পথে এগিয়ে যাবে।

মানুষের সমর্থন ছিল বলেই মুক্তি পেয়েছিলাম : অনুষ্ঠানে আওয়ামী লীগ সভানেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, আজকের দিনটা (১৬ জুলাই) একটা বিশেষ দিন। কারণ ২০০৭ সালের এই দিনে তদানীন্তন তত্ত্বাবধায়ক সরকার আমাকে গ্রেফতার করেছিল। আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দিয়েছিল। আমি বলেছি, তদন্ত করে দেখতে হবে যে আমি কোনো দুর্নীতি করেছি কিনা। ঠিক সেটাই করা হয়েছে। কাজেই আল্লাহর রহমতে সবকিছু থেকেই আমি খালাস পেয়েছি এবং জনগণের প্রতি আমার কৃতজ্ঞতা যে, তাদের অকুণ্ঠ সমর্থনে আমি মুক্তি পেয়েছিলাম ২০০৮ সালে। তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময় ২০০৭ সালের ১৬ জুলাই গ্রেফতার করা হয় শেখ হাসিনাকে। প্রায় ১১ মাস পর তিনি মুক্তি পান। দলীয় সভানেত্রীকে গ্রেফতারের সেই দিনটিকে আওয়ামী লীগ ‘কারাবন্দী দিবস’ হিসেবে পালন করে থাকে। শেখ হাসিনা বলেন, আমি কৃতজ্ঞতা জানাই, আমাদের দেশের জনগণের প্রতি, প্রবাসীদের প্রতি এবং বিশ্বনেতাদের প্রতি। সেই সঙ্গে আমি ধন্যবাদ জানাই আমাদের সংগঠন, বিশেষ করে ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগসহ আমাদের সব সংগঠন, সহযোগী সংগঠনের প্রতি। তারা প্রতিবাদ করেছিলেন। সে সময় ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগ ২৫ লাখ মানুষের স্বাক্ষর সংগ্রহ করে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধান উপদেষ্টার অফিসে দিয়েছিলেন উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, তাদের এই সমর্থন আমি পেয়েছিলাম বলেই এবং জাতীয়, আন্তর্জাতিক চাপে আমাকে মুক্তি দিতে বাধ্য হয়। তিনি বলেন, আমার বাবা জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের কাছ থেকে শিখেছি দেশের জন্য, জাতির জন্য কাজ করা এবং যে কোনো অবস্থা মোকাবিলা করা, প্রতিকূল অবস্থা মোকাবিলা করে চলা আর সৎপথে থেকে দেশ ও জাতির কল্যাণ করা। জাতির পিতা বাংলাদেশের স্বাধীনতা এনে দিয়েছেন উল্লেখ করে তিনি বলেন, তাঁর আদর্শে বাংলাদেশকে গড়তে চাই, ক্ষুধামুক্ত-দারিদ্র্যমুক্ত বাংলাদেশ হিসেবে।

আমাদের লক্ষ্য ২৫ ভাগ বনভূমির : প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, প্রথমবার ১৯৯৬ সালে যখন ক্ষমতায় আসি তখন দেশে বনভূমির পরিমাণ ছিল মাত্র সাত শতাংশ, যা আজকে আমরা ১৭ শতাংশে উন্নীত করতে সমর্থ হয়েছি। আমাদের লক্ষ্য সারা দেশে ২৫ শতাংশ বনায়ন করব, সে লক্ষ্য নিয়েই আমরা কাজ করে যাচ্ছি। তিনি বলেন, আমাদের দেশের প্রাকৃতিক পরিবেশ যেমন রক্ষা করা দরকার তেমনি জনগণের খাদ্য ও পুষ্টির দরকার। সে কারণেই আমাদের এই বৃক্ষরোপণ করাটা অত্যন্ত দরকার। আমি শুরু থেকেই সিদ্ধান্ত দিয়েছি প্রত্যেককে একটি ফলদ, একটি বনজ এবং একটি ভেষজ-এই তিনটি করে গাছ লাগাতে হবে। কাজেই আজকে আমি লাগিয়েছি একটি তেঁতুল গাছ, একটি চালতা গাছ এবং একটি ছাতিয়ান গাছ। শেখ হাসিনা তাঁর লাগানো গাছগুলোর উপযোগিতা তুলে ধরে বলেন, ছাতিয়ান গাছ খুব বড় এবং কা- মোটা হয়, যেটি কাঠ হিসেবে খুব ভালো। আর তেঁতুলের কথা শুনলেই জিবে যেমন পানি আসে তেমনি ছোটবেলার কথাও মনে পড়ে যায়। এটা শরীরের জন্যও খুব উপকারী। কারও উচ্চরক্তচাপ রোগ থাকলে তার জন্য, তাছাড়া শরীরকে ঠান্ডা রাখার জন্য তেঁতুল খুবই উপকারী। আর চালতা গাছের পাতা ও ফুল যেমন সুন্দর দেখতে তেমনি চালতা গাছেরও অনেক গুণ রয়েছে। প্রধানমন্ত্রী বলেন, স্বাধীনতার পর জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান নিজে বৃক্ষ রোপণ করে এই কর্মসূচির উদ্বোধন করেন। তাঁরই স্মরণে আমরা এই কর্মসূচি পালন করছি এবং প্রতিবছরই এই কর্মসূচি আমরা পালন করে থাকি। আওয়ামী লীগ সভানেত্রী বলেন, ১৯৮৪ সাল থেকে প্রতিবছর পয়লা আষাঢ় সারা দেশে আওয়ামী লীগের সহযোগী সংগঠন কৃষক লীগ বৃক্ষ রোপণ কর্মসূচি পালন করে। এতে মূল সংগঠনসহ সব সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মীরা অংশগ্রহণ করে থাকেন।

সর্বশেষ খবর