বুধবার, ২২ জুলাই, ২০২০ ০০:০০ টা

ভুয়া টেস্টের কারণে বাংলাদেশি পাসপোর্টের গ্রেড নিচে নেমেছে

মাহমুদ আজহার

ভুয়া টেস্টের কারণে বাংলাদেশি পাসপোর্টের গ্রেড নিচে নেমেছে

মির্জা আব্বাস

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস বলেছেন, ‘সরকার রিজেন্ট-জেকেজির মতো প্রতিষ্ঠানকে করোনা পরীক্ষার অনুমতি দিয়ে সারা বিশ্বে আমাদের ভাবমূর্তি ক্ষুণœ করছে। এখন আমাদের পাসপোর্টের মান দুই গ্রেড নিচে নেমে গেছে। বিশ্বের বিভিন্ন দেশ আমাদের প্রবেশাধিকার বন্ধ করে দিয়েছে। এখন অনেক দেশে ইচ্ছা করলেও যাওয়া যাচ্ছে না। তারা জেনে গেছে, বাংলাদেশে করোনার ভুয়া টেস্ট হচ্ছে। বাংলাদেশে এটাকে লাভজনক ব্যবসা হিসেবে নেওয়া হয়েছে। এখন সরকার যতই গ্রেফতার করুক বা লাইসেন্স বাতিল করুক, বহির্বিশ্বে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি ফেরা কঠিন হয়ে যাবে।’ গতকাল রাতে বাংলাদেশ প্রতিদিনের সঙ্গে ফোনালাপে এসব কথা বলেন সাবেক এই মন্ত্রী। মির্জা আব্বাস বলেন, ‘বাংলাদেশে যথেষ্ট করোনা বিশেষজ্ঞ রয়েছেন। বিরোধী রাজনৈতিক দল আছে। প্রাণঘাতী করোনাকালে সরকার সংশ্লিষ্ট সবার সাহায্য-সহযোগিতা নিলে আজ পরিস্থিতি এমন হতো না। যৌথ টাস্কফোর্স গঠনে আমরা বারবার সহযোগিতার হাত বাড়িয়েছি। কিন্তু সরকার বলছে, সম্মিলিত টাস্কফোর্স পৃথিবীর কোথাও নেই। অথচ প্রতিবেশী ভারতসহ বিভিন্ন দেশে টাস্কফোর্স গঠনে বিরোধী দলসহ সংশ্লিষ্ট সবাইকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। বিএনপির ভালো মতামতও সরকার নিচ্ছে না। আল্লাহর অশেষ রহমত হলে এদেশের একটি অংশ করোনা থেকে বেঁচে যাবে। বৃহৎ একটি অংশ করোনা বা করোনা-পরবর্তী পরিস্থিতিতে মারা যাবে। বিশেষজ্ঞদের মতে, এখনো পরিমাণ মতো টেস্ট হচ্ছে না। আমি মনে করি, এটা সরকারই করছে না। টেস্টের পরিমাণ বাড়ানো হলে এবং সরকার সঠিক পরিসংখ্যান দিলে করোনার আসল চিত্র পাওয়া যেত।’ অবিভক্ত ঢাকা সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র মির্জা আব্বাস বলেন, করোনা পরিস্থিতি যতদিন থেকে শুরু হয়েছে, সরকার যথাযথ ব্যবস্থা নিলে এখন শেষের দিকে চলে আসার কথা। সরকার যদি প্রথম দিন থেকেই সারা দেশ লকডাউন করে দিত, তাহলে আজকের পরিস্থিতি ভিন্নরকম থাকত। ভিয়েতনামসহ অনেক দরিদ্র রাষ্ট্র এমন ব্যবস্থা নিয়ে করোনা নিয়ন্ত্রণ করতে সক্ষম হয়েছে। কিন্তু আমরা পারিনি। সরকার যদি সবার খাদ্য নিরাপত্তা দিয়ে লকডাউনে যেত, জনগণও মেনে নিত। ওই সময় যদি সরকার রাষ্ট্রীয় কোষাগার থেকে ৪ হাজার কোটি টাকা দিয়ে জনগণকে বলত, দুই মাস কেউ ঘর থেকে বেরুবেন না। আপনাদের খাদ্য নিরাপত্তা দেওয়া হবে। তাহলে আজকের পরিস্থিতি হতো না। এখন এত টাকা অপচয় হতো না। নিজের বর্তমান অবস্থার উদাহরণ টেনে মির্জা আব্বাস বলেন, অন্য চিকিৎসার জন্য এখন আমি ডাক্তারের কাছে যেতে চাইলে তিনি নিজেও আইসোলেশনে আছেন বলে জানান। টেলিমেডিসিনে কথা বলেন। চিকিৎসকও আসতে ভয় পান, আমিও ভয় পাই। এ কারণে আমি যেতে পারছি না। কিন্তু আমার যে সমস্যা, তাতে সেখানে শারীরিকভাবে উপস্থিত থাকা জরুরি ছিল। এখন আমি রক্ত পরীক্ষা করাতে পারছি না। অথচ প্রতি এক-দেড় মাস পর পর পরীক্ষা করাতাম। বাসায় কাউকে আনতেও ভয় পাচ্ছি। এমন অবস্থা শুধু আমার একারই নয়, অনেকেরই। করোনায় রাজনীতির জট খুলবে কবে জানতে চাইলে তিনি বলেন, করোনাকালে চিকিৎসক আর রোগীর মতোই রাজনীতির অবস্থা। করোনার ভয়ে আপাতত রাজনৈতিক জট খুলছে না। স্বাভাবিকভাবে আমিও যেতে চাইব না। যাদের আসতে বলব, তারাও আসবে না। তবে একটা সময় আসবে, যখন আমাদের কথা কেউ শুনবে না। তখন চিকিৎসকেরও প্রয়োজন হবে না।

সর্বশেষ খবর