রবিবার, ২৬ জুলাই, ২০২০ ০০:০০ টা

সাহেদকে জিজ্ঞাসাবাদ চলছে, ১০ দিনের রিমান্ডে রিজেন্টের এমডি

মেট্রোরেলের ৭৬ শ্রমিকের ভুয়া করোনা রিপোর্ট

নিজস্ব প্রতিবেদক

সাহেদকে জিজ্ঞাসাবাদ চলছে, ১০ দিনের রিমান্ডে রিজেন্টের এমডি

রাজধানীর মেট্রোরেল প্রকল্পের ৭৬ শ্রমিককে করোনার ভুয়া রিপোর্ট দেওয়ার মামলায় রিজেন্ট হাসপাতালের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) মিজানুর রহমানকে ১০ দিন রিমান্ডে নেওয়ার অনুমতি দিয়েছে আদালত। মামলার তদন্ত কর্মকর্তা উত্তরা পশ্চিম থানার এসআই ইয়াদুর রহমানের ১০ দিনের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ঢাকা মহানগর হাকিম মো. মইনুল ইসলাম এ আদেশ দেন। এর আগে শুক্রবার দিবাগত রাতে গোপালগঞ্জের একটি বাসা থেকে তাকে গ্রেফতার করে পুলিশ। অন্যদিকে আজ প্রতারণার জাদুকর রিজেন্ট হাসপাতালের চেয়ারম্যান সাহেদকে ১০ দিনের রিমান্ড শেষে আদালতে হাজির করবে র‌্যাব। মামলাসূত্রে জানা গেছে, ২০ জুলাই রাজধানীর উত্তরা পশ্চিম থানায় মেট্রোরেল প্রকল্পের একটি সাব-কন্ট্রাক্টর প্রতিষ্ঠান একসিডের পক্ষে রেজাউল করিম বাদী হয়ে এ মামলা করেন। মামলায় সাহেদ, মিজানুরসহ অজ্ঞাতনামাদের আসামি করা হয়। মামলার অভিযোগে বলা হয়, মেট্রোরেলে কর্মরত ৭৬ জন কর্মীর করোনাভাইরাস পরীক্ষার জন্য নমুনা সংগ্রহ করে রিজেন্ট হাসপাতাল। এজন্য মাথাপিছু সাড়ে ৩ হাজার টাকা নেওয়া হয়। কিন্তু পরীক্ষা না করেই করোনাভাইরাসের ভুয়া প্রতিবেদন দেওয়া হয়। এ কারণে মেট্রোরেল প্রকল্পের কর্মীদের মধ্যে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ বেড়ে যায়। উত্তরা পশ্চিম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) তপন চন্দ্র সাহা বলেন, মেট্রোরেল প্রকল্প শ্রমিকপ্রতি সাড়ে ৩ হাজার টাকা জমা দিয়ে ৭৬ জনের করোনা পরীক্ষা করায় রিজেন্ট হাসপাতালে। তিনজনের ফল পজিটিভ ও ৭৩ জনের নেগেটিভ আসে। পরে তারা জানতে পারেন সব প্রতিবেদনই ভুয়া ছিল। এর পরিপ্রেক্ষিতে প্রতিষ্ঠানটি ২০ জুলাই মামলা করে উত্তরা পশ্চিম থানায়। তদন্তসংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, গ্রেফতারের পর সাতক্ষীরায় দায়ের করা অস্ত্র মামলায় সাহেদের বিরুদ্ধে ১০ দিনের রিমান্ডের আবেদন করবেন র‌্যাব-৬-এর তদন্ত কর্মকর্তা। এ ব্যাপারে র‌্যাবের অতিরিক্ত মহাপরিচালক কর্নেল তোফায়েল মোস্তাফা সারোয়ার জানান, সাহেদের দেওয়া অনেক তথ্য যাচাই-বাছাই করা হচ্ছে। তবে রিমান্ড শেষ হওয়ায় আজ সাহেদকে ভার্চুয়াল আদালতে তোলা হবে। পরে অস্ত্র মামলায় তার রিমান্ড চাইবেন র‌্যাব-৬-এর তদন্ত কর্মকর্তা। প্রতারণাসহ বিভিন্ন অনিয়ম, সরকারের সঙ্গে চুক্তিভঙ্গ, করোনাভাইরাস পরীক্ষার ভুয়া প্রতিবেদন দেওয়া ও রোগীদের কাছ থেকে টাকা নেওয়ার অভিযোগে রিজেন্ট গ্রুপের দুটি হাসপাতালে অভিযান চালায় র‌্যাব। ৬ জুলাই র‌্যাবের ভ্রাম্যমাণ আদালতের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সারোয়ার আলমের নেতৃত্বে রিজেন্ট হাসপাতালের উত্তরা ও মিরপুর কার্যালয়ে অভিযান চালানো হয়। এ সময় পরীক্ষা ছাড়াই করোনার সনদ দিয়ে সাধারণ মানুষের সঙ্গে প্রতারণা ও অর্থ হাতিয়ে নেওয়ার প্রমাণ পাওয়া যায়। এরপর ৭ জুলাই স্বাস্থ্য অধিদফতরের নির্দেশে র‌্যাব রিজেন্ট হাসপাতাল ও তার মূল কার্যালয় সিলগালা করে দেয়। একই দিন উত্তরা পশ্চিম থানায় রিজেন্ট গ্রুপের চেয়ারম্যান সাহেদসহ ১৭ জনের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়। এর পর থেকে সাহেদ পলাতক ছিলেন। ১৫ জুলাই ভোরে সাতক্ষীরা থেকে তাকে গ্রেফতার করে র‌্যাব। সাহেদ বর্তমানে র‌্যাবের রিমান্ডে রয়েছেন। পরে তার সহযোগী রিজেন্ট গ্রুপের এমডি মাসুদ পারভেজকেও গ্রেফতার করা হয়। সর্বশেষ প্রতারণা মামলায় গ্রেফতার করা হলো হাসপাতালের এমডি মিজানুর রহমানকে।

সর্বশেষ খবর