রবিবার, ২৬ জুলাই, ২০২০ ০০:০০ টা

এ সংকটে অর্থমন্ত্রীর দেশে ফেরা জরুরি

নিজস্ব প্রতিবেদক

এ সংকটে অর্থমন্ত্রীর দেশে ফেরা জরুরি

ড. সালেহ উদ্দিন আহমেদ

বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর ড. সালেহ উদ্দিন আহমেদ বলেছেন, করোনাভাইসারের এই সংকটে অর্থছাড়, অর্থনীতির পুনরুদ্ধারে সিদ্ধান্ত গ্রহণ, কেনকাটার পর্যবেক্ষণসহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ কাজে অর্থমন্ত্রী ও সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়গুলোর অনেক দায়িত্ব রয়েছে। সেখানে অর্থমন্ত্রীর মতো একজন গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রী টানা এক মাস দেশের বাইরে রয়েছেন। এতে নিশ্চয়ই কাজের সমস্যা হওয়ার কথা। যদিও যে কোনো মন্ত্রী দেশে না থাকলে দৈনন্দিন কাজকর্ম সম্পাদনের জন্য অন্য কোনো মন্ত্রীকে দায়িত্ব দেওয়া হয়। এক্ষেত্রেও হয়তো সেটা করা হয়েছে। কিন্তু সেটা তো আর সংকট মোকাবিলার জন্য যথেষ্ট নয়। এ জন্য অর্থমন্ত্রীর উচিত হবে চিকিৎসা পরামর্শ শেষে দ্রুত দেশে ফিরে আসা। এ ছাড়া বিদেশে থাকলেও এখন অনলাইনের যুগে অনেক কাজকর্ম বিদেশে বসেও করা যায়। যদি তিনি সেটা করে থাকেন তাহলে কিছুটা হলেও ভালো। আর যদি তা না করে থাকেন তাহলে সেটা হবে অনাকাক্সিক্ষত। সাবেক এই গভর্নর গতকাল বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, দেশের ব্যবসা-বাণিজ্য এখন মন্দা, রাজস্ব আদায়ে ধীর গতি, রপ্তানি খাতও বিপর্যস্ত। একমাত্র রেমিট্যান্স ছাড়া প্রায় সব সূচকই খুব খারাপ অবস্থায় রয়েছে। ফলে ঘন ঘন পলিসি পরিবর্তন কিংবা দ্রুত সিদ্ধান্ত নেওয়ার জন্য বিচক্ষণতা জরুরি। আর এসব কাজের জন্য অবধারিত ব্যক্তি হচ্ছেন অর্থমন্ত্রী। আবার অর্থনীতি পুনরুদ্ধারে যে প্রণোদনা প্যাকেজ ঘোষণা করা হয়েছে সেটা বাস্তবায়নে নানা সমস্যা হচ্ছে বলে পত্রিকায় খবর বেরিয়েছে। অর্থমন্ত্রী উপস্থিত থাকলে এটার জন্যও হয়তো দ্রুত সিদ্ধান্ত নিতে পারতেন। বাংলাদেশ ব্যাংকসহ সংশ্লিষ্টদের নির্দেশনাও দিতে পারতেন। এ ছাড়া অর্থ মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ ব্যাংকসহ আর্থিক খাতের নিয়ন্ত্রক সংস্থাগুলোকে তদারকির জন্য অর্থমন্ত্রীর গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে। এর সঙ্গে যুক্ত হয়েছে করোনার আচলবস্থা। যা দেশের ও বিশ্বের অর্থনীতিকে বিপর্যস্ত করে ফেলেছে। ফলে এ সময় অর্থমন্ত্রীর দ্রুত দেশে ফেরা উচিত। ড. সালেহ উদ্দিন আহমেদ আরও বলেন, যদিও আমি শুনেছি তিনি চিকিৎসার জন্য গিয়েছেন। তবে ভ্রমণের সময়টা আসলেই একটু লম্বা হয়ে গেছে। এটা আরও সংক্ষিপ্ত হওয়া উচিত ছিল। কেননা একটা অর্থবছর মাত্র শেষ হয়েছে। আর নতুন একটা অর্থবছর শুরু হয়েছে। এই শুরু এবং শেষের সময়গুলোতে অর্থমন্ত্রীর উপস্থিতি অন্যদের জন্য বুস্টআপ (উদ্দীপক) হিসেবে কাজ করে। সেগুলোর জন্য অর্থমন্ত্রী হচ্ছেন খুবই প্রয়োজনীয় ব্যক্তি। আর যেহেতু তিনি অনলাইনে কোনো ফাইলও দেখছেন না। তাই আর সময়ক্ষেপণ না করে চিকিৎসা পরামর্র্শ নিয়ে দ্রুত দেশে ফিরে আসা উচিত। এদিকে অর্থমন্ত্রীর দফতর সূত্র জানায়, অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামালের লন্ডন থেকে দেশে ফেরার সম্ভাব্য সময় ২ আগস্ট। তবে এটা চূড়ান্ত নয়। আরও কিছুটা বিলম্ব হতে পারে। উল্লেখ্য, অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল বাজেট পাসের পরদিন ১ জুলাই সকালে ব্যক্তিগত সফরে লন্ডনের উদ্দেশ্যে সস্ত্রীক ঢাকা ত্যাগ করেন। তিনি ব্যক্তিগত চিকিৎসার জন্য লন্ডনে অবস্থান করছেন বলে জানিয়েছে অর্থ মন্ত্রণালয়ের একটি সূত্র। অর্থমন্ত্রীর পারিবারিক সূত্র জানায়, করোনাভাইরাস মহামারীতে লন্ডন পৌঁছানোর পর অর্থমন্ত্রীকে সেখানে সপরিবারে ১৪ দিন হোম কোয়ারেন্টাইনে থাকতে হয়েছে। এরপর তিনি চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়েছেন। বর্তমানে তিনি লন্ডনে তাঁর বড় মেয়ের বাসায় রয়েছেন। তিনি লন্ডন যাওয়ার আগের দিন ৩০ জুন জাতীয় সংসদে নতুন অর্থবছরের জন্য ৫ লাখ ৬৮ হাজার কোটি টাকার বাজেট পাস করা হয়।

সর্বশেষ খবর