মঙ্গলবার, ২৮ জুলাই, ২০২০ ০০:০০ টা

বাংলাদেশকে ১০টি ব্রডগেজ রেল ইঞ্জিন হস্তান্তর ভারতের

কূটনৈতিক প্রতিবেদক

বাংলাদেশকে ১০টি ব্রডগেজ রেল ইঞ্জিন হস্তান্তর ভারতের

বাংলাদেশকে ১০টি ব্রডগেজ লোকোমোটিভ বা রেল ইঞ্জিন দিয়েছে ভারত। গতকাল দুপুরে ঢাকা ও নয়াদিল্লির মধ্যে হওয়া এক ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে এই রেল ইঞ্জিনগুলো হস্তান্তর করা হয়। ইঞ্জিনগুলো বাংলাদেশের দর্শনা এবং ভারতের গেদে পয়েন্ট দিয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করে। ২০১৯ সালের অক্টোবরে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নয়াদিল্লি সফরে ভারত সরকারের দেওয়া প্রতিশ্রুতি পূরণ করে এই লোকোমোটিভগুলো অনুদান হিসেবে হস্তান্তর করা হলো। এ লোকোমোটিভগুলো পাওয়ার ফলে বাংলাদেশ রেলওয়ের ইঞ্জিন চাহিদা কিছুটা কমবে এবং পূর্বাঞ্চলের সঙ্গে পশ্চিমাঞ্চলের মধ্যে অধিকসংখ্যক যাত্রীবাহী এবং মালবাহী ট্রেন চালানো সম্ভব হবে।

হস্তান্তর উপলক্ষে আয়োজিত ভার্চুয়াল অনুষ্ঠানে নয়াদিল্লিতে ভারত সরকারের পক্ষে উপস্থিত ছিলেন ভারতীয় পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. জয়শংকর, রেল, শিল্প ও বাণিজ্যমন্ত্রী পীযূষ ও গোয়েল রেলপথ প্রতিমন্ত্রী শ্রী অঙ্গদি সুরেশ। বাংলাদেশ সরকারের পক্ষে ঢাকায় পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. আবুল কালাম আবদুল মোমেন ও রেলমন্ত্রী মো. নুরুল ইসলাম সুজন ইঞ্জিনগুলো গ্রহণ করেন। ঢাকার ভারতীয় হাইকমিশন জানায়, লোকোমোটিভগুলো হস্তান্তরের আগে ভারত থেকেই বাংলাদেশ রেলওয়ের প্রয়োজনীয়তা অনুসারে যথাযথ পরিবর্তন করা হয়েছে। এই লোকোমোটিভগুলো বাংলাদেশে যাত্রীবাহী ও মালবাহী ট্রেনের ক্রমবর্ধমান চাহিদা পূরণে সহায়তা করবে। হাইকমিশন জানায়, সাম্প্রতিক সময়ে স্থল সীমান্ত দিয়ে বাণিজ্য বাধাগ্রস্ত হওয়ায় ভারত ও বাংলাদেশ কভিড-১৯ মহামারীর প্রভাব হ্রাস করতে রেল সহযোগিতা আরও বৃদ্ধি করেছে। ব্যয় সাশ্রয়ী এবং পরিবেশবান্ধব বাহন হিসাবে রেল আন্তসীমান্ত পণ্য পরিবহনে সহায়তা করেছে। জুন মাসে দুই দেশের মধ্যে সবচেয়ে বেশি মালবাহী ট্রেন চলাচল হয়েছিল। প্রয়োজনীয় পণ্য এবং কাঁচামাল বহনের জন্য মোট ১০৩টি মালবাহী ট্রেন ব্যবহৃত হয়। সম্প্রতি, ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে পার্সেল এবং কনটেইনার ট্রেন পরিষেবাও শুরু হয়েছে। এতে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্যের সম্ভাবনা উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি পাবে বলে আশা করা হচ্ছে।

হস্তান্তর অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. জয়শংকর পারস্পরিক বিশ্বাস ও শ্রদ্ধার ভিত্তিতে রচিত ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যকার কালোত্তীর্ণ সম্পর্কের গভীরতার কথা তুলে ধরেন। কভিড-১৯ মহামারীতেও দ্বিপক্ষীয় সহযোগিতার গতি হ্রাস না পাওয়ায় তিনি সন্তোষ প্রকাশ করেন। ভারতীয় পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, চলমান ঐতিহাসিক মুজিববর্ষে এ জাতীয় আরও মাইলফলক অতিক্রম করার প্রত্যাশা করছি। ভারতের রেলপথ, শিল্প ও বাণিজ্যমন্ত্রী শ্রী পীযূষ গোয়েল দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য ও যোগাযোগ বৃদ্ধিতে এবং দুই দেশের মধ্যে অর্থনৈতিক অংশীদারিত্বকে আরও জোরদার করতে রেল সহযোগিতার তাৎপর্যকে গুরুত্ব দেন।

রেলপথমন্ত্রী নুরুল ইসলাম সুজন বলেন, যাত্রীবাহী ট্রেনের চাহিদা বৃদ্ধির কারণে নতুন কিছু কোচ আমদানি করা হয়েছে। পাশাপাশি ভারতীয় পণ্য পরিবহনের জন্য ভারত থেকে লোকোমোটিভ আনার বিষয়ে চিন্তা-ভাবনা করা হয়। ২০১৯ সালের আগস্টে সরকারিভাবে ভারত সফরের সময় উভয় দেশের মধ্যে ব্যবসা-বাণিজ্য বৃদ্ধিতে লোকোমোটিভ সরবরাহের বিষয়ে আলোচনা হয়। এ ছাড়া একই বছরের অক্টোবরে দুই দেশের প্রধানমন্ত্রীর মধ্যে যৌথ বিবৃতির (প্যারা ২৭) আলোকে ভারতীয় রেলওয়ে বাংলাদেশ রেলওয়েকে ১০টি লোকোমোটিভ অনুদান হিসেবে দেওয়ার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে। পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আবদুল মোমেন বলেন, কানেকটিভিটির মাধ্যমে উৎপাদন বৃদ্ধি পায় বলে আমরা বিশ্বাস করি এবং এ জন্য সরকার জলপথ, স্থলপথ, রেলপথ ও আকাশপথে কানেকটিভিটি বাড়াচ্ছে।

সর্বশেষ খবর