বৃহস্পতিবার, ৩০ জুলাই, ২০২০ ০০:০০ টা

নদীগর্ভে শিমুলিয়ার তিন নম্বর ফেরিঘাট

আটকে পড়েছে শত শত যানবাহন

মুন্সীগঞ্জ ও মাদারীপুর প্রতিনিধি

নদীগর্ভে শিমুলিয়ার তিন নম্বর ফেরিঘাট

তীব্র স্রোতে পদ্মার গর্ভে চলে গেছে শিমুলিয়ার তিন নম্বর ফেরিঘাট -বাংলাদেশ প্রতিদিন

পদ্মায় তীব্র স্রোতে নদীগর্ভে চলে গেছে শিমুলিয়ার তিন নম্বর ফেরিঘাট। এ অবস্থায় গত মঙ্গলবার থেকে বন্ধ রয়েছে শিমুলিয়া-কাঁঠালবাড়ি নৌরুটের রো রো ফেরি চলাচল। ফলে দুই পাড়ে আটকে রয়েছে শত শত যানবাহন।

এ বিষয়ে গতকাল শিমুলিয়া ঘাটের বিআইডাব্লিউটিসির ব্যবস্থাপক সাফায়েত আহমেদ জানান, মঙ্গলবার দুপুরে পদ্মার তীব্র স্রোত ও ভাঙনের কবলে পড়ে শিমুলিয়ার তিন নম্বর ফেরিঘাটটি বিলীন হয়ে গেছে। পন্টুনটি এখন ঘাটের অবস্থান থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পদ্মায় ভাসছে। এ ছাড়া ফেরিঘাটটির সংযোগ সড়ক, বিআইডাব্লিউটিএর নির্মিত খাবারের দোকান, মসজিদ এসব তলিয়ে গেছে পানিতে। বর্তমানে রো রো ফেরি চলাচল বন্ধ আছে। বাকি দুটি ঘাট সচল আছে, যা দিয়ে ফেরি চলাচল করছে। ঘাট এলাকায় কয়েকশ গাড়ি পারের অপেক্ষায় রয়েছে। ঘাটটি মেরামত বিষয়ে এখনো কোনো সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি।

জানা গেছে, ভাঙনঝুঁকিতে রয়েছে দেশের দক্ষিণাঞ্চলের অন্যতম প্রবেশদ্বার শিমুলিয়ার আরও তিনটি ফেরি ঘাট। ভাঙন অব্যাহত থাকলে, আসছে ঈদে এ নৌপথে সব ধরনের ফেরি চলাচল বন্ধ হতে পারে। ঘাট ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, ২০ থেকে ২৫ দিন ধরে উত্তরাঞ্চলের বন্যার পানি পদ্মা নদী দিয়ে বঙ্গোপসাগরের দিকে যাচ্ছে। এ কারণে নদীতে প্রচ- স্রোতের সৃষ্টি হয়েছে। যা আগের সব রেকর্ড ছাড়িয়ে গেছে। দুই সপ্তাহ ধরে পদ্মার পানি মারাত্মক আকারে বাড়তে শুরু করেছে। প্রচ- স্রোত ও পানি বৃদ্ধির কারণে পদ্মা নদীতে ভাঙন দেখা দিয়েছে। এরই ধারাবাহিকতায় মঙ্গলবার দুপুরে পদ্মার ভাঙনে সবচেয়ে বড় ফেরির জন্য ব্যবহার করা তিন নম্বর ঘাটটি নদীগর্ভে হারিয়ে যায়। সরেজমিন দেখা গেছে, তিন নম্বর ঘাট এলাকা থেকে নদীর পাড় ভেঙে ভেঙে পড়ছে। ঘাটের নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা পুলিশের সদস্যরা যানবাহ ও যাত্রীদের নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নিচ্ছে।

আরও জানা গেছে, নাব্য সংকট ও তীব্র স্রোতের কারণে ২০ থেকে ২৫ দিন ধরে নৌ-চলাচল ব্যাহত হচ্ছে। এতে ঘাট এলাকায় যানবাহনের অচল অবস্থা কোনোভাবেই কাটানো যাচ্ছে না। ঘাট এলাকায় প্রায় চার শতাধিক যানবাহন পারাপারের অপেক্ষায় রয়েছে।

ঘাট কর্তৃপক্ষ জানান, কয়েক দিন ধরে বন্যার পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় পদ্মা নদীতে বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এতে শিমুলিয়া-কাঁঠালবাড়ী নৌরুটের লৌহজং চ্যানেলে ঘূর্ণায়মান স্রোত আর অসংখ্য ডুবোচরের কারণে ফেরি চলাচল ব্যাহত হচ্ছে। এ ছাড়া দুটি ঘাট পানিতে তলিয়ে গেছে। এ ঘাট ব্যবহার করে ছোট-বড় সাতটি ফেরি চলাচল করছে। গতকাল দুপুরে দেখা গেছে, ঘাট এলাকায় সৃষ্টি হয়েছে পণ্যাবাহী পরিবহনের চাপ। তবে যাত্রীবাহী পরিবহনের খুব একটা চাপ নেই। ব্যক্তিগত পরিবহনও কিছুটা রয়েছে। ঈদ আসন্ন হওয়ায় ঘরমুখো যাত্রীদের চাই নেই বললেই চলে। কাঁঠালবাড়ী ঘাটের লঞ্চ মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মনিরুজ্জামান বলেন, তীব্র স্রোতের কারণে নৌযান চলাচল ব্যাহত হচ্ছে। ধারণা করা হচ্ছে, করোনার কারণে যাত্রীদের চাপ এখনো বাড়েনি, তবে যাত্রী চাপ বাড়রে হিমসিম খেতে হবে। ভোগান্তিতে পড়বেন যাত্রীরা। কারণ আগে ১৭টি ফেরি ও ৮৬টি লঞ্চ চলাচল করত, এখন বৈরী পরিবেশের কারণে মাত্র সাতটি ফেরি ও ৫৬টি লঞ্চ চলাচল করছে। এ কারণে সৃষ্টি হয়েছে অচলাবস্থা।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর