শুক্রবার, ৭ আগস্ট, ২০২০ ০০:০০ টা

করোনা সংকটেও বিনিয়োগের সুযোগ আছে : প্রধানমন্ত্রী

নিজস্ব প্রতিবেদক

করোনা সংকটেও বিনিয়োগের সুযোগ আছে : প্রধানমন্ত্রী

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, করোনাভাইরাস মহামারী সংকটের মধ্যে একটা ধাক্কা এসেছে এটা ঠিক। বিদেশি বিনিয়োগে অনেক প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি হয়েছে। কিন্তু এই পরিস্থিতিতে অনেক নতুন সুযোগও সৃষ্টি হয়েছে। সেটা আমাদের মাথায় রাখতে হবে। কাজেই কারা বিনিয়োগ করতে চায়, সেদিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। সেই বিনিয়োগ যাতে আমাদের দেশে আসে সেই ব্যবস্থা নিতে হবে। গতকাল গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের গভর্নিং বোর্ডের (বিডা) সভায় অংশ নিয়ে প্রধানমন্ত্রী এসব কথা বলেন। 

বৈশ্বিক মহামারী করোনাভাইরাসের সংকটে ব্যবসা-বাণিজ্যের স্থবিরতার বিভিন্ন দিক তুলে ধরে শেখ হাসিনা বলেন, করোনাভাইরাসের কারণে সবকিছুতেই সমস্যা হচ্ছে। এই সমস্যার মধ্য দিয়ে কীভাবে দেশের অর্থনীতি এগিয়ে নিয়ে যাব, সেদিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। এ জন্য আমাদের বিনিয়োগ পরিবেশকে আকর্ষণীয় করতে হবে। তিনি বলেন, আমাদের আরও বেশি ইনভেস্টমেন্ট আনতে হবে, এটা সুযোগ আছে। অনেক দেশে এখন ইন্ডাস্ট্রি বন্ধ। আমাদের জনশক্তি আছে, জমি তৈরি আছে, অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা আছে। এই সুযোগ কাজে লাগিয়ে আমরা আরও বেশি ইনভেস্টমেন্ট আনতে পারি। প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমাদের বসে থাকলে চলবে না। সীমিতভাবে হলেও আমাদের কাজ করতে হবে। ২০০৮ আমরা ঘোষণা দিয়েছিলাম ব্যবসা-বাণিজ্য, শিক্ষা, সবকিছু সহজ করার জন্য ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ব। সেই ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়তে পেরেছি বলেই আজ আমরা এ রকম একটা অস্বাভাবিক পরিস্থিতিতেও এখানে বসে বিডার গভর্নিং বোর্ডের সভা করতে পারছি। শেখ হাসিনা বলেন, আমরা জাতিসংঘের এমডিজি খুব দক্ষতার সঙ্গে বাস্তবায়ন করেছি। এখন আমরা এসডিজি (সাসটেইনেবল ডেভেলপমেন্ট গোল) বাস্তবায়নের জন্য প্রচেষ্টা চালাচ্ছি। ইতিমধ্যে আমরা কতগুলো বিষয়ের ওপর গুরুত্ব দিচ্ছি। অবকাঠামো উন্নয়ন এর মধ্যে অন্যতম। কারণ অবকাঠামো উন্নয়ন না হলে কখনো বিনিয়োগ আসতে পারে না। সেজন্য নৌপথ, রেলপথ ও আকাশপথে যোগাযোগ উন্নত করার জন্য যথাযথ ব্যবস্থা নিয়ে কাজ করে যাচ্ছি।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, বিদ্যুতের সমস্যা ছিল। কিন্তু আজ বিদ্যুৎ আমাদের উদ্বৃত্ত আছে। নিজেদের গ্যাস উত্তোলনের ব্যবস্থা রয়েছে। তা ছাড়া আমরা গ্যাস আমদানিও করছি। বিনিয়োগের ক্ষেত্রে আমরা কর অবকাশের সুবিধা দিয়েছি, অর্থনৈতিক অঞ্চল প্রতিষ্ঠা করছি। সারা দেশে ১০০টি অর্থনৈতিক অঞ্চল প্রতিষ্ঠিত হবে। তিনি বলেন, উন্নয়ন যাতে একটা জায়গায় না হয়ে সমগ্র দেশে হয়, সে ব্যবস্থা আমরা করেছি। সেখানে দেশি-বিদেশি বিনিয়োগ সহজে করতে পারবে। শ্রমিকও খুব সহজে পাওয়া যাবে। আমরা প্রশিক্ষণও দিচ্ছি। শিল্পায়ন ত্বরান্বিত করতে কর রেয়াত দেওয়া হচ্ছে। মূলধনি সরঞ্জাম আমদানির ক্ষেত্রে বিভিন্ন সুযোগ আমরা দিচ্ছি। আমাদের পদক্ষেপের ফলে ইতিমধ্যে বিনিয়োগ বেড়েছে। এই যে উন্নতিটা- করোনাভাইরাস না এলে আমরা আরও সামনের দিকে এগিয়ে নিয়ে যেতে পারতাম বলে উল্লেখ করেন সরকারপ্রধান শেখ হাসিনা। বিডার গভর্নিং বোর্ডের সভায় গণভবন প্রান্তে উপস্থিত ছিলেন প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ উপদেষ্টা সালমান ফজলুর রহমান, প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব ড. আহমদ কায়কাউস, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় সচিব মো. তোফাজ্জল হোসেন মিয়া, প্রধানমন্ত্রীর প্রেসসচিব ইহসানুল করিম। প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় প্রান্তে বিডার গভর্নিং বোর্ডের সদস্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল, শিল্পমন্ত্রী নুরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ুন, বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি, বস্ত্র ও পাটমন্ত্রী গোলাম দস্তগীর গাজী, পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান, কৃষিমন্ত্রী ড. আবদুর রাজ্জাক, বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ, গৃহায়ণ ও গণপূর্ত প্রতিমন্ত্রী শরীফ আহমেদ প্রমুখ।

সর্বশেষ খবর