শুক্রবার, ৭ আগস্ট, ২০২০ ০০:০০ টা
উদ্ধার অভিযানে সেনাবাহিনী

বৈরুত বিস্ফোরণে মজুদ খাদ্যের ৮৫ ভাগ ধ্বংস

প্রতিদিন ডেস্ক

লেবাননের রাজধানী বৈরুতে জোড়া বিস্ফোরণে ১৩৭ জন নিহত ও ৫ হাজারের বেশি মানুষ আহত হয়েছেন বলে সরকারি খবরে বলা হয়েছে। পাশাপাশি প্রায় ৩ লাখ মানুষ গৃহহীন হয়েছেন বলে জানান শহরটির গভর্নর মারওয়ান আবুদ। বিস্ফোরণে লেবাননের মজুদ খাদ্যশস্যের ৮৫ শতাংশই ধ্বংস হয়ে গেছে বলে উল্লেখ করা হয়েছে। রয়টার্স, বিবিসি।

গত মঙ্গলবার বিকালের এই বিস্ফোরণের পর সেনাবাহিনী উদ্ধার অভিযান চালাচ্ছে। এ ঘটনায় যারা দায়ী বলে সন্দেহ করা হচ্ছে, তাদের গৃহবন্দী করা হয়েছে। দেশটির প্রেসিডেন্ট আগামী চার দিনের মধ্যে তদন্ত-সংশ্লিষ্টদের রিপোর্ট জমা দিতে বলেছেন।

এদিকে বৈরুতের গভর্নর মারওয়ান আবুদ গতকাল গণমাধ্যমকে জানান, বিস্ফোরণে বৈরুত শহরের অর্ধেক অংশই ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ধ্বংসস্তূপের নিচে এখনো অনেকে আটকে থাকায় মৃতের সংখ্যা আরও বাড়বে বলেই আশঙ্কা করা হচ্ছে। তিনি উল্লেখ করেন, বিস্ফোরণে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ ১০ থেকে ১৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলার হতে পারে। এতে লেবাননের মজুদ খাদ্যশস্যের ৮৫ শতাংশই ধ্বংস হয়ে গেছে। খাদ্যশস্যের এখন যা মজুদ আছে তা দিয়ে দেশটি আর এক মাস চলতে পারবে। তিনি বলেন, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের দায়িত্ব তুলে দেওয়া হয়েছে লেবানিজ সেনাবাহিনীর হাতে। এ ছাড়া হতাহতদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে দুই দিনের রাষ্ট্রীয় শোক ঘোষণা করেছে লেবাননের মন্ত্রিসভা। যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স, ইরান, ইসরায়েল ক্ষতি কাটিয়ে উঠতে লেবাননকে সহযোগিতার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। শোক পরিণত হচ্ছে ক্ষোভে : লেবাননের রাজধানী বৈরুত বন্দরে ভয়াবহ বিস্ফোরণে ধ্বংসস্তূপ থেকে নিজেদের প্রয়োজনীয় মূল্যবান জিনিসপত্র ও নিখোঁজ স্বজনদের খোঁজ করছেন স্থানীয়রা। এরই মাঝে অনেকেই এই বিস্ফোরণকে লেবাননের রাজনৈতিক নেতাদের কয়েক বছরের অব্যবস্থাপনার ফল হিসেবে দেখছেন।

 মার্কিন সংবাদমাধ্যম নিউইয়র্ক টাইমসের এক প্রতিবেদনে এমন পরিস্থিতির কথাই উঠে এসেছে। ক্ষুব্ধ ব্যবসায়ী নাদা চেমালি রাজনৈতিক নেতাদের উদ্দেশ করে বলেছেন, ‘এরাই দেশকে ধ্বংসের পথে নিয়ে যাওয়ার জন্য সবচেয়ে বেশি দায়ী।’ ৪২ বছরের রজার মাটার বলেন, ‘ব্যাংকে আমাদের টাকা জমা আছে। শ্রমিকদের মজুরি দিতে চাইলে নগদ লাগবে। এমন সময়ে সরকারের সহযোগিতা করা উচিত। কিন্তু তারা দেউলিয়া। এই দেশ ভেঙে পড়েছে।’ একটি হাসপাতালের প্রকৌশলী টনি টৌফিক বলেন, ‘আমরা কোনো সহযোগিতা প্রত্যাশা করছি না। কারণ কোনো রাষ্ট্র অবশিষ্ট নেই।’ শতাব্দী পুরনো সেন্ট জর্জ হসপিটাল ইউনিভার্সিটি মেডিকেল সেন্টারের রেডিওলজি বিভাগের প্রধান ড. রাজা আশু বলেন, ‘অনেকের কাছে ক্ষোভের বড় কারণ হলো, দেশের সর্বশেষ এই বিপর্যয় কোনো ঐতিহাসিক বিরোধের জের ধরে হয়নি। এটি নিজেদের ডেকে আনা। আমাদের নেতাদের মূর্খ অবহেলা না হয়ে ইসরায়েলি বিস্ফোরণ হলেই ভালো হতো। নিজেদের দ্বারা আহত হওয়ার চেয়ে তা অনেক বেশি সহজে মেনে নেওয়া যেত।’

সর্বশেষ খবর