শনিবার, ৮ আগস্ট, ২০২০ ০০:০০ টা

সিফাত শিপ্রা কারাগারে অভিভাবকের জিম্মায় তাহসিন

কক্সবাজার প্রতিনিধি

পুলিশের গুলিতে নিহত মেজর (অব.) সিনহা মোহাম্মদ রাশেদ খানের তথ্যচিত্র তৈরির সহযোগী সাহেদুল ইসলাম সিফাত ও শিপ্রা রানী দেবনাথ কারাগারে। তাহসিন রিফাত নুর অভিভাবকের জিম্মায় ছাড়া পেলেও উদ্বেগের মধ্যে সময় কাটছে তার।

তথ্যচিত্র তৈরি করতে তারা গত ৩ জুলাই কক্সবাজার আসেন। মেজর (অব.) সিনহা ছিলেন ফিল্মটির প্রযোজক। ‘জাস্ট গো’ নামক একটি ইউটিউব প্রতিষ্ঠানের পৃষ্ঠপোষকতায় তথ্যচিত্রটি তৈরির কাজ চলছিল। তারা তিনজনই ঢাকার স্ট্যামফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের ফিল্ম অ্যান্ড মিডিয়া বিভাগের শিক্ষার্থী। সাহেদুল ইসলাম সিফাত, শিপ্রা রানী দেবনাথ তৃতীয় বর্ষে এবং তাহসিন রিফাত নুর শেষ বর্ষের ছাত্র। কক্সবাজার-টেকনাফ মেরিন ড্রাইভ রোডের বাহারছড়া শামলাপুর পুলিশ চেকপোস্টে ৩১ জুলাই রাত সাড়ে ১০টার দিকে পুলিশের গুলিতে নিহত হন সাবেক সেনা কর্মকর্তা সিনহা। খুনের ঘটনার পরপরই শিপ্রা রানী দেবনাথ ও তাহসিন রিফাত নুরকে হিমছড়ি নীলিমা রিসোর্ট থেকে গ্রেফতার করে পুলিশ। পুলিশের ভাষ্য অনুযায়ী, নীলিমা রিসোর্ট থেকে পাঁচটি বিদেশি মদের বোতল, এক লিটার বাংলা মদ ও এক পোঁটলা গাঁজা উদ্ধার করা হয়। গ্রেফতারের পর তাদের রামু থানায় নিয়ে যাওয়া হয়। সেখান থেকে তাহসিন রিফাত নুরকে তার অভিভাবকের জিম্মায় ছেড়ে দেওয়া হয়। আর উদ্ধারকৃত মালামালসহ মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে রামু থানায় একটি মামলা রুজু করে শিপ্রা রানী দেবনাথকে ১ আগস্ট আদালতের মাধ্যমে জেল হাজতে পাঠানো হয়। মামলা নম্বর জিআর ৩১১/২০২০ ইংরেজি (রামু)। একই সঙ্গে মামলার আইও রামু থানার এসআই দীপংকর আসামি শিপ্রা রানী দেবনাথের বিরুদ্ধে পাঁচ দিনের রিমান্ড চেয়ে আবেদন করলে আদালত ৫ আগস্ট রিমান্ড আবেদন শুনানির জন্য রাখেন। কিন্তু ৫ আগস্ট আদালতে রিমান্ড আবেদনটির কোনো শুনানি হয়নি। শিপ্রা রানী দেবনাথ তখন থেকে কক্সবাজার জেলা কারাগারে রয়েছেন। ঢাকার স্ট্যামফোর্ট ইউনিভার্সিটিসূত্রে জানা গেছে, শিপ্রা রানী দেবনাথ আট দিন আগেও অনলাইনে বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষা দিয়েছেন। ফটোগ্রাফার হিসেবে তার সুনাম রয়েছে। কুষ্টিয়ার মিরপুর উপজেলার হাজারাহাটি গ্রামের নবকুমার দেবনাথের কন্যা শিপ্রা রানী দেবনাথ। নবকুমার দেবনাথ বিজিবির একজন অবসরপ্রাপ্ত কর্মকর্তা। শিপ্রা রানী দেবনাথ দুই ভাইবোনের মধ্যে বড়। মেজর সিনহা নিহত হওয়া নিয়ে পুলিশের পক্ষ থেকে মোট তিনটি মামলা হয়। তার মধ্যে সিনহার সঙ্গে তার প্রাইভেট কারে থাকা সাহেদুল ইসলাম সিফাতকে আসামি করে টেকনাফ থানায় দুটি মামলা হয়। তার একটি ২০১৮ সালের মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে এবং অন্যটি সরকারি কর্মচারীদের দায়িত্ব পালনে বাধা দেওয়ার অভিযোগে। মামলা দুটির নম্বর- জিআর ৫৯৫/২০২০ ও জিআর ৫৯৬/২০২০ ইংরেজি। ১ আগস্ট দায়েরকৃত মামলা দুটির বাদী হন বাহারছড়া পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের এসআই নন্দদুলাল রক্ষিত। তিনি সিনহার বড় বোন শারমিন শাহরিয়া ফেরদৌসের করা হত্যা মামলার ৩ নম্বর আসামি। এ মামলায় সিফাতকে আদালতের মাধ্যমে জেল হাজতে পাঠানো হয়। তখন থেকে সিফাত কক্সবাজার জেলা কারাগারে রয়েছেন। ফ্রিল্যান্স ফটোগ্রাফার হিসেবে সিফাতের সুনাম রয়েছে বলে জানিয়েছেন তার সহপাঠীরা। ৩৬ বছর বয়সী সাবেক সেনা কর্মকর্তা সিনহা মো. রাশেদ খানসহ তার টিমের চার সদস্য গত ৫ জুলাই কক্সবাজার পৌরসভার মাধ্যমে কক্সবাজার মেডিকেল কলেজের ল্যাব থেকে করোনার নমুনা টেস্ট করান। টেস্টে তাদের সবার রিপোর্টই ‘নেগেটিভ’ আসে।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর