শনিবার, ৮ আগস্ট, ২০২০ ০০:০০ টা

সড়কেই শেষ হিমালয় জয়ের স্বপ্ন

নিজস্ব প্রতিবেদক

সড়কেই শেষ হিমালয় জয়ের স্বপ্ন

সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক রেশমা নাহার রতœা স্বপ্ন দেখেছিলেন একদিন হিমালয় জয়ের। এ জন্য তিনি পর্বতারোহণের অভিযান শুরু করেন। দেশের কেওক্রাডাং চূড়া, কেনিয়ার লেনানা চূড়া, ভারতের কাঙরি পর্বত ও কাং ইয়াতসে-২ সফলভাবে আরোহণ করেন। আগামী বছর হিমালয় জয়ের অভিযান শুরুর কথা ছিল তার। সাইক্লিং করার সময় রাজধানীর সংসদ ভবন এলাকার চন্দ্রিমা উদ্যান সংলগ্ন লেক রোডে মাইক্রোবাস চাপায় পর্বতারোহী রেশমার (৩৩) স্বপ্ন পিষ্ট হয়ে যায়।

প্রত্যক্ষদর্শীর বর্ণনা দিয়ে শেরেবাংলানগর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) আবুল কালাম আজাদ বলেন, গতকাল সকালে রেশমা উড়োজাহাজ ক্রসিং দিয়ে সাইকেল চালিয়ে গণভবনের দিকে যাচ্ছিলেন। লেকের ব্রিজের দিকে ঘোরার সময় পেছন থেকে আসা একটি কালো রঙের মাইক্রোবাসের ধাক্কায় তিনি ছিটকে পড়েন। এতে গুরুতর আহত হন তিনি। ঘটনাস্থল থেকে পুলিশ সদস্যরা রেশমাকে উদ্ধার করে শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। পুলিশ কর্মকর্তা আরও বলেন, রেশমার দুমড়েমুচড়ে যাওয়া সাইকেলটি পুলিশ উদ্ধার করেছে। তবে দুর্ঘটনার জন্য দায়ী মাইক্রোবাসটি ধরা যায়নি। এ জন্য পুলিশের দুটি টিম কাজ করছে। সংসদ ভবন এলাকায় স্থাপিত সিসি ক্যামেরার ভিডিও ফুটেজ সংগ্রহের চেষ্টা করা হচ্ছে। রেশমা ছিলেন ধানমন্ডির আইয়ুব আলী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক। মিরপুর টোলারবাগের পাইকপাড়া সরকারি স্টাফ কোয়ার্টারে থাকতেন। ঘটনার পর রেশমার ভগ্নিপতি মনিরুজ্জামান বাদী হয়ে শেরেবাংলানগর থানায় মামলা করেন। মামলার বাদী মনিরুজ্জামান বলেন, পেশায় শিক্ষক হলেও রেশমার রক্তে ছিল অভিযানের নেশা। পর্বতারোহণের পাশাপাশি ম্যারাথন দৌড়ে তিনি অংশ নিতেন। তার স্বপ্ন ছিল একদিন তিনিও হিমালয় জয় করবেন। কিন্তু মাইক্রোবাসের চাকার নিচে তার সেই স্বপ্ন পিষ্ট হলো। পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, কেনিয়ার লেনানা চূড়া জয়ের পর ২০১৯ সালের ২৪ আগস্ট ভারতের লাদাখে অবস্থিত স্টক কাঙরি পর্বত এবং ৩০ আগস্ট কাং ইয়াতসে-২ পর্বতে সফলভাবে আরোহণ করেন রেশমা। দুটি পর্বতই ৬ হাজার মিটারের বেশি উচ্চতার। ২০১৬ সালে বাংলাদেশের পাহাড় কেওক্রাডাংয়ের চূড়া স্পর্শ করার মাধ্যমে শুরু হয় রেশমার পর্বতারোহণের অভিযান। ওই বছরই মৌলিক প্রশিক্ষণের জন্য ভারতের উত্তরাখন্ডের উত্তরকাশিতে অবস্থিত পর্বতারোহণ প্রশিক্ষণ প্রদানকারী প্রতিষ্ঠান নেহেরু ইনস্টিটিউট অব মাউন্টেইনিয়ারিংয়ে যান তিনি। কিন্তু অ্যাডভ্যান্স বেজক্যাম্পে যাওয়ার পর তার পায়ে ফ্র্যাকচার হয়। দেশে ফেরার পর সুস্থ হতে লেগে যায় দীর্ঘদিন। পরে নিজ উদ্যোগে সফলভাবে পর্বতারোহণের মৌলিক ও উচ্চতর প্রশিক্ষণ গ্রহণ করেন।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর