বুধবার, ১২ আগস্ট, ২০২০ ০০:০০ টা

টেকসই উন্নয়নে চাই রাজনৈতিক দুর্বৃত্তায়ন ও দুর্নীতি নির্মূল

নিজস্ব প্রতিবেদক

টেকসই উন্নয়নে চাই রাজনৈতিক দুর্বৃত্তায়ন ও দুর্নীতি নির্মূল

ড. ইফতেখারুজ্জামান

ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের (টিআইবি) নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেছেন, টেকসই উন্নয়ন অভীষ্ট লক্ষ্য (এসডিজি) অর্জনে সিদ্ধান্ত গ্রহণ, নীতি-কৌশল প্রণয়ন, কর্মপরিকল্পনা নির্ধারণ এবং সেগুলোর বাস্তবায়নে রাজনৈতিক দুর্বৃত্তায়ন ও দুর্নীতি নির্মূল করতে হবে। আন্তর্জাতিক যুব দিবস উপলক্ষে গতকাল দেওয়া এক বিবৃতিতে তিনি এ কথা বলেন।

টিআইবির উদ্যোগে বাংলাদেশে পরিচালিত দুর্নীতিবিরোধী সামাজিক আন্দোলনে তরুণরাই মূল  চালিকাশক্তি উল্লেখ করে ইফতেখারুজ্জামান বলেন, ২০০৬ সাল থেকে কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ের তরুণদের সম্পৃক্ত করে ইয়ুথ এনগেজমেন্ট অ্যান্ড সাপোর্ট (ইয়েস) প্ল্যাটফরমের মাধ্যমে দুর্নীতিবিরোধী বিভিন্ন সচেতনতা ও প্রচারণামূলক কার্যক্রম পরিচালনা করছে টিআইবি। এর মূল ভিত্তি হচ্ছে সচেতনতা তৈরির মাধ্যমে স্থানীয় ও জাতীয় পর্যায়ের সমস্যা ও সমাধান সম্পর্কে তরুণদের সচেতন করা। তিনি বলেন, বাংলাদেশের মোট জনসংখ্যার বড় অংশটিই বর্তমানে কর্মক্ষম যুবসমাজ। অথচ রাষ্ট্রীয় ও সামাজিক পরিসরে নীতি কৌশল প্রণয়ন ও বাস্তবায়নে তরুণদের অংশগ্রহণের ঘাটতি যেমন বিদ্যমান তেমনি তরুণদের রাজনীতিবিমুখতার হারও আশঙ্কাজনক। রাজনৈতিক ও সামাজিক নানা কর্মকান্ডে তরুণদের অংশগ্রহণের পথও নানা আইনি ও পদ্ধতিগত বাধায় আটকে আছে।

ইফতেখারুজ্জামানের সাত দফা দাবি : আন্তর্জাতিক যুব দিবস উপলক্ষে সাত দফা দাবি জানিয়েছেন ইফতেখারুজ্জামান। দাবিগুলো হচ্ছে- এক. এসডিজি অর্জনে সিদ্ধান্ত গ্রহণ, নীতি-কৌশল প্রণয়ন, কর্মপরিকল্পনা নির্ধারণ এবং সেগুলোর বাস্তবায়নে তরুণ প্রজন্মের সক্রিয় অংশগ্রহণ নিশ্চিত করা।

দুই. রাজনৈতিক দুর্বৃত্তায়ন ও দুর্নীতি বন্ধ করে রাজনৈতিক প্রক্রিয়ায় স্বচ্ছতা নিশ্চিত করার মাধ্যমে গণতান্ত্রিক ব্যবস্থার দুর্বলতা হ্রাস এবং উন্নত ও টেকসই নীতি-কৌশল নির্ধারণে সমাজ-রাজনীতি-অর্থনীতির ক্ষেত্রে যে কোনো ধরনের অসঙ্গতি নিয়ে তরুণ সমাজ যাতে সব ধরনের ভয়ভীতির ঊর্ধ্বে উঠে নির্বিঘ্নে তাদের মতামত প্রকাশ ও প্রতিবাদ করার আইনি অধিকারের চর্চা করতে পারে, তা নিশ্চিত করতে হবে। এক্ষেত্রে প্রতিবন্ধক ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনসহ একই ধরনের অন্যান্য আইনের বিতর্কিত ধারাগুলো বাতিল করতে হবে।

তিন. সরকারি-বেসরকারি সকল ক্ষেত্রে চাকরিতে নিয়োগ প্রক্রিয়া দুর্নীতিমুক্ত করে মেধা ও যোগ্যতার ভিত্তিতে সমান প্রতিযোগিতার ক্ষেত্র নিশ্চিত করতে হবে।

চার. জাতীয় যুবনীতি-২০১৭ এর পূর্ণ বাস্তবায়নে সুনির্দিষ্ট ও সময়াবদ্ধ কৌশল ও কর্ম-পরিকল্পনা নির্ধারণ করে সেগুলোর বাস্তবায়নে প্রয়োজনীয় বাজেট বরাদ্দ এবং আধুনিক, সময়োপযোগী, বিশেষ করে তথ্য-প্রযুক্তিনির্ভর অবকাঠামো নির্মাণ করতে হবে।

পাঁচ. কভিড-১৯ অতিমারি ও জলবায়ু পরিবর্তনের মতো বৈশি^ক মানবিক বিপর্যয় মোকাবিলায় তরুণদের কার্যকর ও অর্থবহ অংশগ্রহণ ও পদক্ষেপ গ্রহণের সুযোগ নিশ্চিত করতে হবে।

ছয়. কভিড-১৯ বাস্তবতায় নতুন স্বাভাবিকতার সঙ্গে খাপ খাইয়ে নিতে প্রয়োজনীয় প্রযুক্তিগত ও ব্যবস্থাপনাগত দক্ষতা অর্জনের সুযোগ তৈরি করতে হবে; সৃজনশীলতা, সাংস্কৃতিক কর্মকান্ড ও বুদ্ধিবৃত্তিক চর্চার সুযোগ বৃদ্ধি করতে হবে।

সাত. তরুণ উদ্যোক্তাদের অর্থায়নের পাশাপাশি পরামর্শ ও উৎসাহ প্রদান, আইনি সহায়তা এবং বাজারে অভিগম্যতা নিশ্চিত করতে হবে এবং এক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় বাজেট বরাদ্দ এবং ব্যাংক ঋণ পাওয়ার শর্ত ও সুদহার সহজ করতে হবে।

সর্বশেষ খবর