বৃহস্পতিবার, ১৩ আগস্ট, ২০২০ ০০:০০ টা
মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচন

বাইডেনের রানিংমেট কমলা হ্যারিস

লাবলু আনসার, যুক্তরাষ্ট্র

বাইডেনের রানিংমেট কমলা হ্যারিস

মার্কিন ভাইস প্রেসিডেন্ট পদে বড় একটি রাজনৈতিক দলের মনোনয়ন পেলেন প্রথম দক্ষিণ এশিয়ান এবং আফ্রিকান নারী কমলা হ্যারিস (৫৫)। আর এর মধ্যদিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের রাজনীতি ও প্রশাসনে বর্ণবাদ নির্মূলে বহুল প্রত্যাশিত একটি ইস্যুর যবনিকাপাত এবং নারী ক্ষমতায়নের ক্ষেত্রেও অবিশ্বাস্য অগ্রগতিসাধিত হওয়ার পথ সুগম হয়েছে। ফলে দারুণ খুশি হয়েছেন দেশটিতে বসবাসকারী প্রবাসীরা। প্রেসিডেন্ট ক্লিনটন আমলে প্রথম মুসলিম রাষ্ট্রদূতের দায়িত্ব পালনকারী ওসমান সিদ্দিক বলেন, একজন বাংলাদেশি-আমেরিকান হিসেবে আজ আমি খুব খুশি এ কারণে যে, অভিবাসীদের রক্ত-ঘাম আর মেধায় বিশ্বে শ্রেষ্ঠ দেশে পরিণত হওয়া যুক্তরাষ্ট্র সঠিক ট্র্যাকে ফেরার চেষ্টা করছে ডেমোক্র্যাটদের হাত ধরে।

জানা গেছে, ডেমোক্র্যাটিক পার্টির প্রেসিডেন্ট প্রার্থী জো বাইডেন ১১ আগস্ট বিকালে ক্যালিফোর্নিয়া থেকে ইউএস সিনেটর কমলা হ্যারিসকে তার রানিংমেট হিসেবে ঘোষণার পরই সারা আমেরিকায় অভিবাসী সমাজে উল্লাস শুরু হয়। কমলা হ্যারিসের মা শ্যামলা গোপালান (ব্রেস্ট ক্যান্সার বিজ্ঞানী) ছিলেন ভারতীয় এবং বাবা অধ্যাপক ডোনাল্ড হ্যারিস (স্ট্যানফোর্ড ইউনিভার্সিটির অর্থনীতির এমিরিটাস অধ্যাপক) ছিলেন জ্যামাইকান। ফলে চলমান বর্ণবাদ নির্মূল আন্দোলনের প্রতিক হিসেবে সর্বমহলে সমাদৃত হচ্ছেন কমলা। পর্যবেক্ষকরা বলছেন, এই প্রথম প্রধান দুটি রাজনৈতিক দল (ডেমোক্র্যাট ও রিপাবলিকান পার্টি) থেকে প্রথম একজন আফ্রিকান ও এশিয়ান আমেরিকান নারীকে ভাইস প্রেসিডেন্টের মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের রাজনীতির ইতিহাসে এ এক বিশাল পদক্ষেপ। বারাক ওবামা প্রেসিডেন্ট হয়ে যেমন ইতিহাস রচনা করেছেন, একইভাবে কমলাও একজন নারী হিসেবে জয়ী হতে পারলে আরেকটি ইতিহাসের স্রষ্টা হবেন।

কে এই কমলা : অভিবাসীদের কষ্টের সঙ্গে বেড়ে উঠায় কমলা হ্যারিস সানফ্রান্সিসকোর ডিস্ট্রিক্ট অ্যাটর্নি এবং পরবর্তী সময়ে ক্যালিফোর্নিয়া স্টেটের অ্যাটর্নি জেনারেল হিসেবে দায়িত্ব পালনের সময় নিজের দায়িত্বশীলতার পরিচয় দিয়ে ২০১৬ সালের নির্বাচনে ইউএস সিনেটর হিসেবে জয়ী হন। আপাদমস্তক একজন কঠোর পরিশ্রমী মানুষের প্রতিকৃতি হিসেবে কমলা হ্যারিস ডেমোক্র্যাটিক পার্টির প্রেসিডেন্ট প্রার্থী হওয়ার দৌড়েও অবতীর্ণ হয়েছিলেন বাইডেনের বিরুদ্ধে। সময়ের পরিক্রমায় এখন তিনি বাইডেনের রানিংমেট। জো বাইডেন ছিলেন আফ্রিকান-আমেরিকান ওবামার ভাইস প্রেসিডেন্ট। এখন সেই বাইডেনের রানিংমেট কমলা হ্যারিস। তাকে অভিনন্দন জানানোর পাশাপাশি জো বাইডেনের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়েছেন বাংলাদেশি আমেরিকান ডেমোক্র্যাট ড. নীনা আহমেদ। পেনসিলভেনিয়া স্টেট অডিটর জেনারেল পদে ডেমোক্র্যাটিক পার্টির প্রার্থী ড. নীনা নিজের উচ্ছ্বাস প্রকাশকালে বলেন, সদা হাস্যোজ্জ্বল একজন মানুষ হিসেবে কমলা হ্যারিস সবারই প্রিয়। তিনি সততা ও নিষ্ঠার সঙ্গে দায়িত্ব পালনে সিদ্ধহস্ত। আমি নিজেও তার ভক্ত। কমলাকে অভিনন্দন জানিয়েছে ল্যাটিন আমেরিকানরাও। এক বিবৃতিতে ল্যাটিনরা বলেছেন, বর্ণবিদ্বেষমূলক আচরণের ভিকটিম, বৈষম্যের শিকার কমলা হ্যারিস তার মেধা ও নেতৃত্বগুণে ‘ব্ল্যাক লাইভস ম্যাটার’ আন্দোলনকারীদের সমর্থন লাভেও সক্ষম হয়েছেন। আর এটি হচ্ছে নতুন ইতিহাস। ট্রাম্পের কারণে লাইনচ্যুত হওয়া আমেরিকাকে সঠিক ট্র্যাকে ফিরিয়ে আনতে কমলার ভূমিকা অবশ্যই অভিভূত করার মতো হবে। এ জন্য ৩ নভেম্বরের নির্বাচনে সবাইকে বাইডেনের বিজয় নিশ্চিত করতে কাজ করতে হবে।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর