বৃহস্পতিবার, ২০ আগস্ট, ২০২০ ০০:০০ টা

কুশীলবদের মুখোশ উন্মোচন করতে হবে

নিজস্ব প্রতিবেদক

কুশীলবদের মুখোশ উন্মোচন করতে হবে

জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে সপরিবারে হত্যাকান্ডের নেপথ্য নায়কদের খুঁজে বের করতে একটি তদন্ত কমিশন গঠন করার প্রস্তাব গ্রহণ করা হয়েছে ১৪ দলের সভায়। জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে গতকাল কেন্দ্রীয় ১৪ দলের ভার্চুয়াল সভায় এই সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়। এ সিদ্ধান্তের কথা জানিয়ে ১৪ দলের মুখপাত্র, সমন্বয়ক এবং আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য আমির হোসেন আমু ভার্চুয়াল বৈঠকে বলেন, এই সভা থেকে অনেকেই ১৫ আগস্ট হত্যাকান্ডের নায়কদের খুঁজে বের করতে তদন্ত কমিশন গঠনের প্রস্তাব করেছেন। কমিশন গঠন করার মধ্য দিয়ে তদন্ত করা হোক কারা এই হত্যাকান্ডের সঙ্গে জড়িত ছিল, কারা নেপথ্যে নায়ক ছিল। তিনি বলেন, এ প্রস্তাব গ্রহণ করা যেতে পারে। ১৯৭৫ এর ১৫ আগস্টের কালরাতে জাতির পিতাকে সপরিবারে হারিয়েছিলাম। যে জাতীয় চার নীতির ভিত্তিতে সংবিধান রচিত হয়েছিল সেই জাতীয় চার নীতি ছুড়ে ফেলে দেওয়া হয়েছিল। এই দেশে সাম্প্রদায়িকতার রাজনীতির কোনো অনুমোদন ছিল না সংবিধানে, সেটা তুলে দিয়ে সাম্প্রদায়িক রাজনীতির অনুপ্রবেশ ঘটানো হয়েছিল। বঙ্গবন্ধুর জীবন দর্শন তুলে ধরে আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য সাবেক মন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ বৈঠকে বলেন, ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট শুধু বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করা হয়নি, আমাদের স্বাধীনতার চেতনা মূল্যবোধকে হত্যা করা হয়েছিল। বঙ্গবন্ধু হত্যাকারী কয়েকজন খুনির জবানবন্দিতে এটা পরিষ্কার যে জিয়াউর রহমান বঙ্গবন্ধুর হত্যার সঙ্গে জড়িত ছিল। এতে কোনো সন্দেহ নেই। পাকিস্তানিরা পারেনি, খন্দকার মোশতাক ও জিয়া দেশি-বিদেশি ষড়ন্ত্রের মাধ্যমে সেদিন বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যা করেছিল। তিনি বলেন, সময় এসেছে একটা কমিশন গঠন করে তদন্ত করার। কারা এই হত্যাকান্ডের সঙ্গে জড়িত ছিল, যারা বিদেশি তারা কারা? তদন্ত করলে প্রকৃত কুশীলবরা বেরিয়ে আসবে।

ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন বলেন, ১৫ আগস্টের হত্যাকান্ড কোনো ব্যক্তির হত্যা ছিল না, এটা ছিল রাজনীতিকে হত্যা, বাংলাদেশকে পিছিয়ে দিতে মুক্তিযুদ্ধের পথ থেকে সরিয়ে আনতে এবং স্বাধীনতার ঘোষণা, সামাজিক ন্যায় বিচার থেকে সড়িয়ে নেওয়ার হত্যাকান্ড। জিয়া সংবিধান খ-বিখ- করেছে। সময় এসেছে একটি কমিশন গঠন করে কুশীলবদের খুঁজে বের করার। জাসদ সভাপতি হাসানুল হক ইনু বলেন, ১৫ আগস্টে বঙ্গবন্ধুকে হত্যাকান্ড শুধুমাত্র একজন ব্যক্তির হত্যাকান্ড নয় অথবা শুধু ক্ষমতার রদবদলের হত্যাকান্ড নয়, এটা সুপরিকল্পিত রাজনৈতিক হত্যাকান্ড। এই হত্যাকান্ডের মধ্য দিয়ে শুধু বঙ্গবন্ধুকেই হত্যা করা হয়নি, বাংলাদেশ নামক রাষ্ট্র এবং সংবিধানের আত্মাকে ধ্বংস করার অপচেষ্টা করা হয়েছিল।

তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করার মধ্য দিয়ে ১৯৭৫ এর ১৫ আগস্ট সদ্য স্বাধীন রাষ্ট্রকে হত্যা করার প্রচেষ্টা চালানো হয়েছিল। এই হত্যাকান্ডের কুশীলব জিয়া-মোশতাকসহ যারা ছিল তাদেরও বিচার হওয়া প্রয়োজন। একটি কমিশন গঠন করে বঙ্গবন্ধু হত্যার কুশীলব ও ষড়যন্ত্রকারীদের বিচার করার প্রস্তাব করছি। ১৪ দলের সমন্বয়ক ও মুখপাত্র আমির হোসেন আমুর সভাপতিত্বে ভার্চুয়াল সভায় আরও বক্তব্য রাখেন, আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতা মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া বীরবিক্রম, বাংলাদেশ জাসদ সভাপতি শরিফ নুরুল আম্বিয়া, সাম্যবাদী দলের সাধারণ সম্পাদক দিলীপ বড়ুয়া, তরিকত ফেডারেশনের চেয়ারম্যান সৈয়দ নজিবুল বশর মাইজভান্ডারী প্রমুখ।

অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন আওয়ামী লীগের মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক সম্পাদক মৃণাল কান্তি দাস প্রমুখ।

সর্বশেষ খবর