বুধবার, ২৬ আগস্ট, ২০২০ ০০:০০ টা

পি কে হালদারকে ফেরত আনা হবে : দুদক সচিব

নিজস্ব প্রতিবেদক

এনআরবি গ্লোবাল ব্যাংক ও রিলায়েন্স ফাইন্যান্স লিমিটেডের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) প্রশান্ত কুমার হালদারের দুর্নীতি প্রমাণিত হলে তাকে দেশে ফিরিয়ে আনা হবে বলে জানিয়েছেন দুর্নীতি দমন কমিশনের সচিব মুহাম্মদ দিলোয়ার বখ্ত। তিনি বলেন, প্রশান্তর বিরুদ্ধে ভয়াবহ দুর্নীতির অভিযোগ এসেছে। দুদক বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে খতিয়ে দেখছে। তার বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ প্রমাণিত হলে আইনি প্রক্রিয়ায় তাকে দেশে ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করবে কমিশন। গতকাল দুদকের প্রধান কার্যালয়ে সংস্থাটির সচিব সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন। এদিকে দুদক সূত্র জানিয়েছে, পি কে হালদারের দুর্নীতির সঙ্গে তার অন্যতম সহযোগী রাশেদুল হকের সংশ্লিষ্টতার প্রমাণ পাওয়া গেছে।

জানা গেছে, ২০১০ থেকে ২০১৪ সাল পর্যন্ত রিলায়েন্স ইন্টারন্যাশনাল লিজিংয়ের ডিএমডি ছিলেন রাশেদুল হক। আর এমডি ছিলেন প্রশান্ত হালদার। সে থেকেই তাদের মধ্যে ঘনিষ্ঠতা। পরে ইন্টারন্যাশনাল লিজিংয়ের এমডি হিসেবে যোগ দেন রাশেদুল হক। সেখান থেকে জামানত ছাড়াই প্রশান্ত হালদারকে আড়াই হাজার কোটি টাকা ঋণ দেওয়া হয়। অভিযোগ পাওয়া গেছে, রাশেদুলই এ সুযোগ দিয়েছেন। রাশেদুলসহ ইন্টারন্যাশনাল লিজিংয়ের চারজনকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে দুদক। তাদের সঙ্গে প্রশান্ত হালদারের সংশ্লিষ্টতার তথ্য পাওয়া গেছে, এবার দালিলিক প্রমাণ খোঁজা হবে, এমনই জানিয়েছে দুদকের সংশ্লিষ্ট সূত্র। প্রশান্ত হালদার ও তার বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের সহযোগীসহ কয়েকজনের ব্যাংক হিসাব জব্দ করেছে বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (বিএফআইইউ)। দুদকের অনুরোধের পরিপ্রেক্ষিতে ১২ আগস্ট বিএফআইইউ থেকে এ ব্যবস্থা নেওয়া হয়। বর্তমানে প্রশান্ত হালদার পলাতক। ২০১৯ সালের ৩ অক্টোবর তার বিদেশযাত্রায় নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছে। অভিযোগ রয়েছে, প্রশান্ত হালদার পিপলস লিজিং, ইন্টারন্যাশনাল লিজিং অ্যান্ড ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিসেস, পিপলস লিজিং অ্যান্ড ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিসেস, এফএএস ফাইন্যান্স অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট লিমিটেড ও বাংলাদেশ ইন্ডাস্ট্রিয়াল ফাইন্যান্স কোম্পানির (বিআইএফসি) দায়িত্ব পালন করে প্রায় ৩ হাজার ৬০০ কোটি টাকা আত্মসাৎ ও পাচার করেছেন। ২৭৫ কোটি টাকা অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে প্রশান্ত হালদারের বিরুদ্ধে দুদক মামলা করেছে। দুদক সূত্রের দাবি, কয়েকটি ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের শীর্ষ পর্যায়ের কর্মকর্তা থাকা অবস্থায় ক্ষমতার অপব্যবহার, দুর্নীতি ও কর ফাঁকির মাধ্যমে বিপুল পরিমাণ অবৈধ অর্থের মালিক হয়েছেন তিনি। সূত্রমতে, প্রশান্ত হালদার ও তার বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের ব্যাংক হিসাবে জমা হয় প্রায় ১ হাজার ৬০০ কোটি টাকা। এর মধ্যে তিনটি প্রতিষ্ঠানের হিসাবে ১ হাজার ২০০ কোটি টাকা, পি কে হালদারের হিসাবে ২৪০  কোটি টাকা এবং তার মা লীলাবতী হালদারের হিসাবে জমা হয় ১৬০  কোটি টাকা।

সর্বশেষ খবর