বুধবার, ২৬ আগস্ট, ২০২০ ০০:০০ টা

স্বাস্থ্য খাতের তামাশা বন্ধ করা জরুরি

-বিচারপতি শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিক

স্বাস্থ্য খাতের তামাশা বন্ধ করা জরুরি

সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিক বলেছেন, কোথাও দুর্নীতি হলে সে দুর্নীতির জন্য প্রধানতম দায়ী ব্যক্তি হচ্ছেন ওই খাতের দায়িত্বে যিনি থাকেন। যেমন স্বাস্থ্য খাতের সব দুর্নীতির দায় স্বাস্থ্যমন্ত্রীর। তাকে আগে বিদায় নিতে হবে। শুধু স্বাস্থ্য অধিদফতরের ডিজিকে (মহাপরিচালক) বদলানো আবার তাকে অন্য জায়গায় প্রমোশন দিয়ে বসানো, সচিবকে বদলি করা এসব হচ্ছে এক ধরনের তামাশা। এই তামাশা বন্ধ করা খুব জরুরি। স্বাস্থ্য খাতের যত মাফিয়া রয়েছে তাদের মদদদাতা তো মন্ত্রী সচিবরাই, তাহলে সচিবকে বদলি করালে মন্ত্রীকে কেন বিদায় করাবেন না। মন্ত্রীর তো নিজে থেকেই সরে যাওয়া উচিত।

বাংলাদেশ প্রতিদিনকে গত সোমবার অবসরপ্রাপ্ত এই বিচারপতি আরও বলেন, স্বাস্থ্যমন্ত্রীর তো নিজের ওপরই কোনো নিয়ন্ত্রণ নেই। মন্ত্রণালয়টাও তার নিয়ন্ত্রণে নেই। তিনি নিজেও সেটা স্বীকার করেছেন। এরপরও তিনি কেন সেখানে আছেন? এ অবস্থা হলে দুর্নীতি তো কমবে না। বরং আরও বাড়বে এবং সেটাই তো হচ্ছে। মন্ত্রীকে না সরালে এর কোনো সুরাহা হবে না বলে বিচারপতি মানিক মনে করেন। তিনি বলেন, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে যেটা চলছে সেটা এক কথায় তামাশা। মন্ত্রীর ছেলের বিরুদ্ধেও নানা অভিযোগ রয়েছে। এমনকি স্বাস্থ্য খাতের সিন্ডিকেটের হোতা মিঠু আমেরিকাতে পালিয়ে রয়েছে, তাকে ধরে আনতে হবে। দুদক এখানে কী করছে সেটাও একটা প্রশ্ন। বিতর্কিত কোম্পানিগুলোকেও তো ব্ল্যাকলিস্ট করা হয়নি।

শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিক বলেন, ব্যাংকিং খাতে খেলাপি ঋণ জেঁকে বসেছে। এখানে খেলাপিদের ধরতে হবে। অর্থঋণ আদালতে বহু মামলা রয়েছে সেগুলোর সুরাহা হওয়া দরকার। খেলাপিদের বিরুদ্ধে দেউলিয়া আইনে ব্যবস্থা নিতে হবে। অর্থঋণ আইনে অনেকে হাই কোর্টে গিয়ে রিট করেন, পরে সেটা ঝুলে যায় দীর্ঘদিনের জন্য। বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর, দুদক, আইন মন্ত্রণালয়কে এখানে অধিক কার্যকরভাবে ভূমিকা রাখতে হবে। শুধু রিজেন্ট হাসপাতালকে ধরলে হবে না। এখানে যাদের লাইসেন্স নেই বা যারা লাইসেন্স রিনিউ করেননি তাদেরও ধরতে হবে। যারা মানুষকে জিম্মি করে টাকা আদায় করে সেটা তো ফৌজদারি অপরাধ। তাদের বিরুদ্ধে ফৌজদারি বিধিতে মামলা হতে হবে। এ ছাড়া তারা ঠিক হবেন না। একইভাবে শিক্ষা খাতেও দুর্নীতি ছেয়ে গেছে। এখানে  বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলো ইচ্ছেমাফিক চলছে। এ ছাড়া ইংলিশ মিডিয়াম স্কুলের জন্য তো নির্দিষ্ট কোনো নীতিমালাই নেই। তারা শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে গলা কাটা ফি নিচ্ছে। এটার ব্যাপারে একটা নীতিমালা করতে হবে।

সর্বশেষ খবর