বৃহস্পতিবার, ৩ সেপ্টেম্বর, ২০২০ ০০:০০ টা
নেত্রকোনা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক

নিম্নমানের বিটুমিন সংস্কার কাজ বন্ধ

নেত্রকোনা প্রতিনিধি

নিম্নমানের বিটুমিন সংস্কার কাজ বন্ধ

নিম্নমানের বিটুমিন ব্যবহার করায় সংস্কার কাজ বন্ধ নেত্রকোনা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের -বাংলাদেশ প্রতিদিন

নিম্নমানের বিটুমিন ব্যবহারের অভিযোগে নেত্রকোনা সড়ক ও জনপথ বিভাগের অধীন নেত্রকোনা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের ১৯ কিলোমিটার সংস্কার কাজ বন্ধ আছে। যে গ্রেডের বিটুমিন ব্যবহারের কথা তা ব্যবহার না করে নিম্নমানের বিটুমিন ব্যবহারের অভিযোগ ওঠার পর প্রায়  দুই মাস ধরে কাজটি বন্ধ আছে বলে জানিয়েছেন এলাকাবাসী। এ ব্যাপারে নেত্রকোনা পরিবহন মালিক সমিতি ও নেত্রকোনা মোটরযান শ্রমিক ফেডারেশনের নেতারা জানিয়েছেন, দীর্ঘদিন ধরে নেত্রকোনা-ময়মনসিংহ-ঢাকা মহাসড়কে যান চলাচলে চরম দুর্ভোগে পড়েছেন সাধারণ মানুষ। এ বিষয়ে তারা সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের দৃষ্টি আকর্ষণের দাবি জানিয়েছেন। তবে নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহারের কথা অস্বীকার করেছেন নেত্রকোনা সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. হামিদুল ইসলাম।

জানা গেছে, নেত্রকোনা সড়ক ও জনপথ বিভাগের অধীনে ২০১৮ সালে জেলার শ্যামগঞ্জ থেকে কান্দুলিয়া পর্যন্ত ১০৮ কোটি টাকা ব্যয়ে ১৯ কিলোমিটার ওভারলে সিলকোট কার্পেটিংয়ের কার্যাদেশ পায় ঢাকার তানভীর কনস্ট্রাকশন নামের একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। কার্যাদেশ পাওয়ার পর প্রতিষ্ঠানটি প্রকল্পের কাজ শুরু করতে দীর্ঘ সময় ক্ষেপণ করে। প্রকল্পের কাজে পেট্রোবাংলার বিটুমিন ব্যবহারের কথা থাকলেও সংশ্লিষ্ট ঠিকাদার নি¤œমানের বিটুমিন দিয়ে ওভারলে সিলকোর্টের কাজ করে। সড়কে ৬০ মিলি ওভারলে থিকনেসের কথা থাকলেও স্থানভেদে ৪৫ থেকে ৫০ মিলি পর্যন্ত ওভারলে কার্পেটিং করা হচ্ছে। এ ছাড়া বেস্ট অব ওয়ানে (পাথরের মেকাডম) ৭০ ভাগ পাথরের সঙ্গে ৩০ ভাগ বালি সংমিশ্রণের নির্দেশনা থাকলেও প্রকল্পের কাজে প্রায় ৬০ ভাগ বালির সঙ্গে ৪০ ভাগ পাথর মিশ্রণের অভিযোগ উঠেছে। এমনকি সড়কের প্রাইমকোড করে দীর্ঘদিন ফেলে রাখায় অতিরিক্ত যানবাহন চলাচল এবং বৃষ্টিপাতে ওই প্রাইমকোড নষ্ট হয়ে যায়। পরবর্তী সময়ে নষ্ট হওয়া স্থানে প্রাইমকোড রিপিয়ার ও বিটুমিন ছিটিয়ে টেককোড না করেই ওভারলে কার্পেটিংয়ের কাজ চালানো হয়। গুরুত্বপূর্ণ মহাসড়কটি সংস্কারে নিম্নমানের কাজ করায় সড়কটির স্থায়িত্ব নিয়ে এলাকাবাসীর মধ্যে হতাশার সৃষ্টি হয়েছে। প্রকল্পের তদারকির দায়িত্বে থাকা নেত্রকোনা সড়ক ও জনপথ বিভাগের উপসহকারী প্রকৌশলী মো. আল আমিন বলেন, প্রকল্পের ওভারলে কাজে ভালোমানের বিটুমিন ব্যবহার করা হচ্ছে। নিয়ম অনুযায়ী প্রকল্পের কাজ চলছে। একই বিভাগের প্রকল্পের তদারকির দায়িত্বে থাকা উপবিভাগীয় প্রকৌশলী মো. মাইদুল ইসলাম নিম্নমানের কাজের অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, প্রকল্প কাজে ব্যবহৃত বিটুমিন নিম্নমানের নয়।

নেত্রকোনা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের সংস্কার কাজে নিয়োজিত তানভীর কনস্ট্রাকশনের স্থানীয় প্রকল্প ব্যবস্থাপক সাখাওয়াত হোসেন অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, এই প্রকল্পে উন্নত মানের প্রযুক্তি ও মেশিন ব্যবহার করা হচ্ছে। ভালো মানের পাথর ও বিটুমিন দিয়ে চলছে সংস্কার কাজ। সংশ্লিষ্ট বিভাগের লোকজন নিয়মিত তদারকিতে রয়েছেন। এই কাজে অনিয়ম করার কোনো সুযোগ নেই।

নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহারের অভিযোগে কাজ বন্ধ আছে এমন অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে নেত্রকোনা জেলা সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. হামিদুল ইসলাম বলেন, ‘সড়ক বিভাগের উপবিভাগীয় ও সহকারী প্রকৌশলীসহ লোকজন এই মহাসড়কে নিয়মিত কাজ তদারক করছেন। নির্মাণসামগ্রী নিম্নমানের কি মানসম্মত তা আমার-আপনার জানার বিষয় নয়। বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের বিশেষজ্ঞরা এটি পরীক্ষা করে থাকেন। পাথর না পাওয়ার কারণে কাজ বন্ধ আছে। সংস্কার কাজে অনিয়মের কোনো সুযোগ নেই।’

সর্বশেষ খবর