শিরোনাম
রবিবার, ৬ সেপ্টেম্বর, ২০২০ ০০:০০ টা

দুই সন্তান হারিয়ে বাকরুদ্ধ নুরুদ্দিন

থামছে না শিশু জুবায়েরের মায়ের কান্না

নিজস্ব প্রতিবেদক

আগুনে দগ্ধ হয়ে মৃতদের বাড়িতে চলছে শোকের মাতম।  নারায়ণগঞ্জ প্রেস ক্লাবের পুরনো কর্মচারী নুরুদ্দিনের দুই ছেলে সাব্বির ও জুবায়েরও মারা যায় এ ঘটনায়। সাব্বির নারায়ণগঞ্জ কলেজে অনার্সে, জুবায়ের নারায়ণগঞ্জ তোলারাম বিশ্ববিদ্যালয় কলেজে এইচএসসি সেকেন্ড ইয়ারে পড়ত। দুই সন্তানকে হারিয়ে বাকরুদ্ধ হয়ে পড়েছেন নুরুদ্দিন। অন্যদিকে সাত বছরের শিশু জুবায়েরের মায়ের কান্না থামানো যাচ্ছে না। শুক্রবার রাতে ‘মা, টিভি বন্ধ করো না’ বলে বাসা থেকে বেরিয়ে যায় জুবায়ের। সাত বছরের শিশুটি বাবার সঙ্গে বাড়ির কাছের মসজিদে যাবে নামাজ আদায়ে। ফিরে এসে আবার বসে যাবে টিভির সামনে। তাই টিভি বন্ধ করেননি মা। মিনিট বিশেক পরই মা জানতে পারেন সেই হৃদয়বিদারী খবর, তার নাড়িছেঁড়া বুকের মানিক আর টিভি দেখতে আসবে না। একমাত্র সন্তান কখনোই আর ফিরবে না বাসায়। বিস্ফোরণের পর জুবায়েরের মা রাহিমা খাতুন জানতে পারেন, তার ছেলে যে মসজিদে নামাজ আদায় করতে গেছে, সেখানে আগুন লেগেছে। পাগলের মতো মসজিদের দিকে ছুটে যান। গিয়ে দেখেন, মসজিদ বিধ্বস্ত। সেখানে লুটিয়ে পড়েছে জুবায়ের। ঘটনাস্থলে গিয়ে মা রাহিমা জানতে পারেন, তাঁর ছেলে আর স্বামীকে নারায়ণগঞ্জের ভিক্টোরিয়া হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। সেখানে গিয়ে জানতে পারেন, এই হাসপাতাল থেকে তাঁদের নিয়ে যাওয়া হয়েছে ঢাকায়। ভর্তি করা হয়েছে শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে। রাত ১০টার পর রাহিমা আসেন ঢাকায়। তখন আগুনে পুড়ে যাওয়া আদরের সন্তান জুবায়ের আর স্বামীকে দেখতে পান। ছেলে জুবায়েরের সঙ্গে কথা বলেন মা। মায়ের দেওয়া এক ঢোক পানি পান করে জুবায়ের। এরপর রাত ১টার দিকে মারা যায়। জুবায়েরের বাবা জুলহাস মৃত্যুর সঙ্গে লড়ছেন। জুবায়ের মা-বাবার সঙ্গে নারায়ণগঞ্জে থাকত। তার বাবা জুলহাস ফরাজি নারায়ণগঞ্জে পোশাক কারখানায় চাকরি করতেন। একমাত্র সন্তানের লাশ নেওয়ার জন্য মা শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটের সামনে বসে আছেন। রাহিমা বলেন, ‘আমার বুকের ধন আমাকে ছেড়ে কোথায় চলে গেল? আমার সোনার সংসার তছনছ হয়ে গেল।’ জুবায়েরের মায়ের মতই এ ঘটনায় মারা যাওয়া ১৬ জনের পরিবারেই চলছে শোকের মাতম। শনিবার তল্লা এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, পথে-পথে, মহল্লার অলিগলিতে কাঁদছে মানুষ।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর