কক্সবাজারের শরণার্থী ক্যাম্প থেকে রোহিঙ্গাদের একটি প্রতিনিধি দল নোয়াখালীর ভাসানচরে আশ্রয়ণ প্রকল্প পরিদর্শনে গেছে। গতকাল ভোরে দুটি বাসে করে সেনাবাহিনীর তত্ত্বাবধানে রোহিঙ্গা প্রতিনিধি দলটি উখিয়ার ট্রানজিট ক্যাম্প থেকে চট্টগ্রামের পথে যাত্রা শুরু করে। সেখান থেকে বাংলাদেশ নৌবাহিনীর তত্ত্বাবধানে জলযানে করে তারা যাত্রা শুরু করেন ভাসানচরের উদ্দেশে। বিকালে তারা ভাসানচরে পৌঁছান। প্রতিনিধি দলে দুজন নারী সদস্যও রয়েছেন। ভাসানচরে কী ধরনের সুযোগ-সুবিধা গড়ে তোলা হয়েছে এবং দ্বীপটি বসবাসের জন্য কেমন, তা নিজেদের চোখে দেখবেন প্রতিনিধি দলটির রোহিঙ্গা নেতারা। বিকালে প্রতিনিধি দলটি ভাসানচরে পৌঁছালে ভাসানচর রোহিঙ্গা ক্যাম্পের পুনর্বাসন প্রকল্পের পরিচালক কমোডোর আবদুল্লাহ আল মামুন চৌধুরী স্বাগত বক্তব্য রাখেন। এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন নোয়াখালী হাতিয়ার সহকারী পুলিশ সুপার গোলাম ফারুক ও যুগ্ম সচিব নাঈম চৌধুরী। অতিরিক্ত শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার মো. শামসুদ্দোজা জানান, প্রতিটি ক্যাম্প থেকে নির্বাচিত প্রায় ৪০ জন রোহিঙ্গা নেতা রয়েছেন প্রতিনিধি দলে। আগামী ৮ সেপ্টেম্বর ভাসানচর থেকে তাদের কক্সবাজার শরণার্থী ক্যাম্পে ফিরে আসার কথা রয়েছে। কক্সবাজারের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ কামাল হোসেন জানান, ভাসানচর সম্পর্কে রোহিঙ্গাদের ধারণা দিতে এ ‘গো অ্যান্ড সি’ ভিজিট। সফরকারী রোহিঙ্গা প্রতিনিধি দলটি ভাসানচরে থাকা রোহিঙ্গাদের সঙ্গেও কথা বলবেন এবং তাদের জীবনমান পর্যবেক্ষণ করবেন। ভাসানচর থেকে ফিরে কক্সবাজারের ক্যাম্পে আশ্রয়ে থাকা রোহিঙ্গাদের ভাসানচর আশ্রয়ণ প্রকল্প সম্পর্কে ধারণা দেবেন প্রতিনিধি দলের রোহিঙ্গা নেতারা। কক্সবাজারের শরণার্থী শিবির ও তার বাইরে অবস্থান নিয়ে থাকা প্রায় ১১ লাখ রোহিঙ্গাকে নিয়ে নানা সামাজিক সমস্যা সৃষ্টির প্রেক্ষাপটে তাদের একটি অংশকে হাতিয়ার কাছে মেঘনা মোহনার বিরান দ্বীপ ভাসান চরে স্থানান্তরের পরিকল্পনা নিয়েছে সরকার। সরকারের নিজস্ব অর্থায়নে ২৩১২ কোটি টাকা ব্যয়ে মোটামুটি ১০ হাজার একর আয়তনের ওই চরে ১২০টি গুচ্ছগ্রামের অবকাঠামো তৈরি করে এক লাখের বেশি মানুষের বসবাসের ব্যবস্থা করা হয়েছে। মালয়েশিয়া যেতে ব্যর্থ হয়ে ফিরে আসা তিন শতাধিক রোহিঙ্গাকে সমুদ্র থেকে উদ্ধার করে ইতিমধ্যে ভাসানচরে নিয়ে আশ্রয় দিয়েছে সরকার।
