কুমিল্লার গোমতী নদী দিয়ে দাউদকান্দি থেকে ভারতের সোনামুড়া বন্দরে পরীক্ষামূলকভাবে পৌঁছেছে সিমেন্টবাহী একটি কার্গো ট্রলার। গতকাল বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে একটি ট্রলার ১০ টন সিমেন্ট নিয়ে ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যের সোনামুড়া বন্দরে পৌঁছায়। এর আগে কুমিল্লার বিবির বাজার স্থলবন্দর দিয়ে ভারতের সোনামুড়া যাওয়ার পথে ভারতীয় হাইকমিশনার রিভা গাঙ্গুলী দাশ সাংবাদিকদের বলেন, ‘২০ মে ঢাকায় দুই দেশের মধ্যে নতুন দুটি নৌপথের চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছিল। এর একটি রাজশাহী থেকে ভারতের দুলিহান এবং অপরটি কুমিল্লার দাউদকান্দি থেকে ত্রিপুরা সোনামুড়া। ওই চুক্তি অনুসারে আজ প্রথম পরীক্ষামূলকভাবে সিমেন্ট রপ্তানি শুরু করা হলো। এটি একটি ঐতিহাসিক দিন। আপনারা জানেন সাধারণত দুই দেশের মধ্যেই ট্রাকযোগে পণ্য আমদানি-রপ্তানি করা হয়। এই নৌপথ চালুর কারণে দুই দেশের মধ্যে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক আরও বৃদ্ধি পাবে, আমদানি-রপ্তানির ক্ষেত্রে উন্মোচিত হবে নতুন দিগন্ত।’ তিনি জানান, নৌপথের নাব্য সংকটসহ আরও যেসব সমস্যা চিহ্নিত হবে সেগুলো পর্যায়ক্রমে সমাধান করা হবে। এর ফলে দুই দেশের মধ্যে সৌহার্দ্যপূর্ণ সম্পর্ক তৈরি হবে বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন। কুমিল্লার বিবির বাজার গোমতীর অংশে বিআইডব্লিউটিএর চেয়ারম্যান গোলাম সাদেক বেলুন উড়িয়ে পরীক্ষামূলক নৌ চলাচল উদ্বোধন করেন।
এ সময় কুমিল্লার জেলা প্রশাসক মো. আবুল ফজল মীর, কাস্টমস অফিসার সুভাস চন্দ্র মজুমদার, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আজিমুল আহসান, তানভীর সালেহীন ইমন, কাস্টমস কর্মকর্তা শফিকুল ইসলামসহ অন্যরা উপস্থিত ছিলেন।
এদিকে সিমেন্টবাহী কার্গোটি গোমতী নদীর বাংলাদেশের বিভিন্ন অংশে আটকা পড়ে। পরে এটিকে বিশেষ প্রক্রিয়ায় ভারতের সোনামুড়ায় নেওয়া হয়।বিআইডব্লিউটিএর চেয়ারম্যান গোলাম সাদেক জানান, সমস্যা, সংকট ও প্রতিকূলতা চিহ্নিত করতে পরীক্ষামূলকভাবে গোমতী নদী দিয়ে নৌ-চলাচল শুরু করা হয়। পরীক্ষামূলকভাবে ১০ টন সিমেন্ট নৌপথে রপ্তানি করতে গিয়ে গোমতী নদীর অনেক সমস্যা ও সংকট চিহ্নিত করতে পেরেছি। সমস্যাগুলোর মধ্যে সবচেয়ে বড় সমস্যা হচ্ছে নদীতে নাব্য সংকট এবং ব্রিজের উচ্চতা। নদীর নাব্য সংকট রোধে ড্রেজিংয়ের বিষয়ে একটি প্রকল্প নেওয়া হয়েছে। ড্রেজিংয়ের অনুমোদন পেলে নাব্য বৃদ্ধি করা হবে, যেন আরও বেশি মালামাল বহন করা যায়।
তিনি জানান, কুমিল্লার এই গোমতী নদী দিয়ে নৌপথের বিষয়ে ভারত সরকার খুব বেশি আগ্রহী। ভারত-বাংলাদেশের মধ্যে বাণিজ্যের জন্য এই বিবির বাজার স্থলবন্দরের সঙ্গে যদি নৌপথটি চালু করা যায় তাহলে সীমান্ত-বাণিজ্য আরও সহায়ক ভূমিকা রাখবে।