বুধবার, ৯ সেপ্টেম্বর, ২০২০ ০০:০০ টা
আইসিসিতে দুই সেনার স্বীকারোক্তি

রোহিঙ্গাদের দেখামাত্র গুলির নির্দেশ ছিল মিয়ানমারের

নিজস্ব প্রতিবেদক

২০১৭ সালে রাখাইনে রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে মিয়ানমার সামরিক বাহিনীর ক্লিয়ারেন্স অপারেশনের সময়ে সৈনিকদের প্রতি নির্দেশ ছিল, ‘যাকে দেখবে তাকে গুলি করবে’। আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতে (আইসিসি) রোহিঙ্গাদের ওপর গণহত্যা ও নির্যাতন চালানোর বিষয়ে স্বীকারোক্তি দেওয়ার সময় মিয়ানমারের দুজন সৈনিক একথা বলেন। আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা ফরটিফাই রাইটস গতকাল এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানায়।

আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতে স্বীকারোক্তি দেওয়া দুই সৈনিক হলো মিও উইন তুন (৩৩) এবং জ নায়েং তুন (৩০)। আদালতে তারা ২০১৭ সালে মিয়ানমার সামরিক বাহিনীর ক্লিয়ারেন্স অপারেশনের সময়ে নারী, শিশুসহ নিরীহ মানুষকে হত্যা, গণকবরে মাটিচাপা দেওয়া, ধর্ষণসহ অন্যান্য অপরাধের কথা স্বীকার করেন। বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, এই স্বীকারোক্তির ফলে ধারণা করা হচ্ছে, ওই দুই সৈনিক কোর্টের কাছে নিজেদের দোষ স্বীকার করে রাজসাক্ষী হিসেবে ভবিষ্যতে মামলায় কাজ করবেন। আইসিসির বিভিন্ন ধরনের সাক্ষী সুরক্ষার (উইটনেস প্রটেকশন) নিয়ম আছে এবং তার অধীনে এ ধরনের সাক্ষীদের সব ধরনের সুরক্ষা দেওয়া হয়। ওই সৈনিকরা ১৯ জন ব্যক্তির নাম উল্লেখ করেছেন, যারা সরাসরি এ ধরনের নৃশংসতা করেছেন। এ ছাড়া ছয়জন জ্যেষ্ঠ সামরিক কর্মকর্তা এসবের নির্দেশ দিয়েছেন বলে জানিয়েছেন তারা। উল্লেখ্য, আইসিসিতে রোহিঙ্গা গণহত্যা বিষয়ক অপরাধের তদন্ত প্রক্রিয়া চলছে।

ভয়াবহ নির্যাতনের শিকার রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠী বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, স্বীকারোক্তি অনুযায়ী শুধু এই দুজন কমপক্ষে ১৮০ জন রোহিঙ্গা হত্যাকান্ডের সঙ্গে জড়িত। মিও উইন তুন স্বীকারোক্তিতে বলেন, ‘কর্নেল থান থাকি রোহিঙ্গাদের সমূলে হত্যার নির্দেশ দেন। এরপর সৈনিকরা মুসলিমদের কপালে গুলি করে এবং লাথি মেরে কবরে ফেলে দেয়।’ বুথিডং অঞ্চলে কয়েকটি গ্রাম ধ্বংস করা, ৩০ জন রোহিঙ্গাকে হত্যা করার সঙ্গে সরাসরি জড়িত থাকা, এ ছাড়া আরও ৬০ থেকে ৭০ জন রোহিঙ্গা হত্যার সঙ্গে পরোক্ষভাবে জড়িত থাকার বিষয়েও মিও স্বীকারোক্তি দেয়। জ নায়েং তুন বলেন, ‘মংদু টাউনশিপে ২০টি গ্রাম ধ্বংস এবং অন্তত ৮০ জনকে হত্যার সঙ্গে জড়িত ছিলাম। এ ছাড়া, সার্জেন্ট পায়ে ফোয়ে অং এবং কিয়েত ইয়ু পিন তিনজন রোহিঙ্গা নারীকে ধর্ষণ করেছেন, যার সাক্ষী আমি।’

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর