শুক্রবার, ১১ সেপ্টেম্বর, ২০২০ ০০:০০ টা

খাতুনগঞ্জে অস্থির ভোগ্যপণ্যের বাজার

সাইদুল ইসলাম, চট্টগ্রাম

চট্টগ্রামের খাতুনগঞ্জে অস্থির হয়ে ওঠেছে নিত্যপ্রয়োজনীয় ভোগ্যপণ্যের বাজার। চাল, তেল, পিঁয়াজ, আদা, রসুন, চিনি, মসুর ডালসহ নিত্যপণ্যের দাম প্রতিনিয়ত বেড়েই চলেছে। গত এক মাসে প্রতিটি পণ্য কেজিতে ১০ থেকে ৩০ টাকা পর্যন্ত বৃদ্ধি পেয়েছে। ভোগ্যপণ্যের দাম বৃদ্ধি পাওয়ায় সাধারণ ও খেটে খাওয়া মানুষের জীবন ওষ্ঠাগত হতে চলেছে। অভিযোগ আছে, ব্যবসায়ীরা সরবরাহ কম, চাহিদা বৃদ্ধি, বাজারে কৃত্রিম সংকট তৈরিসহ নানা কারণ দেখিয়ে পণ্যের দাম বৃদ্ধি করছেন। দেশের ঐতিহ্যবাহী পাইকারি বাজার খাতুনগঞ্জকেন্দ্রিক একটি চক্র পরিকল্পিতভাবে দাম বৃদ্ধি করে থাকে।  খাতুনগঞ্জের মেসার্স বাঁচা মিয়া বাণিজ্যালয়ের ম্যানেজার মো. আইয়ুব বলেন, ‘দুই সপ্তাহ আগেও খাতুনগঞ্জ-চাক্তাই এলাকায় যে পরিমাণ পিঁয়াজ আসত বর্তমানে তা অর্ধেকে নেমে এসেছে। কিন্তু চাহিদা বেড়ে যাওয়ায় স্বাভাবিকভাবেই দামও বেড়েছে।’খাতুনগঞ্জের ব্যবসায়ী নেতা জাহাঙ্গীর আলম বলেন, বন্যা ও সরবরাহ সংকটের কারণে বিভিন্ন ভোগ্যপণ্যের দাম বেড়েছে। সরবরাহ বাড়লে দাম আবারও কমে যাবে। এর সঙ্গে আছে করোনা মহামারী। তবে আন্তর্জাতিক বাজারেও কিছু পণ্যের দাম বেড়েছে।’ কনজুমার অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ক্যাব) ভাইস প্রেসিডেন্ট এস এম নাজের হোসাইন বলেন, ‘বাজারে অভিযান চালালেই ব্যবসায়ীরা নানা অজুহাত দেখিয়ে বিক্রি বন্ধ করে ধর্মঘট ডাকে। এটি অন্যায়। আমরা চাই, মনিটরিংয়ের মাধ্যমে ভোগ্যপণ্যের বাজার স্থিতিশীল থাকুক।’ খাতুনগঞ্জে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, খুচরা বাজারে দেশীয় প্রতি কেজি পিঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৪৮ থেকে ৬৫ টাকা এবং ভারতীয় পিঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৪৮ থেকে ৫২ টাকা। অথচ গত এক সপ্তাহ আগেও ভারতীয় ৩৫ থেকে ৪০ টাকা এবং দেশি পিঁয়াজ ৪০ থেকে ৪৫ টাকা কেজি দরে বিক্রি হয়েছিল। গত ৮ মাস আগেও দেশের বাজারে পিঁয়াজের দাম রেকর্ড পরিমাণ বেড়ে যায়। ভারত থেকে বিশে^র বিভিন্ন দেশে পিঁয়াজ রপ্তানি নিষিদ্ধ করায় বাংলাদেশের পিঁয়াজের দাম ক্রমান্বয়ে বাড়তে বাড়তে ৩০০ থেকে ৩৫০ টাকায় পর্যন্ত বিক্রি হয়। এদিকে চট্টগ্রামে চালের সবচেয়ে বড় পাইকারি বাজার চাক্তাই-খাতুনগঞ্জ ও পাহাড়তলী থেকে মহানগর ও ১৫ উপজেলায় চাল সরবরাহ করা হয়। চালপট্টিতে গরিবের মোটা সিদ্ধ চালের দাম বস্তাপ্রতি (৫০ কেজি) মানভেদে  প্রায় ৩০০ টাকা বেড়ে গেছে। প্রতি বস্তা ১৯৫০ থেকে ২১০০ টাকার চাল এখন ২৩০০ টাকায়। মিনিকেট সিদ্ধ ২২০০ টাকা থেকে বেড়ে বিক্রি হচ্ছে ২৩৫০ থেকে ২৪৫০ টাকা, পারি সিদ্ধ প্রতি বস্তায় ২৫০ টাকা বেড়ে বিক্রি হচ্ছে ২৪০০ টাকা, পুরনো পাইজাম ২০০ টাকা বেড়ে বিক্রি হচ্ছে ২৮০০ থেকে ২৯০০ টাকা, ২৬৫০ টাকার দিনাজপুরী পাইজাম বিক্রি হচ্ছে ২৭০০ টাকা, ৪৫০০ টাকার চিনিগুড়া চাল বিক্রি হচ্ছে ৪৭৫০ টাকায়। তাছাড়া প্রতি মণ (৩৭.৩২ কেজি) চিনি বিক্রি হচ্ছে ২১৫০ টাকা। এক সপ্তাহ আগেও এর মূল্য ছিল ২০০০ থেকে ২০২০ টাকা পর্যন্ত। প্রতি মণ পাম অয়েল তেল বিক্রি হচ্ছে ২৯৫০ টাকা। এক মাস আগে এর মূল্য ছিল ২৮৫০ টাকা। প্রতি কেজি মিয়ানমারের আদা বিক্রি হচ্ছে ৯০ থেকে ৯৫ টাকা। এক সপ্তাহ আগেও এর মূল্য ছিল ৮০ টাকা। চীনা রসুন প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ৬০ থেকে ৬৫ টাকা। এক সপ্তাহ আগেও এর মূল্য ছিল ৫০ টাকা। আমদানি করা প্রতি কেজি মসুর ডাল (মানভেদে) বিক্রি হচ্ছে ৫৫ থেকে ৬৫ টাকা। এক সপ্তাহ আগেও বিক্রি হয়েছিল ৪৫ থেকে ৫৫ টাকা। দেশীয় মসুর ডাল এখন বিক্রি হচ্ছে ৫৫ থেকে ৬৫ টাকা। এর আগে বিক্রি হয়েছিল ৪৫ থেকে ৫৫ টাকা। এ ছাড়া অন্যান্য ভোগ্যপণ্যের দামও ঊর্ধ্বমুখী।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর