রবিবার, ১৩ সেপ্টেম্বর, ২০২০ ০০:০০ টা

নারায়ণগঞ্জে ১১ লাখ অবৈধ সংযোগ

রোমান চৌধুরী সুমন, নারায়ণগঞ্জ

সব ওপেন সিক্রেট। কারও কিছু বলার নেই। ১ লাখ নয়, ২ লাখ নয়, নারায়ণগঞ্জের পাঁচ উপজেলায় রয়েছে তিতাসের পাইপ দ্বারা পরিচালিত প্রায় ১১ লাখ গ্যাসের অবৈধ সংযোগ। একেকটি উপজেলার কয়েকটি গ্রাম আবার কোনো পাড়া বা মহল্লায় কোনো রাখঢাক ছাড়াই ১০ বছর ধরে চলছে এ অবৈধ সংযোগ। সংযোগ দেওয়ার সময় ব্যবহার করা হয় অনেকটা হুবহু নকল জিপ গাড়ি। সামনে লেখা থাকে ‘তিতাস কর্তৃপক্ষ’। দেখে বোঝার উপায় নেই সংযোগের কাজ করছে কোন অবৈধ কর্তৃপক্ষ। এক অনুসন্ধানে জানা গেছে, অবৈধ এ সংযোগের সঙ্গে যুক্ত রয়েছেন বিভিন্ন উপজেলার স্থানীয় সরকারি দলের ওয়ার্ড নেতা, জনপ্রতিনিধি ও ইউপি সদস্য থেকে পঞ্চায়েত কমিটির সদস্য। এর মধ্যে আছেন সাবেক এক এমপি, উপজেলা চেয়ারম্যান ও বেশ কয়েকজন ইউপি চেয়ারম্যান এবং সদস্য। মূলত বিভিন্ন ইউনিয়নে কয়েকজন ইউপি সদস্য সরাসারি এ কান্ডে জড়িত। কিন্তু পুরো কাজ সম্পন্ন করতে নেপথ্যে থেকে তিতাস গ্যাস অফিসের বেশ কয়েকজন শ্রমিকনেতা কলকাঠি নাড়ছেন। জানা গেছে, প্রকাশ্যে এ রকম দুর্নীতি করে ও অবৈধ গ্যাস সংযোগ দিয়ে বুক ফুলিয়ে চলাফেরা করছেন নারায়ণগঞ্জ তিতাস অফিসের শ্রমিকনেতা কাজিম, দিলীপ ও বাদল। মূলত নারায়ণগঞ্জ তিতাসের গ্যাস সংযোগ নিতে হলে তাদের লাগেই। তাদের ছাড়া গ্যাস সংযোগের জন্য দেওয়া আবেদন ফাইল ঝুলে থাকে। তাদের শরণাপন্ন হতে পারলেই কেবল সব মুশকিল আসান। বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে, এ তিনজনকে আইনের আওতায় আনলেই বের হয়ে আসবে জেলায় ১১ লাখ অবৈধ সংযোগের ইতিহাস। কিন্তু অভিযোগ রয়েছে, সরকারি দলের অনেক প্রভাবশালীর হাত রয়েছে তাদের মাথার ওপর। সবাই সবকিছু জানলেও এদের বিরুদ্ধে টুঁশব্দ করার সাহস পায় না কেউ। স্থানীয়াদের ধারণা, বন্দরে শ্রমিকনেতা কাজিমের অগণিত সম্পদের নেপথ্যে এ অবৈধ গ্যাস সংযোগ। সরেজমিন খবর নিয়ে জানা গেছে, নারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজারে বর্তমানে প্রায় ৫ লাখ, রূপগঞ্জে ১ লাখ, সোনারগাঁয় ২ লাখ ও বন্দর উপজেলায় প্রায় ২ লাখ অবৈধ গ্যাস সংযোগ রয়েছে। এর মধ্যে শহরের নদীর ওপার বন্দর উপজেলায় মাকসুদ নামে এক জনপ্রতিনিধির মাধ্যমে উপজেলায় প্রায় ছয়টি গ্রামে চলছে ২ লাখ গ্যাসের অবৈধ সংযোগ।

সর্বশেষ খবর