রবিবার, ১৩ সেপ্টেম্বর, ২০২০ ০০:০০ টা

অবৈধ সংযোগ থেকে প্রতি মাসে লাখ লাখ টাকা বিল আদায়

খায়রুল ইসলাম, গাজীপুর

গাজীপুরে বৈধভাবে গ্যাসের সংযোগ না পাওয়ায় অবৈধ সংযোগ ক্রমেই বাড়ছে। আর অবৈধ এ সংযোগ থেকে প্রতি মাসে লাখ লাখ টাকা বিল আদায় করা হচ্ছে। অবৈধ গ্যাস সংযোগের কারণে ঝুঁকিতে রয়েছে অনেক আবাসিক এলাকা। এসব অবৈধ কাজের সঙ্গে জড়িত কিছু অসাধু কর্মকর্তা-কর্মচারী, ঠিকাদার ও দালাল। ফলে প্রতি মাসেই ১/২ হাজার অবৈধ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করার পরও অদৃশ্য শক্তির ছোঁয়ায় রাতের আঁধারে আবারও লাইন চালু হয়ে যাচ্ছে। গাজীপুর সিটি করপোরেশনের নাওজোর, নলজানিসহ বিভিন্ন এলাকার অবৈধ গ্যাস ব্যবহারকারীর (নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক) সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, তারা বাড়ি নির্মাণ করে গ্যাসের জন্য ভাড়া দিতে পারছিলেন না। পরে অবৈধভাবে গ্যাস সংযোগ নেন। তারা জানান, অবৈধ গ্যাস সংযোগ টানার জন্য প্রতিটি সংযোগের জন্য প্রথমে নেওয়া হয়েছে ৩০ থেকে ৪০ হাজার টাকা। আর প্রতি মাসে ‘বিল’ তোলা হচ্ছে ১ হাজার টাকা করে। অ্যাকাউন্ট নম্বর পাওয়ার আগ পর্যন্ত টাকা নেওয়া হবে- তাদের এমন আশ^াস দেওয়া হয়। এসব টাকা নেওয়ার সময় কোনো রসিদ দেওয়া হয় না। তারা আরও জানান, এলাকার প্রভাবশালী ব্যক্তির নেতৃত্বে ওই এলাকার ঠিকাদারের সহযোগিতায় যারা গ্যাস সংযোগ নিতে আগ্রহী তাদের লোক মারফত যোগাযোগ করা হয়। আগ্রহীদের সংযোগের আবেদন ফরম পূরণ করানো হয়। পরবর্তীতে সংযোগ স্থায়ী করে দেওয়ার আশ^াস দিয়ে তাদের থেকে টাকা আদায় করা হয়। পরে রাতের আঁধারে অবৈধ সংযোগ দেওয়া হয়। লোকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, অবৈধভাবে গ্যাস সংযোগ দেওয়ার সঙ্গে প্রভাবশালী একটি চক্র জড়িত। চক্রটির বেশির ভাগই ক্ষমতাসীন দলের কর্মী-সমর্থক ও এলাকার প্রভাবশালী। তারা টাকা নিয়ে এসব সংযোগ দিয়েছেন। তিতাস গ্যাস ট্রান্সমিশন অ্যান্ড ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেডের গাজীপুর জোনাল অফিস সূত্রে জানা গেছে, এ অফিসের আওতাধীন গাজীপুরের শহীদ নেয়ামত সড়ক কলাবাগান, ইটাহাটা কলাবাগান রোড, বাঘের বাজার, জুগিতলা, রওশন সড়ক, রাজাবাড়ী বাজার, মাওনা, জয়দেবপুর বশির সড়ক, মণিপুর বাজার, শ্রীপুরের মাধখোলা, রাজেন্দ্রপুরের ফাওগান রোড, শ্রীপুরের আনসার রোড, ইটাহাটা মধ্যপাড়া, নেয়ামত সড়ক, শ্রীপুরের বেরাইদের চালা এলাকার ২১টি স্পটে অবৈধভাবে বিতরণকৃত গ্যাস সংযোগ রয়েছে। এ ২১টি স্পটে প্রায় ৫৭ কিলোমিটার লাইনে আনুমানিক সাড়ে ১৪ হাজার চুলা অবৈধভাবে পুনঃস্থাপিত হয়েছে। এসব এলাকার সংযোগগুলো আগে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনার মাধ্যমে বিচ্ছিন্ন করা হয়েছিল। তখন সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে পাইপ কেটে ফেলাসহ সংশ্লিষ্ট থানায় জিডি ও মামলা করা হয়েছিল। এর পরও এসব পয়েন্টে আবার গ্যাস সংযোগ দেওয়া হয়েছে।

সর্বশেষ খবর