বুধবার, ১৬ সেপ্টেম্বর, ২০২০ ০০:০০ টা
বুয়েট ছাত্র আবরার হত্যা

ছাত্রলীগের ২৫ জনের বিচার শুরু

আদালত প্রতিবেদক

আবরার ফাহাদ হত্যা মামলায় বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় (বুয়েট) ছাত্রলীগের বহিষ্কৃত ২৫ নেতা-কর্মীর বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেছে আদালত। পাশাপাশি আগামী ২০ সেপ্টেম্বর থেকে ১ অক্টোবর পর্যন্ত সাক্ষ্য গ্রহণ ও জেরার জন্য দিন ধার্য করা হয়েছে। গতকাল আসামিদের অব্যাহতি ও জামিনের আবেদন নাকচ করে ঢাকার এক নম্বর দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালের বিচারক আবু জাফর মো. কামরুজ্জামান এ আদেশ দেন।

এ বিষয়ে রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী আবু আবদুল্লাহ ভূঁইয়া সাংবাদিকদের জানান, অভিযোগ গঠনের আগে এ মামলার ২৫ আসামির মধ্যে কারাবন্দী ২২ জনকে আদালতে হাজির করা হয়। এ সময় অভিযোগ পড়ে শোনানো হয় তাদের। আদালত আসামিদের কাছে জানতে চায়, ‘আপনারা দোষী, না নির্দোষ?’ তখন আসামিরা সবাই নিজেদের নিরপরাধ দাবি করে আদালতের কাছে ন্যায়বিচার চান। এর আগে ১৫ মার্চ স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগ মামলাটি ঢাকার দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল-১-এ স্থানান্তর করে আদেশ জারি করে। নিয়ম অনুযায়ী দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে যে কোনো মামলা ৯০ কার্যদিবসের মধ্যে নিষ্পত্তি করার বাধ্যবাধকতা রয়েছে। ওই সময়ের মধ্যে নিষ্পত্তি করা না গেলে আরও ৪৫ দিন সময় নিতে পারে আদালত। মামলাসূত্রে জানা গেছে, বুয়েটের শেরেবাংলা হলের আবাসিক ছাত্র ও তড়িৎকৌশল বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী আবরারকে গত বছর ৬ অক্টোবর রাতে ছাত্রলীগের এক নেতার কক্ষে নিয়ে নির্যাতন চালিয়ে হত্যা করা হয়। পরদিন আবরারের বাবা ১৯ শিক্ষার্থীকে আসামি করে রাজধানীর চকবাজার থানায় মামলা করেন। পরে ঘটনা তদন্ত করে গোয়েন্দা পুলিশের পরিদর্শক ওয়াহিদুজ্জামান বুয়েট ছাত্রলীগের ২৫ জনের বিরুদ্ধে গত বছর ১৩ নভেম্বর ঢাকার মুখ্য মহানগর হাকিম আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন। এর আগে ৭ অক্টোবর ছাত্রলীগ থেকে তাদের স্থায়ী বহিষ্কার করা হয়।

এর মধ্যে কারাগারে থাকা আসামিরা হলেন বুয়েট ছাত্রলীগের বহিষ্কৃত সাধারণ সম্পাদক মেহেদী হাসান রাসেল, সহসভাপতি মুহতাসিম ফুয়াদ, সাংগঠনিক সম্পাদক মেহেদী হাসান রবিন, তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক অনীক সরকার, ক্রীড়া সম্পাদক মেফতাহুল ইসলাম জিয়ন, উপসমাজসেবা সম্পাদক ইফতি মোশাররফ সকাল, সদস্য মুনতাসির আল জেমি, মোজাহিদুর রহমান, খন্দকার তাবাখখারুল ইসলাম তানভির, ইসতিয়াক মুন্না, মিজানুর রহমান, শামসুল আরেফিন রাফাত, মনিরুজ্জামান মনির ও আকাশ হোসেন, উপ-আইন সম্পাদক অমিত সাহা, হোসেন মোহাম্মদ তোহা, মাজেদুর রহমান, শামীম বিল্লাহ ও মোয়াজ আবু হোরায়রা, এ এস এম নাজমুস সাদাত, এস এম মাহমুদ সেতু।

 

পলাতক বাকি তিন আসামি হলেন ইলেকট্রিক অ্যান্ড ইলেকট্রনিকস বিভাগের ১৬তম ব্যাচের ছাত্র মাহমুদুল জিসান, সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের ১৭তম ব্যাচের এহতেশামুল রাব্বি ওরফে তানিম ও কেমিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারং বিভাগের ১৬তম ব্যাচের মুজতবা রাফিদ।

অভিযোগপত্রে বলা হয়েছে, ৬ অক্টোবর রাত ১০টা থেকে রাত ২টা পর্যন্ত আবরারকে পেটানো হয়। ২টা ৫০ মিনিটের দিকে ডাক্তার তাকে দেখে মৃত ঘোষণা করেন। দীর্ঘ সময় ধরে পেটানো হয়েছে আবরারকে। হত্যায় সরাসরি যুক্ত ছিলেন ১১ জন। তারাই আবরারকে কয়েক দফায় মারধর করেন। বাকি ১৪ জন নানা পর্যায়ে বিভিন্নভাবে এ হত্যাকান্ডে জড়িত ছিলেন।

এর আগে ৬ অক্টোবর দিবাগত রাতে বুয়েটে শেরেবাংলা হল থেকে তড়িৎ ও ইলেকট্রনিকস প্রকৌশল বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী আবরার ফাহাদের লাশ উদ্ধার করা হয়। পরে জানা যায়, বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগ নেতা-কর্মীরা তাকে পিটিয়ে হত্যা করেছেন।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর