শুক্রবার, ১৮ সেপ্টেম্বর, ২০২০ ০০:০০ টা
সরকারি কর্মকর্তাদের প্রধানমন্ত্রী

সমালোচনায় কান না দিয়ে কাজ করুন আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে

নিজস্ব প্রতিবেদক

সমালোচনায় কান না দিয়ে কাজ করুন আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সরকারি কর্মকর্তাদের উদ্দেশে বলেছেন, আমি মনে করি আমরা সঠিক পথে আছি কিনা তা নিজের আত্মবিশ্বাসের ওপর নির্ভর করে। সবাই যখন কাজ করবেন, আত্মবিশ্বাস নিয়ে করবেন। কে কী বলল, কী লিখল, সেদিকে কান দিলে কাজ করতে পারবেন না। আপনার নিজের বিশ্বাস থাকতে হবে, নিজের ওপর আস্থা থাকতে হবে যে আপনি সঠিক কাজটি করছেন। যদি সে আস্থাটা থাকে, তবে সে কাজের ফল দেশবাসী পাবে। গতকাল গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে যুক্ত হয়ে সরকারের মন্ত্রণালয় ও বিভাগগুলোর বার্ষিক কর্মসম্পাদন চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী এসব কথা বলেন।

শেখ হাসিনা কভিড-১৯ মহামারী মোকাবিলায় স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় ‘যথেষ্ট দক্ষতার পরিচয়’ দিয়েছে উল্লেখ করে বলেন, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের অনেক সমালোচনা, অনেকে অনেক কিছু করে। কিন্তু আমি মনে করি, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় যথেষ্ট দক্ষতার পরিচয় দিয়েছে। সে সময় তৎক্ষণাৎ যে কাজগুলো করার দরকার ছিল, তা কিন্তু যথাযথভাবে করা হয়েছে বলেই কভিড-১৯-কে আমরা নিয়ন্ত্রণে রাখতে পেরেছি। তিনি বলেন, চিকিৎসক, নার্স ও স্বাস্থ্যকর্মীরা এ মহামারীর মধ্যেও জীবনের ঝুঁকি নিয়ে মানুষকে সেবা দিয়ে যাচ্ছেন, আর তা করতে গিয়ে অনেকের মৃত্যুও হয়েছে। এ বিষয়টি সবাইকে মাথায় রাখতে অনুরোধ করেন প্রধানমন্ত্রী। সমালোচকদের সমালোচনা করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমাদের দেশে একশ্রেণির লোক থাকে, সমালোচনা করাটাই তাদের অভ্যাস। পান থেকে চুন খসলেই অনেক কথা বলবে। কিন্তু নিজেরা কিছু করবে না। তিনি বলেন, আর আমি তো বেসরকারি টেলিভিশন অনেক দিয়েছি। তার পরে আছে বিদ্যুৎ। এখন ডিজিটাল বাংলাদেশ করে দিয়েছি। এরা একসময় সমালোচনা করেছিল, সেই ডিজিটাল বাংলাদেশেই আমাদের বিরুদ্ধে নানা অপপ্রচার তারা চালাতে থাকবে...।

শেখ হাসিনা বলেন, দফতরগুলোর সঙ্গে সরকারের বার্ষিক কর্মসম্পাদন চুক্তির সুফল শেষ পর্যন্ত সাধারণ মানুষের কাছেই যাবে। মানুষ এর শুভফলটা পাবে। আপনাদের দায়িত্ব হচ্ছে মানুষের পাশে থাকা। এটা আমাদের সবার দায়িত্ব। আমরা জনগণের ভোট নিয়ে এসেছি। আমরা ওয়াদাবদ্ধ মানুষের কাছে। তিনি বলেন, আপনারা যারা চাকরি করেন, আপনাদের সময় আমাদের থেকে বেশি। আপনারাও কিন্তু জনগণের কাছে ওয়াদাবদ্ধ যে জনসেবা করতে হবে। জনসেবা করাটাই হচ্ছে দায়িত্ব। প্রধানমন্ত্রী বলেন, সরকারের যে সম্পদ, জনগণই তার মালিক। সেই সম্পদের যথাযথ ব্যবহার নিশ্চিতের পাশাপাশি জনগণের দোরগোড়ায় সেবা পৌঁছে দিতে সংশ্লিষ্ট সবাইকে সচেষ্ট থাকতে হবে। তিনি বলেন, আমরা স্বচ্ছতা-জবাবদিহিতা নিশ্চিতে পদক্ষেপ নিয়েছিলাম। আমরা শুদ্ধাচার কর্মপরিকল্পনা নিয়েছিলাম। এখানে আমরা দুর্নীতিমুক্ত একটা প্রশাসনিক ব্যবস্থা গড়ে তুলতে চাই। প্রতিটি মন্ত্রণালয়ে আপনাদের শুদ্ধাচার বিষয়ে নিজস্ব একটা পরিকল্পনা নিতে হবে কীভাবে আপনারা কাজগুলো সম্পন্ন করবেন। আপনাদের সঙ্গে সঙ্গে তার নিচের স্তর পর্যন্ত এ পরিকল্পনা থাকতে হবে এবং তা যথাযথভাবে কার্যকর করতে হবে। যারা এটা কার্যকর করতে পারবেন, তারাই পুরস্কৃত হবেন। প্রধানমন্ত্রী বলেন, ১৯৭৫ সালের পর বাংলাদেশ একটা ইজ্জতহীন দেশে পরিণত হয়েছিল। সব জায়গায় ভিক্ষার ঝুলি নিয়ে চলত। যেটায় আমার খুব কষ্ট হতো। তিনি আশা প্রকাশ করে বলেন, আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে গত এক যুগে বাংলাদেশের যে অগ্রযাত্রা হয়েছে, তা অব্যাহত থাকবে। বার্ষিক কর্মসম্পাদন চুক্তির ‘সফল বাস্তবায়নের মাধ্যমে’ জাতির পিতার আজীবন স্বপ্নের ‘সোনার বাংলাদেশ’ গড়ে তুলতে হবে। অনুষ্ঠানে গণভবন থেকে উপস্থিত ছিলেন প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের মুখ্যসচিব আহমদ কায়কাউস, সচিব মো. তোফাজ্জল হোসেন মিয়া, প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব ইহসানুল করিম। অন্য প্রান্তে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কেন্দ্রে কৃষিমন্ত্রী ড. মো. আবদুর রাজ্জাক, জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন, মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলামসহ বিভিন্ন দফতরের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

সর্বশেষ খবর