শুক্রবার, ১৮ সেপ্টেম্বর, ২০২০ ০০:০০ টা

সাবরিনাসহ আটজনের বিরুদ্ধে কনস্টেবলের সাক্ষ্য

আদালত প্রতিবেদক

করোনাভাইরাস পরীক্ষা নিয়ে জোবেদা খাতুন সর্বজনীন স্বাস্থ্যসেবার (জেকেজি হেলথ কেয়ার) জালিয়াতির মামলায় আরিফুল হক চৌধুরী ও তার স্ত্রী ডা. সাবরিনা আরিফসহ আটজনের বিরুদ্ধে সাক্ষ্য দিয়েছেন পুলিশ কনস্টেবল রফিকুল ইসলাম। গতকাল ঢাকা মহানগর হাকিম সারাফুজ্জামান আনছারী সাক্ষীর জবানবন্দি গ্রহণ করেন। পরে তাকে আসামিপক্ষের আইনজীবীরা জেরা করেন। রফিকুল ইসলামের সাক্ষ্য গ্রহণ শেষে আদালত আগামী ২৮ সেপ্টেম্বর পরবর্তী সাক্ষ্য গ্রহণের নতুন তারিখ ধার্য করে। এ নিয়ে মামলাটিতে চারজনের সাক্ষ্য গ্রহণ শেষ হয়েছে।

মামলার আসামিরা হলেন জেকেজি হেলথ             কেয়ারের সিইও আরিফুল হক চৌধুরী, চেয়ারম্যান ডা. সাবরিনা আরিফ চৌধুরী, আরিফের বোন জেবুন্নেছা রিমা, সাবেক কর্মচারী হুমায়ুন কবির হিমু ও তার স্ত্রী তানজিলা পাটোয়ারী, জেকেজির কো-অর্ডিনেটর আবু সাঈদ চৌধুরী, জেকেজির কর্মচারী বিপুল দাস ও শফিকুল ইসলাম রোমিও। অভিযোগপত্রে (চার্জশিট) বলা হয়, মামলা তদন্তকালে জেকেজির কম্পিউটার থেকে করোনাভাইরাস পরীক্ষার ১৯৮৫টি ভুয়া রিপোর্ট পাওয়া গেছে। এই জালিয়াতির মাস্টারমাইন্ড আরিফুল। এ ক্ষেত্রে অন্য আসামিরা বিভিন্নভাবে তাকে সহযোগিতা করতেন। এ ছাড়া মামলার অন্যতম আসামি হিরু ছিলেন গ্রাফিক্স ডিজাইনার। তার হাত দিয়ে  তৈরি হতো ভুয়া সনদ। স্বাস্থ্য অধিদফতরের সঙ্গে জেকেজির চুক্তিতে ‘গাফিলতি’র বিষয়ও চার্জশিটে উল্লেখ করা হয়েছে।

মামলা সূত্রে জানা গেছে, দেশে করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের মধ্যে স্বাস্থ্য অধিদফতরে আবেদন করে পরীক্ষার জন্য নমুনা সংগ্রহের দায়িত্ব নিয়েছিল ওভাল গ্রুপের প্রতিষ্ঠান জেকেজি হেলথ কেয়ার। কিন্তু জুনের শেষদিকে অভিযোগ আসে, সরকারের কাছ থেকে বিনামূল্যে নমুনা সংগ্রহের অনুমতি নিয়ে বুকিং বিডি ও হেলথ কেয়ার নামে দুটি সাইটের মাধ্যমে টাকা নিচ্ছিল জেকেজি। নমুনা পরীক্ষা না করে রোগীদের ভুয়া সনদও দেওয়া হচ্ছিল। এ বিষয়ে রাজধানীর কল্যাণপুরের একটি বাড়ির কেয়ারটেকার কামাল হোসেনের অভিযোগের সত্যতা পেয়ে ২২ জুন জেকেজি হেলথ কেয়ারের সাবেক গ্রাফিক্স ডিজাইনার হুমায়ুন কবির হিরু ও তার স্ত্রী তানজিলা পাটোয়ারীকে গ্রেফতার করে পুলিশ। পরে তাদের কম্পিউটার থেকে চারজন প্রবাসীসহ ৪৩ জনের নামে তৈরি করা করোনাভাইরাস পরীক্ষার ভুয়া রিপোর্ট পাওয়া যায়। এ ঘটনায় কামাল হোসেন বাদী হয়ে তেজগাঁও থানায় মামলা করেন। পরে আসামি হুমায়ুন ও তার স্ত্রী ঘটনার বিষয়ে আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন। এরপর তেজগাঁও থানা পুলিশ জেকেজির সিইও আরিফুল হক চৌধুরী, তার বোন জেবুন্নেছাসহ সাতজনকে গ্রেফতার করে। ১২ জুলাই জাতীয় হৃদরোগ ইনস্টিটিউটের চিকিৎসক ডা. সাবরিনাকেও গ্রেফতার করা হয়। এ আসামি সরকারি চাকরিতে থাকা অবস্থায় বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে যুক্ত হয়ে সরকারি কর্মচারী বিধিমালা ভঙ্গ করায় ইতিমধ্যে সাময়িক বরখাস্ত হয়েছেন।

সর্বশেষ খবর