মঙ্গলবার, ২২ সেপ্টেম্বর, ২০২০ ০০:০০ টা

দুর্নীতির শিকড় খুঁজতে চিরুনি অভিযান জরুরি

-এ এইচ এম শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিক

দুর্নীতির শিকড় খুঁজতে চিরুনি অভিযান জরুরি

সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি এ এইচ এম শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিক বলেছেন, দুর্নীতি সব খাতেই আছে। দুর্নীতির ক্ষেত্রে স্বাস্থ্য খাতের নামটাই বার বার আসছে। হাজার হাজার কোটি টাকার দুর্নীতি হচ্ছে এ খাতে। তিনি বলেন, স্বাস্থ্য খাতে দুর্নীতির মহাপ্লাবন ঘটে যাচ্ছে। এটাকে পুকুর চুরি নয়, পুকুর ডাকাতি বলব। দেখলাম স্বাস্থ্য খাতের একজন ড্রাইভার শত কোটি টাকার মালিক। তিনি সিন্ডিকেটের সঙ্গে জড়িত। এটা থেকে বুঝা যাচ্ছে,  দুর্নীতির শিকড় কত গভীরে চলে গেছে। এ জন্য স্বাস্থ্যমন্ত্রীকে পরিবর্তনসহ স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে চিরুনি অভিযান পরিচালনা করতে হবে। গতকাল বাংলাদেশ প্রতিদিনের সঙ্গে আলাপকালে এ এইচ এম শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিক এসব কথা বলেন। শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিক বলেন, স্বাস্থ্য খাতে দুর্নীতির  পেছনে দুটি কারণ আছে। তা হচ্ছে, স্বাস্থ্য খাতে অঢেল টাকা। বিদেশ থেকেও স্বাস্থ্য খাতে টাকা আসে। এই দুর্নীতির দায় থেকে মন্ত্রী-সচিবরা রেহাই পেতে পারেন না। কারণ তারা যদি তীক্ষè দৃষ্টিতে বিষয়গুলো দেখতেন, তাহলে ড্রাইভার শত কোটি টাকার মালিক কি করে হন? একজন ড্রাইভার শত কোটি টাকার মালিক অথচ মন্ত্রী-সচিব ও অন্য অফিসাররা জানলেন না? তার মানে এদিকে তাদের কোনো নজর নেই। এই দুর্নীতি কয়েক বছর থেকে চলে আসছে। তিনি বলেন, শুধু এই ড্রাইভারই নয়, স্বাস্থ্য খাতে হাজার হাজার কোটি টাকার দুর্নীতি হচ্ছে। মিঠু সিন্ডিকেট, সাহেদ-সাবরিনার সিন্ডিকেটসহ আরও আছে। একের পর এক যেভাবে স্বাস্থ্য খাতের দুর্নীতির খবর আমরা পাচ্ছি, তাতে বুঝা যাচ্ছে স্বাস্থ্য খাতে দুর্নীতির মহাপ্লাবন ঘটে যাচ্ছে। এটাকে পুকুর চুরি নয়, পুকুর ডাকাতি বলব। অথচ এসব পুকুর ডাকাতি মন্ত্রী-সচিবদের নজরে পড়ছে না। এটা দুর্ভাগ্যজনক। তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী দেশকে উন্নয়নের দিকে এগিয়ে নিচ্ছেন। এই উন্নয়নের সঙ্গে দুর্নীতি চলতে থাকলে, উন্নয়ন বাধাগ্রস্ত হবে। দুর্নীতিকে অবশ্যই নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। দুর্নীতিকে নিয়ন্ত্রণ না করলে দেশ যতই উন্নত  হোক, সেই উন্নয়ন দেশবাসী ভোগ করতে পারবে না। আমি মনে করে ঢালাও অভিযান প্রয়োজন। মন্ত্রীকে পরিবর্তন করতে হবে। এছাড়া অন্য যারা আছেন, তথা মন্ত্রণালয় ঢেলে সাজাতে হবে। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে চিরুনি অভিযান চালাতে হবে। সেখানে দুদককে আরও সক্রিয় হতে হবে। তিনি বলেন, আমরা দেখি দুদক দুয়েকজনকে ডাকে। তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করে। কিন্তু আর কোনো খবর দেখি না। যেমন জিএমআইয়ের রাজ্জাক। আর মিঠুকে তো পাওয়াই গেল না। তিনি বিদেশে আছেন। তাকে না পাওয়া গেলে আইন হচ্ছে, তার সম্পত্তি ক্রোক করা। তার বিরুদ্ধে ওরেন্ট ইস্যু করা। এর কোনোটাই হয়েছে বলে আমার মনে হয় না। তিনি বলেন, দুর্নীতি দমন না করলে উন্নয়ন আমরা চোখেই দেখব না। এ জন্য দুদককে বিরাট ভূমিকা পালন করতে হবে। তিনি বলেন, আমি র‌্যাবকে ধন্যবাদ জানাচ্ছি। ড্রাইভার যে শত কোটি টাকার মালিক তা র‌্যাব নিজের উদ্যোগেই ধরতে পেরেছে। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের উচিত ছিল এসব বিষয় দুদককে জানানো। এই ড্রাইভারের বিরুদ্ধে আগেই ব্যবস্থা নেওয়া উচিত ছিল স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের। কিন্তু তারা তা করেনি। এটা মন্ত্রণালয়ের ব্যর্থতা। তিনি বলেন, পার্লামেন্টারি গভর্নমেন্টে এহেন কোনো ঘটনা যদি ঘটে,  তবে সেই দায় মন্ত্রীর ওপর আসে। মন্ত্রী সাধারণত পদত্যাগ করেন এমন ঘটনায়। আমাদের দেশে তো তা হয় না।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর