মঙ্গলবার, ২৯ সেপ্টেম্বর, ২০২০ ০০:০০ টা

ময়নাতদন্তে লাশের পেটে মিলল ১৫৫০ পিস ইয়াবা

নিজস্ব প্রতিবেদক, রাজশাহী

পাকস্থলিতে ইয়াবা পাচার করে আনার পর পুলিশের হাতে গ্রেফতার এক ব্যক্তি মারা গেছেন। পরে তার লাশের ময়নাতদন্তের সময় পাকস্থলীতে ১ হাজার ৫৫০ পিস ইয়াবা পাওয়া গেছে। মোট ৩১টি প্যাকেটে ইয়াবাগুলো ছিল। গতকাল দুপুরে রাজশাহী মেডিকেল কলেজের (রামেক) মর্গে আবদুস শুকুর (৩৭) নামে ওই ব্যক্তির লাশের ময়নাতদন্ত করা হয়।

শুকুরের বাড়ি কক্সবাজারের টেকনাফ উপজেলার বাজারপাড়ায়। তার বাবার নাম মোক্তার আহমেদ। গত বুধবার পাবনা হাসপাতাল রোড এলাকা থেকে আরও তিনজনের সঙ্গে শুকুরকে গ্রেফতার করে গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। রবিবার রাত ১১টার দিকে শুকুর রামেক হাসপাতালে মারা যান। পরে ময়নাতদন্তের সময় তার পেট থেকে ইয়াবা উদ্ধার হয়।

পাবনা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নাসিম আহমেদ জানান, শুকুর টেকনাফ থেকে পেটে ইয়াবা নিয়ে পাবনায় বিক্রি করতে এসেছিলেন। পাবনার স্থানীয় তিন মাদক ব্যবসায়ীর সঙ্গে ডিবি পুলিশ শুকুরকে গ্রেফতার করে। ওই সময় তাদের কাছে ১৫০ পিস ইয়াবা পাওয়া যায়। কিন্তু পুলিশের কাছে তথ্য ছিল, এদের কাছে ইয়াবা আছে আরও অনেক বেশি। তাই তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। একপর্যায়ে তারা স্বীকার করেন ইয়াবা আছে শুকুরের পেটের ভিতর। তাই তাকে পাবনা সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। হাসপাতালের চিকিৎসকরা পেটে আল্ট্রাসনোগ্রাম ও এক্স-রে করে নিশ্চিত করেন, শুকুরের পেটে ইয়াবা আছে। কিন্তু সেগুলো বের করার কোনো ব্যবস্থা তাদের কাছে নেই। তাই তারা শুকুরকে রামেক হাসপাতালে ভর্তি করার পরামর্শ দেন। সে অনুযায়ী তাকে রামেক হাসপাতালের ৫ নম্বর ওয়ার্ডে ভর্তি করা হয়। সেখানেই পুলিশের হেফাজতে তার চিকিৎসা চলছিল। রবিবার রাতে শুকুর মারা যান।

রাজশাহী মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ ডা. নওশাদ আলী জানান, জেলা প্রশাসনের একজন ম্যাজিস্ট্রেটের উপস্থিতিতে ময়নাতদন্ত করা হয়। এ সময় শুকুরের পাকস্থলীতে ইয়াবার ৩১টি প্যাকেট পাওয়া যায়। এর মধ্যে ১৬টি ঠিক ছিল। বাকি ১৫টি প্যাকেট ফেটে গিয়েছিল। এসব প্যাকেটের বড়ি গলতেও শুরু করেছিল। সেগুলো গণনা করা যায়নি। তবে ভালো থাকা ১৬টি প্যাকেটের ইয়াবা ঠিকমতো গণনা করা সম্ভব হয়েছে। এতে প্রতি প্যাকেটে ৫০ পিস করে ইয়াবা বড়ি পাওয়া গেছে। তাই তারা ধরে নিচ্ছেন ৩১টি প্যাকেটেই ৫০ পিস করে ইয়াবা ছিল। অর্থাৎ ইয়াবা বড়ির সংখ্যা ১ হাজার ৫৫০। পাকস্থলীতে এত বেশিসংখ্যক ইয়াবা গলে যাওয়ার কারণে শুকুরের মৃত্যু হয়েছে বলেও জানান তিনি।

নগরীর রাজপাড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শাহাদাত হোসেন খান জানান, ঘটনাটি তিনি জানেন। লাশের সুরতহাল, ময়নাতদন্তের ব্যবস্থা তারাই করেছেন। ময়নাতদন্তের সময় উদ্ধার হওয়া ইয়াবা পাবনা সদর থানার মামলায় জব্দ দেখানো হবে। কারণ, আটকের পর শুকুরসহ চারজনের বিরুদ্ধে পাবনা সদর থানাতেই মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে একটি মামলা হয়েছে।

সর্বশেষ খবর