মঙ্গলবার, ২৯ সেপ্টেম্বর, ২০২০ ০০:০০ টা

গণমাধ্যমের ওপর চাপ গণতন্ত্রের জন্য অশনিসংকেত

-ড. ইফতেখারুজ্জামান

নিজস্ব প্রতিবেদক

গণমাধ্যমের ওপর চাপ গণতন্ত্রের জন্য অশনিসংকেত ও আত্মঘাতী বলে মনে করেন দুর্নীতিবিরোধী সংগঠন ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ-টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান। তিনি বলেছেন, রাজনৈতিক পৃষ্ঠপোষকতায় তথ্য প্রকাশ ও অনুসন্ধানী সাংবাদিকতার ওপর প্রশাসনিক নিয়ন্ত্রণ এক ধরনের প্রাতিষ্ঠানিক রূপ লাভ করেছে। ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের যথেচ্ছ ব্যবহার জাতীয় ও আন্তর্জাতিকভাবে অত্যন্ত উদ্বেগের বিষয়। গতকাল আন্তর্জাতিক তথ্য অধিকার দিবস উদযাপনের অংশ হিসেবে টিআইবি আয়োজিত ‘তথ্য অধিকার, মত প্রকাশের স্বাধীনতা ও অনুসন্ধানী সাংবাদিকতা : প্রেক্ষিত বাংলাদেশ’ শীর্ষক মুক্ত আলোচনা ও দুর্নীতিবিরোধী অনুসন্ধানী সাংবাদিকতা পুরস্কার প্রদান অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন ড. ইফতেখারুজ্জামান। আরও বক্তব্য দেন, অধ্যাপক আফসান চৌধুরী, অধ্যাপক ড. গীতিআরা নাসরিন, সাংবাদিক  জুলফিকার আলী মানিক প্রমুখ। টিআইবির দুর্নীতিবিরোধী অনুসন্ধানী সাংবাদিকতা পুরস্কার ২০২০ পেয়েছেন কালের কণ্ঠ’র সিনিয়র রিপোর্টার আরিফুর রহমান, এনটিভির সিনিয়র রিপোর্টার সফিক শাহিন, যশোরের ‘দৈনিক গ্রামের কাগজ’-এর সিনিয়র রিপোর্টার ফয়সাল ইসলাম এবং চট্টগ্রামের সাপ্তাহিক ‘চাটগাঁর বাণী’র সম্পাদক মোহাম্মদ সেলিম। টেলিভিশন (প্রামাণ্য অনুষ্ঠান) বিভাগে বিজয়ী হয়েছে চ্যানেল টোয়েন্টিফোরের প্রামাণ্য অনুষ্ঠান ‘সার্চলাইট’। অনুষ্ঠানে ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, তথ্য অধিকার আইন প্রণয়নের জন্য সরকারকে সাধুবাদ জানানো গেলেও এই আইনের বাস্তবায়নে সরকারের একাংশের মানসিকতা হলো, ‘তথ্য হচ্ছে সরকারি সম্পত্তি’; এর নিয়ন্ত্রণ সরকারের হাতেই থাকবে এবং সরকার যেভাবে যতটুকু তথ্য প্রকাশ করতে চাইবে ততটুকুই প্রকাশিত হবে। পাশাপাশি রাজনৈতিক ও প্রশাসনিক ক্ষমতাবানদের একাংশের সমালোচনা সইবার সৎ সাহসের ঘাটতি থাকায় তথ্য প্রকাশ একটি ঝুঁকিপূর্ণ বিষয় হয়ে দাঁড়ায়। গণমাধ্যমের ওপর এই চাপ গণতন্ত্রের জন্য অশনিসংকেত; বিশেষ করে অনুসন্ধানী সাংবাদিকতা, গণতান্ত্রিক জবাবদিহিতা, শুদ্ধাচার প্রতিষ্ঠা ও দুর্নীতি প্রতিরোধের ক্ষেত্রে অপ্রতিরোধ্য প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করছে। যেটি আত্মঘাতীমূলক এবং বুমেরাং হতে বাধ্য। প্রতিকূলতা সত্ত্বেও গণমাধ্যমকর্মীদের আরও জোরালো ভূমিকা প্রত্যাশা করে সাংবাদিকদের পেশাগত উৎকর্ষ নিশ্চিত করতে দক্ষতা, সততা, বিশ্বাস ও আস্থা অর্জনের ওপর গুরুত্বারোপ করেন তিনি। অধ্যাপক আফসান চৌধুরী বলেন, বাংলাদেশের গণমাধ্যম অনুসন্ধানী সাংবাদিকতা করতে পারছে না। তারা এখন নিজেকে সংবাদমাধ্যম হিসেবে না ভেবে উপরাজনৈতিক শক্তি হিসেবে ভাবছে। তারা অনুসন্ধানী না হয়ে এখন হেডলাইন নির্ভর হয়ে পড়েছে। ড. গীতিআরা নাসরিন বলেন, অধিকাংশ সংবাদমাধ্যমই গতানুগতিক। গণমাধ্যম ওয়াচডগের ভূমিকা কতটা পালন করতে পারছে তা প্রশ্নসাপেক্ষ। সব মিডিয়া একই ধরনের তথ্য প্রদান করছে। এক ধরনের ‘সহমত ভাই’ সাংবাদিকতা শুরু হয়েছে।

সর্বশেষ খবর