রবিবার, ৪ অক্টোবর, ২০২০ ০০:০০ টা
বাংলাদেশ প্রতিদিনকে এইচ টি ইমাম

চরম বিরোধীরাও স্বীকার করছেন দুর্যোগে বিকল্প নেই শেখ হাসিনার

শাবান মাহমুদ ও রফিকুল ইসলাম রনি

চরম বিরোধীরাও স্বীকার করছেন দুর্যোগে বিকল্প নেই শেখ হাসিনার

প্রধানমন্ত্রীর রাজনৈতিক উপদেষ্টা এইচ টি ইমাম বলেছেন, করোনার বিরুদ্ধে সংগ্রাম কিংবা যুদ্ধ যা-ই বলি, সামনের সারি থেকে তার নেতৃত্ব দিচ্ছেন বঙ্গবন্ধুকন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। জীবন-জীবিকা সচল রাখতে স্বল্প ও দীর্ঘ মেয়াদি পদক্ষেপের ফলে করোনাকালে একজন মানুষও না খেয়ে মারা যায়নি। সরকারবিরোধী কিংবা আওয়ামী লীগ-বিরোধীরাও স্বীকার করেছেন, দুর্যোগ মোকাবিলায় এ দেশে শেখ হাসিনার বিকল্প নেই।

গত শুক্রবার সকালে গুলশানে তাঁর বাসভবনে বাংলাদেশ প্রতিদিনের সঙ্গে একান্ত আলাপকালে তিনি এসব কথা বলেন। প্রধানমন্ত্রীর রাজনৈতিক উপদেষ্টা ও আওয়ামী লীগের নির্বাচন পরিচালনা কমিটির কো-চেয়ারম্যান এইচ টি ইমাম করোনা পরিস্থিতি, বিশ্বরাজনীতি, সরকারের নানামুখী পদক্ষেপ, আগামী নির্বাচনসহ বিভিন্ন বিষয়ে কথা বলেছেন।

এইচ টি ইমাম বলেন, করোনাভাইরাস যখন চীনে প্রথম শনাক্ত হয়, তখনই প্রতিরোধমূলক প্রস্তুতি নিতে শুরু করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। দেশে প্রথম করোনা রোগী শনাক্ত হয় ৮ মার্চ। করোনাভাইরাস শনাক্ত হতেই দেশবাসীকে সচেতন করতে প্রধানমন্ত্রী নির্দেশনা প্রদান করেন। হাঁচি-কাশির সময় রুমাল কিংবা টিস্যু না পাওয়া গেলে কীভাবে কনুই ব্যবহার করতে হবে তা তিনি দেশবাসীকে দেখিয়ে দিলেন। একই সঙ্গে মাস্ক পরার অভ্যাস গড়ে তুলতে বললেন। পাশাপাশি সাবান দিয়ে ঘন ঘন হাত ধোয়ার অভ্যাস গড়ে তোলার কথাও বলেছেন দেশবাসীকে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার এসব নির্দেশনা মেনে চলতে জনগণকে উৎসাহিত করেছেন।

প্রধানমন্ত্রী তড়িঘড়ি কোনো সিদ্ধান্ত নেন না জানিয়ে তাঁর রাজনৈতিক উপদেষ্টা বলেন, করোনাভাইরাস শুরু হওয়ার পর থেকেই স্বাস্থ্য খাতে অনিয়ম-দুর্নীতির খবর প্রকাশ পেল। চিকিৎসক, নার্স ও টেকনিশিয়ানদের সুরক্ষা দেওয়ার জন্য প্রয়োজনীয় সামগ্রী স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের ছিল না। বলা চলে স্বাস্থ্যব্যবস্থা ভেঙে পড়েছিল। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের নজর ছিল প্রাতিষ্ঠানিক কেনাকাটায়। এ পরিস্থিতি দেখে আমি লিখিত একটি প্রস্তাব পাঠাই। প্রধানমন্ত্রী চাইলে সে সময় অনেকের বিরুদ্ধেই ব্যবস্থা নিতে পারতেন। যেমন স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালকে অপসারণসহ অন্যান্য ব্যবস্থা। কিন্তু তিনি তড়িঘড়ি কোনো কাজ করেননি। কথায় বলে, ‘মাঝনদীতে ঘোড়া পরিবর্তন করা ঠিক নয়।’ তিনি উপযুক্ত সময় বুঝে সঠিক সিদ্ধান্ত নেন। করোনা মোকাবিলায় প্রধানমন্ত্রী খুব ধীরস্থিরভাবে সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।

করোনা পরিস্থিতি নিয়ে যারা সরকারের সমালোচনা করছেন তাদের সমালোচনা করে এইচ টি ইমাম বলেন, একসময় সমালোচনা শুরু হলো সারা দেশে কেন লকডাউন ঘোষণা করা হচ্ছে না। আমরাও কেউ কেউ লকডাউনের পক্ষে ছিলাম। কিন্তু প্রধানমন্ত্রী দূরদর্শী চিন্তায় বুঝতে পেরেছিলেন মানুষকে যেমন বাঁচাতে হবে, তেমনি জীবিকাও সচল রাখতে হবে। আমরা একটি ওয়ার্ডকে লকডাউন দিয়ে রাখতে পারিনি। শতভাগ বাস্তবায়ন করতে পারিনি। সেখানে সারা দেশ লকডাউন করলে পরিস্থিতি কী হতো তা অনুমেয়। সুতরাং প্রধানমন্ত্রীর সিদ্ধান্ত যে সঠিক তা প্রমাণিত হলো। তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী জেলা-উপজেলা পর্যায়ে ভিডিও কনফারেন্স করলেন। স্থানীয় প্রশাসন, জনপ্রতিনিধি, দলীয় নেতা-কর্মীদের সঙ্গে কথা বললেন। আমাদের করণীয় বিষয়ে নির্দেশনা দিলেন। সচিবদের বিভিন্ন জেলায় দায়িত্ব দিয়ে পাঠালেন। দলীয় নেতা-কর্মীদের নির্দেশ দিলেন সামর্থ্য অনুযায়ী কর্মহীন মানুষের পাশে দাঁড়াতে। সরকারি ও দলীয়ভাবে জনগণের পাশে দাঁড়ানোয় একজন মানুষও না খেয়ে মারা যায়নি। করোনাকাল আমাদের শিক্ষা দিল দেশের দুর্যোগ মুহূর্তে বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা ছাড়া উদ্ধার নেই। সামাজিক নিরাপত্তাবলয়টি ভালোভাবে গড়ে তোলা সম্ভব হয়েছিল বলেই আমরা করোনা পরিস্থিতি সামাল দিতে সক্ষম হয়েছি।

এইচ টি ইমাম বলেন, আমাদের গার্মেন্ট শ্রমিকরা যেমনি দল বেঁধে বাড়ি গেল, তেমনি হুড়মুড় করে ফিরে এলো। ধরেই নিয়েছিলাম অনেক গার্মেন্ট কর্মী আক্রান্ত হবেন। কিন্তু তারা সুস্থ আছেন। বস্তিতে কেউ আক্রান্ত হয়নি। অথচ এসি রুমে বসবাসকারী মানুষের আক্রান্ত ও মৃত্যু হার বেশি। করোনাকালে ব্যক্তিগত স্বাস্থ্য সম্পর্কে সচেতন থাকতে হবে। পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন থাকার কোনো বিকল্প নেই। বিগত সময়ে যখন ডেঙ্গু, চিকুনগুনিয়া আতঙ্ক ছড়াল তখন আমরা প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে বসে সবাইকে নির্দেশনা দিলাম। জনসচেতনতা বাড়াতে স্কাউটের ছেলেমেয়েদের মাঠে নামিয়ে দিলাম। তিনি বলেন, করোনা বিশ্বরাজনীতি ওলট-পালট করে দিল। ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন অনেক পদক্ষেপ গ্রহণ করলেন। কিন্তু সেখানে হাজার হাজার মানুষ সরকারবিরোধী বিক্ষোভে নামল। আমেরিকা সবচেয়ে শক্তিশালী দেশ। সে দেশটির প্রেসিডেন্ট ডোনাল ট্রাম্প নিজেই সস্ত্রীক করোনায় আক্রান্ত। তারা মাস্ক পরা বিশ্বাস করেন না। কারণ মাস্ক অনেকটা হিজাবের মতো দেখায়। মুসলিম নারীরা হিজাব পরে বলে তারা মাস্ক পরেন না।

করোনায় বাংলাদেশের রাজনীতিতে গুণগত কোনো পরিবর্তন হবে না জানিয়ে প্রবীণ এই রাজনীতিবিদ বলেন, বাংলাদেশের রাজনীতিতে খুব বেশি পরিবর্তন হবে না। সে আশা দেখছিও না। তবে যারা সরকারবিরোধী, আওয়ামী লীগ-বিরোধী তারাও স্বীকার করে নিয়েছেন দুর্যোগ মুহূর্তে শেখ হাসিনার কোনো বিকল্প নেই। তিনি বলেন, মহামারীর মধ্যে জনগণের পাশে দাঁড়াতে গিয়ে আওয়ামী লীগের সাড়ে ৫ শতাধিক নেতা-কর্মী করোনা আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন। করোনাভাইরাসের সময় প্রধানমন্ত্রীর আহ্বানে সাড়া দিয়ে আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের সর্বস্তরের নেতা-কর্মী ঝাঁপিয়ে পড়েন। করোনায় মৃত বাবার শেষকৃত্যের দায়িত্ব সন্তানরা নেয়নি। ছাত্রলীগের ছেলেরা দাফন-কাফন করেছে। করোনা আক্রান্তের বাড়িতে আওয়ামী লীগ নেতা-কর্মীরা চাল, ডাল, সবজি পৌঁছে দিয়েছেন। মানুষের সেবা করতে গিয়ে ৫৮ জেলায় সাড়ে ৫ শতাধিক আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগ নেতা-কর্মী মারা গেছেন। এই ত্যাগ অন্য কোনো দলের নেই। কারণ অন্য দলের নেতারা সংকটে মাঠে থাকেন না। আওয়ামী লীগ একমাত্র দল যারা মানুষের দুর্দিনে পাশে থাকে। তিনি বলেন, দেশের মানুষের জন্য জাতির পিতা রাজনীতি করতেন। দেশ স্বাধীনের আগে ভোলায় বড় ঘূর্ণিঝড় হয়। সেখানে হাজার হাজার মানুষ মারা যায়। পাকিস্তান সরকার সেখানে না গেলেও জাতির পিতা দলীয় নেতা-কর্মী নিয়ে তাদের উদ্ধার ও পুনর্বাসনের কাজে যান। বঙ্গবন্ধুর পথ অনুসরণ করেই শেখ হাসিনা মানুষের কল্যাণ করছেন। রক্তের ধমনিতে মানুষের কল্যাণ করার ঐতিহ্য রয়েছে। করোনাকালে বিশ্বনেতারা যখন হিমশিম খাচ্ছেন, তখন শেখ হাসিনা শক্ত হাতে হাল ধরে দেশের মানুষের জীবন-জীবিকা সচল রেখেছেন। বঙ্গবন্ধুর আত্মজীবনীতেও সে রকম কাজের উল্লেখ রয়েছে। করোনায় বাংলাদেশ ভ্যাকসিন কীভাবে পেতে পারে সে বিষয়ে জানতে চাইলে এইচ টি ইমাম বলেন, ভ্যাকসিন পাওয়ার ব্যাপারে আমরা শতভাগ আশাবাদী। আমি নিজেও এর সঙ্গে যুক্ত আছি। আশা করি, খুব দ্রুতই আমরা ভ্যাকসিন পাব। সব দেশকে ভ্যাকসিন দেওয়ার ব্যাপারে জাতিসংঘের সাধারণ অধিবেশনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আহ্বান জানিয়েছেন উল্লেখ করে তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধুকন্যা স্বার্থপর নন। শুধু নিজের দেশ নিয়ে ভাবেন না। তিনি বিশ্ব নিয়ে ভাবেন। সবাই যেন ভ্যাকসিন পায় সে আহ্বান তিনি জানিয়েছেন। আমি মনে করি, এটা যুগোপযোগী আহ্বান। এর মাধ্যমেই প্রমাণিত হয়, শেখ হাসিনা শুধু রাষ্ট্রনায়ক নন, তিনি বিশ্ব নায়ক।

জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সঙ্গে ব্যক্তিগত স্মৃতিচারণা করে সাবেক এই আমলা বলেন, বঙ্গবন্ধুর অনেক মানবিক গুণ ছিল। পাকিস্তানি রাজাকাররা অনেকেই আমাদের মা-বোনদের অত্যাচার করেছিল। বঙ্গবন্ধু নির্যাতিত নারীদের পুনর্বাসন করেছেন। অনেকের বিয়ের ব্যবস্থা করেছেন। কেউ পিতার নাম জানতে চাইলে বঙ্গবন্ধু বলতেন, লিখে দাও ‘শেখ মুজিবুর রহমান’। এত বড় মহানুভবতা কার ছিল? আরেকটি ব্যক্তিগত কথা বলি, খান এ সবুর পাকিস্তানে চিঠি লিখেছিলেন, ‘এসব শিল্পী, সাহিত্যিক, বুদ্ধিজীবী পাকিস্তানের পক্ষে, এসব শিল্পী, সাহিত্যিক, বুদ্ধিজীবী পাকিস্তানের বিপক্ষে’। যাদের নাম বিপক্ষে লেখা ছিল তাদের রাজারবাগে ধরে নিয়ে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়। শাহ আজিজুর রহমান পাকিস্তানের হয়ে জাতিসংঘে কথা বলেছিলেন। দেশ স্বাধীন হওয়ার পর খান এ সবুর ও শাহ আজিজুর রহমানকে মুক্তিবাহিনীর সদস্যরা খুঁজছিলেন। জাতির পিতা তাদের জেলে রেখেছিলেন। তাদের জীবন রক্ষা করেছিলেন। এও এক ধরনের উদারতা।

জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু হত্যার নেপথ্যনায়কদের বের করতে কমিশন গঠনের দাবির সঙ্গে একমত পোষণ করে প্রধানমন্ত্রীর রাজনৈতিক উপদেষ্টা বলেন, এখন কমিশন গঠনের যে দাবি উঠেছে, আমি শতভাগ সমর্থন করি। তবে এর আগেও অনেক কমিশন গঠিত হয়েছে। সেগুলো আলোর মুখ দেখেনি। বঙ্গবন্ধু হত্যার পেছনে যারা পাকিস্তানি দোসর, তারাই জড়িত ছিল। ১৯৭৪ সালে জুলফিকার আলী ভুট্টো এসে সে ষড়যন্ত্র করে গেছেন। তৎকালীন চীন তাদের সহায়তা করেছে। এটা ভুলে গেলে চলবে না। বঙ্গবন্ধু হত্যার পর চীন আমাদের স্বীকৃতি দিয়েছিল। আমেরিকা অনেক চালাক। সুতরাং দেশের ভিতরে কারা ষড়যন্ত্র করেছিল, ইনডেনমিটি নাটকটি দেখলে দেশবাসী সঠিকভাবেই বুঝতে পারবে কে এর পেছনে ছিল। জাতির পিতাকে যখন হত্যা করা হয়, তখন জিয়াউর রহমানকে দেখার সঙ্গে সঙ্গে বিশৃঙ্খল লোক সবাই একত্রিত হয়েছিল। তখনই পরিষ্কার হয়েছিল কে এদের নেতা।

একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিশাল বিজয়ের কারণ জানতে চাইলে আওয়ামী লীগের নির্বাচন পরিচালনা কমিটির কো-চেয়ারম্যান এইচ টি ইমাম বলেন, সরকারের উন্নয়নের ধারাবাহিকতা ছিল বলেই এমন বিজয় হয়েছে। ২০০৮ সালের নির্বাচনের প্রস্তুতি নিতে শুরু করি ২০০৪ সালে। ২০০১-২০০৬ সাল পর্যন্ত বিএনপি-জামায়াত সরকারের দুঃশাসন মানুষ মনে রেখেছিল। এখনো ভুলে যায়নি। তাই ২০০৮ সাল থেকে টানা বিজয়ী করে আসছে। এ ছাড়া আওয়ামী লীগ গণমানুষের সঙ্গে আছে বলেই এ বিজয় হয়েছে। তিনি বলেন, ২০০৮ সালের নির্বাচনের আগে বলা হলো, তৃণমূলে প্রার্থী বাছাই করা হবে। সে সময় আমাদের ১০ লাখ নেতা-কর্মী বাছাই করা হলো। অর্থাৎ আমরা এগিয়ে থাকলাম। এ ছাড়া আমাদের দলীয় সভানেত্রী নির্বাচন কমিশনকে বলেছিলেন, স্বচ্ছ ভোটার তালিকা ও ব্যালট বাক্স করতে হবে। নির্বাচন কমিশন তা করতে বাধ্য হয়েছিল। আমি নিজেই বর্তমানে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় সদস্য এ বি এম রিয়াজুল কবির কাওছারকে সঙ্গে নিয়ে ৫০ জন নেতাকে প্রথমে ট্রেনিং করাই। তারা মাস্টার ট্রেইনার। তাদের বিভাগীয় পর্যায়ে পাঠানো হয়। তারা জেলা-উপজেলায় পোলিং এজেন্টদের প্রশিক্ষণ দেন। বুকলেট তৈরি করেছিলাম; যেন কোনো অবস্থায় পোলিং এজেন্টরা সরে না যান, কোনোভাবেই বিভ্রান্ত না হন। নির্বাচন কমিশন যখন জানায়, স্বচ্ছ ব্যালট বাক্স পাওয়া কঠিন তখন আমি ও সাবের হোসেন চৌধুরী কানাডা, ডেনমার্ক, ইউএনডিপির সঙ্গে বৈঠক করি। তারা প্রত্যেকে স্বচ্ছ ব্যালট বাক্স দিতে রাজি হয়। সে সময় আমরা বিজয়ী হই। ১৯৯১ সালে আওয়ামী লীগের সঙ্গে জড়িত হন জানিয়ে প্রভাবশালী সাবেক এই আমলা বলেন, আমি ১৯৯১ সালে আনুষ্ঠানিকভাবে রাজনীতিতে অংশগ্রহণ করি। সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়ায় ৪ নম্বর সদস্য হই। এরপর বঙ্গবন্ধু ভবন ও নেত্রীর বাসায় যাওয়া-আসা শুরু করি। অন্যান্য সিএসপির চেয়ে আমার গ্রহণযোগ্যতা সব জায়গায় বেশি ছিল বলেই আমি আওয়ামী লীগের নির্বাচন পরিচালনা কমিটির কো-চেয়ারম্যান মনোনীত হই। ১৯৯১ সালে আমরাই জিততাম, উত্তরবঙ্গে কমিউনিস্টদের কিছু আসন দিতে গিয়ে আমরা হেরে গেলাম।

একটি নির্বাচন শেষ হলে আওয়ামী লীগ আরেকটি নির্বাচনের কাজ শুরু করে জানিয়ে নির্বাচন পরিচালনা কমিটির কো-চেয়ারম্যান এইচ টি ইমাম বলেন, সামনে পৌরসভা, ইউনিয়ন পরিষদ, সিটি করপোরেশন নির্বাচন। এগুলো শেষ হলেই জাতীয় নির্বাচন আমাদের সামনে চলে আসবে। তবে এটা সত্য, তৃণমূলে আমাদের অভ্যন্তরীণ দলাদলি আছে। এগুলো এখন থেকেই নিরসনের জন্য কাজ করছি। অর্থাৎ আমরা নির্বাচনী প্রস্তুতি শুরু করেছি।

তৃণমূল নেতা-কর্মীদের অভিযোগ আওয়ামী লীগ গণমানুষের দল থেকে সরে এসে আমলানির্ভর হয়ে পড়ছে- এ সম্পর্কে প্রধানমন্ত্রীর রাজনৈতিক উপদেষ্টা বলেন, একটা সময় আমরা আমলানির্ভর হয়ে যাচ্ছিলাম। কিন্তু একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা শক্ত নির্দেশনা দিয়েছেন। আমলাদের নির্ভরতা নেই। আওয়ামী লীগ গণমানুষের দল। আর সেখানেই ফিরে যাচ্ছে।

সর্বশেষ খবর