মঙ্গলবার, ৬ অক্টোবর, ২০২০ ০০:০০ টা

নারী নির্যাতনের বিরুদ্ধে সর্বশক্তি নিয়োগ চাই

সৈয়দ আবুল মকসুদ

নিজস্ব প্রতিবেদক

নারী নির্যাতনের বিরুদ্ধে সর্বশক্তি নিয়োগ চাই

বিশিষ্ট কলামিস্ট, গবেষক ও প্রাবন্ধিক সৈয়দ আবুল মকসুদ বলেছেন, দেশের আর্থ-সামাজিক অগ্রগতির স্বার্থেই নারী নির্যাতনের বিরুদ্ধে সর্বশক্তি নিয়োগ করতে হবে। আর্থ-সামাজিক উন্নয়নের স্বার্থেই মেয়েদের উচ্চশিক্ষায় শিক্ষিত করে গড়ে তুলতে হবে। কিন্তু একশ্রেণির লম্পটের কারণে বহু মেয়ে শিক্ষাজীবন শেষ করতে পারছে না। সুতরাং নারীর নিরাপত্তা দেওয়া আমাদের জাতীয় উন্নতির জন্যই অপরিহার্য।

সম্প্রতি নারীর প্রতি সহিংসতা বেড়ে যাওয়ায় উদ্বেগ প্রকাশ করে গতকাল বাংলাদেশ প্রতিদিনের সঙ্গে ফোনালাপে তিনি এ কথা বলেন। আলাপচারিতায় এই বুদ্ধিজীবী বলেন, আমাদের সমাজে নারী ঘরে ও বাইরে চিরকালই নির্যাতিত। তবে বর্বরোচিত নির্যাতনের মাত্রা বর্তমান সময়ে সীমা ছাড়িয়েছে। সমাজের সব ক্ষেত্রেই অন্যায়-অবিচারের মাত্রা বেড়েছে। একশ্রেণির মানুষের মধ্যে বিশেষ করে তরুণদের মধ্যে শক্তি প্রদর্শনের প্রবণতা দেখা দিয়েছে। সেটা করতে গিয়ে তারা দুর্বল নারীকেই শিকার হিসেবে বেছে নেয়। তিনি আরও বলেন, প্রযুক্তির অপব্যবহার ও আকাশ সংস্কৃতির কারণেও নারীরা এখন নির্যাতিত হচ্ছে। প্রযুক্তির ভালো দিক আছে, কিন্তু আমাদের সমাজের তরুণদের একটি শ্রেণি খারাপ দিকটাকে বেছে নিয়েছে। তার ফলে সারা দেশে নারীর প্রতি সহিংসতা বর্তমানে অতীতের যে কোনো সময়ের চেয়ে বেশি। লক্ষ্য করলেই দেখা যাবে, এই নির্যাতনকারীরা কোনো না কোনোভাবে ক্ষমতাসীন রাজনীতির সঙ্গে জড়িত। সেখান থেকে মদদ পাওয়ার ফলেই তারা এত বেশি দুঃসাহস দেখাতে পারছে।

সৈয়দ আবুল মকসুদ বলেন, ঘটনা ঘটার পর শুধু অপরাধীকে শাস্তি দিলেই এ অবস্থার পরিবর্তন ঘটবে না। সামাজিক অবস্থার ভিতরে যদি পরিবর্তন না আনা যায় তাহলে এ ধরনের ঘটনা ঘটতেই থাকবে। সে পরিবর্তন শুধু সরকার ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী আনতে পারবে না। এজন্য সমাজের সকল শ্রেণির মানুষের সক্রিয় উদ্যোগ ও অংশগ্রহণ দরকার। বিশেষ করে জনপ্রতিনিধি যারা রয়েছেন - ইউপি সদস্য থেকে শুরু করে জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান - প্রত্যেকে যদি নারী নির্যাতন প্রতিরোধে সক্রিয় উদ্যোগ না গ্রহণ করেন, তাহলে এ বর্বরতা থামানো যাবে না।

তিনি উল্লেখ করেন, স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তি, মসজিদের ইমাম, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষক ও শুভবুদ্ধিসম্পন্ন তরুণরা যদি সম্মিলিতভাবে এই দুর্বৃত্তদের শনাক্ত করে তাদের দমনের চেষ্টা করেন, তাহলে প্রশাসনের পক্ষে দায়িত্ব পালন সহজ হবে। অবিলম্বে নারী নির্যাতন ও নারীকে অপমান করার এই পশুশক্তিকে যদি দমন করা না যায়, তাহলে শুধু যে সাধারণ নারীর জীবন বিপন্ন হবে তাই নয়, হাজার হাজার মেয়ের শিক্ষাজীবন বিপন্ন হতে পারে।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর