বৃহস্পতিবার, ৮ অক্টোবর, ২০২০ ০০:০০ টা

ধর্ষকদের বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স

আরও তিনজন গ্রেফতার, ধর্ষণ মামলা দেলোয়ারের বিরুদ্ধে

নোয়াখালী প্রতিনিধি

ধর্ষকদের বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স

ধর্ষণের প্রতিবাদ ও অভিযুক্তদের বিচার দাবিতে গতকাল রাজধানীতে বিক্ষোভ -বাংলাদেশ প্রতিদিন

নোয়াখালীর বেগমগঞ্জে নির্যাতনের শিকার সেই নারী স্থানীয় দেলোয়ার বাহিনীর প্রধান দেলোয়ার ও তার অপর এক সহযোগী আবুল কালামের বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগে আরও একটি মামলা দায়ের করেছেন। মঙ্গলবার দিবাগত রাত ২টার দিকে বেগমগঞ্জ থানায় তিনি বাদী হয়ে মামলাটি করেন।

এদিকে নোয়াখালী ডিবি পুলিশ নির্যাতনের আগের দুই মামলায় সোহাগ, নূর হোসেন রাসেল ও আবুল কালাম নামে আরও তিনজনকে গ্রেফতার করেছে। এ নিয়ে আগের দুই মামলায় ৯ আসামির মধ্যে নয়জনই গ্রেফতার হলো। গতকাল সন্ধ্যায় গোপন সংবাদের ভিত্তিতে আসামি আবুল কালামকে র‌্যাব-১১-এর সদস্যরা কুমিল্লার দাউদকান্দি থেকে আটক করেন। রাতে তাকে বেগমগঞ্জ থানায় হস্তান্তর করার কথা রয়েছে। ভুক্তভোগী নারীর করা নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন এবং পর্নোগ্রাফি আইনে করা দুই মামলা ছাড়াও গতকাল ওই নারীর করা ধর্ষণের নতুন মামলারও আসামি কালাম। লক্ষ্মীপুর র‌্যাব-১১ অফিস সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে। অন্যদিকে আসামি সাজু, সোহাগ ও রাসেলকে গতকাল বেলা সোয়া ২টার দিকে নোয়াখালীর সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মাসফিকুল হকের আদালতে হাজির করা হয়। বেগমগঞ্জ পুলিশ দুই মামলায় সাজুর সাত দিন করে রিমান্ড আবেদন করে। শুনানি শেষে দুই মামলায় আদালত তিন দিন করে ছয় দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করে। এ ছাড়া সোহাগ ও রাসেলের বিরুদ্ধে তিন দিনের রিমান্ড আবেদন করলে দুজনেরই দুই দিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করে আদালত। জেলা জজ আদালতের পিপি গুলজার আহমেদ জুয়েল জানান, গতকাল বেলা ৩টার দিকে আসামি সাজু, সোহাগ ও রাসেলকে জেলার ৩ নম্বর আমলি আদালতে হাজির করে বিভিন্ন মেয়াদে রিমান্ড আবেদন করে পুলিশ। এ বিষয়ে শুনানি শেষে বিচারক নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন এবং পর্নোগ্রাফি আইনে দায়ের করা দুই মামলায় সাজুর তিন দিন করে মোট ছয় দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। অপর দুই আসামি রাসেল ও সোহাগের পর্নোগ্রাফি আইনে দায়ের করা মামলায় দুই দিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করে আদালত। এদিকে বেগমগঞ্জে সেই নারীকে বিবস্ত্র করে নির্যাতনের প্রতিবাদ ও জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে নোয়াখালীতে মানববন্ধন ও সমাবেশ করেছেন আইনজীবীরা। জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি মোল্লা হাবিবুর রাসূল মামুনের নেতৃত্বে আইনজীবীরা এসব কর্মসূচি পালন করেন। গতকাল সকাল সাড়ে ১০টার দিকে নোয়াখালী প্রেস ক্লাবের সামনে ধর্ষণ ও নিপীড়নবিরোধী আইনজীবী মঞ্চের ব্যানারে এ কর্মসূচি পালিত হয়। ভুক্তভোগী নারীর নতুন ধর্ষণ মামলা সম্পর্কে বেগমগঞ্জ থানা সূত্রে জানা যায়, এক বছর আগে দেলোয়ার বাহিনীর প্রধান দেলোয়ার ওই নারীকে ভয়ভীতি দেখিয়ে জোরপূর্বক দুই দফায় ধর্ষণ করে। আর দেলোয়ারকে সহযোগিতা করে তার বাহিনীর অন্যতম সদস্য আবুল কালাম। দেলোয়ার অস্ত্রধারী সন্ত্রাসী হওয়ায় ওই নারী ভয়ে বিষয়টি কাউকে বলেননি। সূত্র জানায়, এরই মধ্যে ২ সেপ্টেম্বর দেলোয়ার বাহিনীর সদস্যরা ওই নারীর ঘরে ঢুকে তার স্বামীকে বেঁধে রেখে তাকে বিবস্ত্র করে শারীরিকভাবে নির্যাতন করে এবং তা মোবাইলে ধারণ করে। একপর্যায়ে ৪ অক্টোবর ধারণকৃত ভিডিওটি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে দেয় তারা। পরে এ ঘটনায় ওই নারী বাদী হয়ে বেগমগঞ্জ থানায় দেলোয়ার বাহিনীর অপর সদস্য বাদলকে প্রধান আসামি করে নয়জনের নাম উল্লেখ করে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন এবং পর্নোগ্রাফি আইনে দুটি মামলা দায়ের করেন। বেগমগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হারুন অর রশিদ জানান, দেলোয়ার বর্তমানে সিদ্ধিরগঞ্জ থানায় র‌্যাবের দায়ের করা অস্ত্র মামলায় রিমান্ডে রয়েছে। তাকে নির্যাতিতা নারীর দায়ের করা আগের দুটি মামলায় গ্রেফতারের জন্য গতকালই আদালতে আবেদন করা হয়েছে।

নতুন ধর্ষণ মামলায়ও তাকে গ্রেফতার দেখানো হয়েছে বলে জানান ওসি।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর