শুক্রবার, ৯ অক্টোবর, ২০২০ ০০:০০ টা

উন্নত যোগাযোগব্যবস্থা গড়ে তুলছে সরকার : প্রধানমন্ত্রী

হাওরের বিস্ময় ইটনা-মিঠামইন-অষ্টগ্রাম সড়ক উদ্বোধন

নিজস্ব প্রতিবেদক

উন্নত যোগাযোগব্যবস্থা গড়ে তুলছে সরকার : প্রধানমন্ত্রী

গণভবন থেকে গতকাল ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে কিশোরগঞ্জের ইটনা-মিঠামইন-অষ্টগ্রাম মহাসড়ক উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা -বাংলাদেশ প্রতিদিন

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, উন্নত যোগাযোগব্যবস্থা গড়ে তোলার লক্ষ্যে সরকার সারা দেশে সড়কের নেটওয়ার্ক গড়ে তুলেছে। নৌপথ সচল করেছে, রেলপথ সংযোগ পুনরায় স্থাপন করা হচ্ছে। নতুন অঞ্চলে রেললাইন সম্প্রসারণ করে রেলওয়ে যোগাযোগ বাড়ানোর কাজ করছে।

গতকাল সকালে গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে কিশোরগঞ্জের ইটনা-মিঠামইন-অষ্টগ্রাম মহাসড়ক উদ্বোধনকালে তিনি এসব কথা বলেন।

সড়কটি উদ্বোধনকালে নিজে দেখতে যাওয়ার আগ্রহের কথা জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, আমার মনটা পড়ে থাকল, এ সড়ক দিয়ে গাড়িতে কবে যাব। রাষ্ট্রপতিও চান, আমি যেন সরাসরি যাই। আমি যাব। করোনা পরিস্থিতির উন্নতি হলে এ সড়ক দেখতে যাব।

প্রধানমন্ত্রী ভাটি অঞ্চলের মানুষের নেতা রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদের কথা উল্লেখ করে বলেন, ‘মহামান্য রাষ্ট্রপতি যদি এ উদ্যোগটা না নিতেন আর বারবার আমাদেরকে না বলতেন তাহলে তো এ অঞ্চলে যে এ রকমভাবে রাস্তা করা যায়, এটা চিন্তারই বাইরে ছিল। আজকে যে তাঁর অনুপ্রেরণা এবং তাঁরই উদ্যোগে এই রাস্তাটি আমরা করতে পেরেছি। এই অঞ্চলের মানুষের এখন আর সেই আগের মতো দুঃখ থাকবে না। তা ছাড়া নাসিরনগরের সঙ্গেও একটা সংযোগ হয়ে যাচ্ছে। ওই নাসিরনগর হয়েও দ্রুত ঢাকা শহর চলে আসা যাবে। আবার ভৈরব হয়েও আসা যাবে। মানে সব দিক দিয়ে একটা চমৎকার যোগাযোগের ব্যবস্থা আমরা করে দিতে পেরেছি। আমি আশা করি এই ইটনা, মিটামইন এবং অষ্টগ্রামের মানুষ তারা আগে যে কষ্টটা ভোগ করতেন, সেটা আর করবেন না।’ তিনি বলেন, অষ্টগ্রামের পনির আন্তর্জাতিক মানের। কিন্তু বাজারজাত করা অসুবিধা বলে সেটা খুব ভালোভাবে কার্যকর হয়নি। এবার যেহেতু রাস্তা হয়ে গেছে, এখন আমি মনে করি, অষ্টগ্রামের পনির উৎপাদিত হয়ে ঢাকা শহরে শুধু না, আমরা বিদেশেও পাঠাতে পারব। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, গত শীতে করোনাভাইরাস প্রাদুর্ভাব শুরু হয়েছিল। আবার শীতকালে আসতে পারে, সেটা মাথায় রেখে প্রতিটি জেলা হাসপাতালে আইসিইউ নির্মাণ থেকে শুরু করে অক্সিজেনের ব্যবস্থাসহ তাৎক্ষণিক সব ধরনের চিকিৎসাসেবার ব্যবস্থা করে দিচ্ছি। আমরা করোনাভাইরাস পরিস্থিতিও জয় করে এগিয়ে যাব। গণভবন প্রান্তে স্বাগত বক্তব্য দেন আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক, সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। অনুষ্ঠানটি পরিচালনা করেন প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব ড. আহমদ কায়কাউস। মিঠামইন প্রান্তে জেলা প্রশাসক মো. সারওয়ার মুর্শেদ অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন। সেখানে স্থানীয় সংসদ সদস্য রেজওয়ান আহাম্মদ তৌফিকসহ কয়েকজন উপকারভোগী মতবিনিময় করেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, হয়তো আমরা আরও অনেক দূর উন্নতি করতে পারতাম। কিন্তু করোনাভাইরাস আমাদের যথেষ্ট ক্ষতিগ্রস্ত করেছে। এটা শুধু বাংলাদেশ না, আজ বিশ্বব্যাপী অর্থনীতি স্থবির। সবচেয়ে কষ্টের বিষয় হচ্ছে আমাদের ছোট্ট ছোট্ট ছেলেমেয়েরা স্কুলে যেতে পারছে না। কলেজে যেতে পারছে না, বিশ্ববিদ্যালয়ে যেতে পারছে না। তাদের পড়াশোনা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। তার পরও আমরা চাচ্ছি তাদের পড়াশোনাটা যাতে চলমান থাকে। সেজন্য যেহেতু আমরা এইচএসসি বা এসএসসি পরীক্ষা নিতে পারছি না, কিন্তু তাদের যে টেস্ট পরীক্ষা বা ক্লাসের পরীক্ষাগুলি নিয়ে তাদের রেজাল্ট দিয়ে ইতোমধ্যে আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি। তাদের প্রমোশনটা দিয়ে দেওয়া হবে। তারা যেন পড়াশোনাটা অব্যাহত রাখতে পারে। প্রধানমন্ত্রী বলেন, হাওরে বিশাল মৎস্য ভান্ডার আছে। সেই মৎস্য উত্তোলন, মৎস্য চাষ, প্রক্রিয়াজাত করা, বাজারজাত করার যাতে সুবিধা হয় সেভাবে শিল্প গড়ে তুলতে চাই। তিনি বলেন, হাওর অঞ্চলে যেমন কিশোরগঞ্জ, নেত্রকোনা এ সমস্ত অঞ্চলে কোনো বিশ্ববিদ্যালয় ছিল না। আমরা বিশ্ববিদ্যালয় নির্মাণ করে দিচ্ছি। প্রত্যেকটা বড় জেলায় একটা করে বিশ্ববিদ্যালয় হোক, সেটা আমরা চাই। যেন ছেলেমেয়েরা ঘরের ভাত খেয়ে বাড়ির কাছে থেকে উচ্চশিক্ষা পেতে পারে সেই ব্যবস্থাটা দিচ্ছি।

সর্বশেষ খবর