রবিবার, ১১ অক্টোবর, ২০২০ ০০:০০ টা

তীব্র স্রোতে পদ্মা সেতুর স্প্যান বসানো যাচ্ছে না

মুন্সীগঞ্জ প্রতিনিধি

পরিকল্পনা অনুযায়ী গতকাল বসানো যায়নি পদ্মা সেতুর ৩২তম স্প্যান। তীব্র স্রোতের কারণে ভাসমান ক্রেন তিয়ান-ই নোঙর করতে সমস্যা হওয়ায় এবং ঠিকমতো স্প্যানকে ‘পজিশনিং’ করা সম্ভব না হওয়ায় এদিন বিকালে কাজ স্থগিত করা হয়েছে। তবে আজ সকালে স্প্যান বসানোর কাজ আবার শুরু হবে। সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, সবকিছু ঠিকঠাক থাকলে আজ সকালেই পদ্মা সেতুর মাওয়া প্রান্তের ৪ ও ৫ নম্বর পিলারের ওপর বসানো হবে স্প্যানটি। গতকাল সারা দিন স্প্যানটি বসানোর প্রাণান্ত চেষ্টা করা হয়। তবে এতে বাদসাধে প্রবল স্রোত আর পলি। যে কারণে সকাল থেকে বিকাল ৫টা পর্যন্ত ৩২তম স্প্যানটি বসানোর চেষ্টা করেও সফল হওয়া যায়নি। পদ্মা সেতু প্রকল্পের ব্যবস্থাপক ও নির্বাহী প্রকৌশলী দেওয়ান মো. আবদুল কাদের বাংলাদেশ প্রতিদিনকে জানান, এ সেতুর জন্য প্রয়োজন ৪১টি স্প্যান। এর মধ্যে সব স্প্যানেরই মালামাল চীন থেকে সমুদ্রপথে বাংলাদেশে এসে পৌঁছেছে। অনেক আগেই মালালমাল এনে ৩৯টি স্প্যান প্রস্তুত করা হয়েছে। এর মধ্যে ৩১টি স্প্যান সেতুর পিলারে বসেছে এবং ৩২তমটি আজ বসবে। বাকি নয়টির সাতটি স্প্যান মাওয়ার কুমারভোগ কনস্ট্রাকশন ইয়ার্ডে সম্পূর্ণ প্রস্তুত রয়েছে। পরে দুটির মালামাল আসায় সে দুটিও প্রস্তুত হচ্ছে। এরই মধ্যে ৩১টি স্প্যান পদ্মা সেতুর পিলারে বসায় প্রায় পৌনে পাঁচ কিলোমিটার সেতু দৃশ্যমান হয়েছে। এ ছাড়া ৩৩তম স্প্যানটি রংতুলির কাজও শেষ। এখন পিলারে বসানোর জন্য এটি সম্পূর্ণ প্রস্তুত। মূল সেতুর ৩৩তম স্প্যান পেইন্টিং কাজ শেষ করা হয়েছে। এখন আনুষঙ্গিক কাজ (স্টেয়ার/রেল/ব্যালান্স লোড/লিফটিং হুক) করার পর এটি পিলারে এ মাসের মধ্যেই স্থাপন করা হবে। জানা গেছে, দেশের অন্যতম মেঘা প্রকল্প পদ্মা বহুমুখী প্রকল্পের নানামুখী কাজ এগিয়ে চলছে দ্রুত গতিতে। এ সেতুর উভয় পাড়ে সংযোগ সড়ক ও টোল প্লাজার কাজ শেষ হয়েছে। চলছে নদী শাসন, নদী শাসনের জন্য বিপুল পরিমাণ ব্লক তৈরি, ড্রেজিংয়ের কাজসহ বিভিন্ন স্থানে স্লপিংয়ের কাজ। বিশাল এ কর্মযজ্ঞ রাতের আঁধারকেও হার মানায়। কর্মমুখর পদ্মায় ঝড়-বৃষ্টি আর প্রবল স্রোতের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে দ্রুত এগিয়ে চলছে সেতু নির্মাণকাজ। ইতিহাসের সাক্ষী হতে ইতিমধ্যে ৩১টি স্প্যান পিলারে বসে মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়েছে। জেলার পুলিশ সুপার আবদুুল মোমেন পিএম বলেন, পদ্মা সেতু নির্মাণকাজে প্রশাসনের সব সময় সজাগ দৃষ্টি রয়েছে। কাজ শেষ হলে দেশে প্রবৃদ্ধির হার বাড়বে। এটি বাস্তবায়নে মুন্সীগঞ্জ জেলা আরও উন্নত হবে, জীবনমান পাল্টে যাবে। এ ছাড়া দেশের দক্ষিণ অঞ্চলের ২১টি জেলার সঙ্গে ঢাকাসহ সারা দেশের যোগাযোগ নিশ্চিত হবে। উন্মোচিত হবে নতুন দিগন্ত।

সর্বশেষ খবর