সোমবার, ১২ অক্টোবর, ২০২০ ০০:০০ টা

করোনা বাড়তে পারে, প্রয়োজনের বেশি খরচ নয় : প্রধানমন্ত্রী

নিজস্ব প্রতিবেদক

করোনা বাড়তে পারে, প্রয়োজনের বেশি খরচ নয় : প্রধানমন্ত্রী

করোনার প্রাদুর্ভাব আবার বাড়তে পারে আশঙ্কা করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাব আবার বাড়লে প্রচুর অর্থের প্রয়োজন হবে। তাই অর্থ সাশ্রয়ে, বাজেটের অর্থ ব্যয়ে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের সর্বোচ্চ মিতব্যয়ী হতে হবে। আমাদের মিতব্যয়ী হতে হবে। ঠিক যেটুকু এখন আমাদের নেহাত প্রয়োজন, তার বেশি কোনো পয়সা খরচ করা চলবে না।

গতকাল গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সে সাভার সেনানিবাসে অনুষ্ঠিত বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ১০টি ইউনিট ও সংস্থাকে জাতীয় পতাকা প্রদান অনুষ্ঠানে এই নির্দেশ দেন তিনি। সরকারি অর্থ ব্যয়ের ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্টদের মিতব্যয়ী হওয়ার নির্দেশ দিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, কভিড-১৯ এর এই সংকটময় সময়েও মানুষের কল্যাণে আমরা নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছি। এবার ৫ লাখ ৬৮ হাজার কোটি টাকার বাজেট দিয়েছি। যেটা দেওয়া খুবই কঠিন ছিল। তবু আমরা দিয়েছি, তারপরও বলেছি যে অর্থ খরচের ব্যাপারে সবাইকে একটু সচেতন থাকতে হবে। কারণ, করোনাভাইরাস যদি আবার ব্যাপক হারে দেখা  দেয় তাহলে আমাদের প্রচুর অর্থের প্রয়োজন হবে। এ প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, করোনা বাড়লে মানুষকে আবার আমাদের সহযোগিতা করতে হবে, চিকিৎসার ব্যবস্থা করতে হবে, ওষুধ কিনতে হবে, হয়তো আরও ডাক্তার-নার্স লাগবে। বিশ্বের বিভিন্ন দেশে দ্বিতীয় দফার করোনা মহামারী দেখা দেওয়ার কথা তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এখনো করোনাভাইরাসের প্রভাব আছে। আশঙ্কা করা হচ্ছে আরেকবার হয়তো এই করোনাভাইরাসের প্রভাব বা প্রাদুর্ভাব দেখা দিতে পারে। কারণ ইউরোপসহ বিভিন্ন দেশে আবার নতুন করে দেখা দিচ্ছে। আমাদের এখন থেকেই সবাইকে সুরক্ষিত থাকতে হবে। সেই সঙ্গে আমাদের খাদ্য উৎপাদন অব্যাহত রাখতে হবে।

দেশে খাদ্য উৎপাদন আরও বাড়ানোর তাগিদ দিয়ে সরকারপ্রধান বলেন, খাদ্য সংকট যাতে দেখা না দেয়। করোনার কারণে বিশ্বব্যাপী একটা খাদ্য মন্দা দেখা দিচ্ছে। অনেক উন্নত দেশও হিমশিম খাচ্ছে। বাংলাদেশে আমরা সঠিক সময়ে যথাযথ পদক্ষেপ নিয়েছিলাম বলেই আজকে সেই সমস্যাটা আমাদের দেখা দিচ্ছে না। কিন্তু ভবিষ্যতের জন্য খাদ্য উৎপাদন বাড়ানোর বিকল্প নেই। প্রধানমন্ত্রী তার বক্তব্যে করোনা মহামারীর শুরু থেকে মানুষের জীবন এবং দেশের অর্থনীতিকে বাঁচাতে নগদ অর্থ সহায়তাসহ সরকারের নেওয়া বিভিন্ন পদক্ষেপ তুলে ধরেন।

আন্তবাহিনী জনসংযোগ পরিদফতর (আইএসপিআর) জানায়, বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ৯ পদাতিক ডিভিশনের তত্ত্বাবধানে সাভার সেনানিবাসে গতকাল কোর অব মিলিটারি পুলিশ সেন্টার অ্যান্ড স্কুল (সিএমপিসিএন্ডএস), ১, ৩, ৬ ও ৮ ইঞ্জিনিয়ার ব্যাটালিয়ন, অ্যাডহক ১১ বীর (মেকানাইজড), ১২ বীর, ১৩ বীর, ১৫ বীর (সাপোর্ট ব্যাটালিয়ন), ৫৯ ইস্ট বেঙ্গল (সাপোর্ট ব্যাটালিয়ন) এবং স্কুল অব ইনফ্যান্ট্রি অ্যান্ড ট্যাকটিকস (এসআইএন্ডটি)-কে জাতীয় পতাকা (ন্যাশনাল স্ট্যান্ডার্ড) প্রদান প্যারেড অনুষ্ঠিত হয়। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গণভবন থেকে ভিডিও টেলিকনফারেন্সের (ভিটিসি) মাধ্যমে সংযুক্ত থেকে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন। সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল আজিজ আহমেদ প্রধানমন্ত্রীর পক্ষে প্রতিষ্ঠানগুলোকে জাতীয় পতাকা (ন্যাশনাল স্ট্যান্ডার্ড) প্রদান করেন। প্যারেড শেষে প্রধানমন্ত্রী তার বক্তব্যে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের হাতে গড়া সেনাবাহিনীকে একটি প্রশিক্ষিত, সুশৃঙ্খল এবং আধুনিক সাজসজ্জায় সজ্জিত বাহিনী হিসেবে গড়ে তোলার প্রত্যয় ব্যক্ত করেন। তিনি দেশ গঠন ও বিভিন্ন দুর্যোগ মোকাবিলায় এবং আন্তর্জাতিক পরিমন্ডলে সেনাবাহিনীর আত্মত্যাগ ও অসামান্য অবদানের কথা স্মরণ করেন। ন্যাশনাল স্ট্যান্ডার্ড পাওয়া প্রতিষ্ঠানগুলো গৌরবময় ঐতিহ্যের ধারা অব্যাহত রেখে ক্রমান্বয়ে উন্নতির দিকে এগিয়ে যাবে এবং সেনাবাহিনীর চৌকস ইউনিট হিসেবে নিজেদের অবস্থান সুসংহত ও সুদৃঢ় করবে বলে প্রধানমন্ত্রী আশাবাদ ব্যক্ত করেন। অনুষ্ঠানে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী ডা. মো. এনামুর রহমান এমপিসহ ঊর্ধ্বতন সামরিক ও অসামরিক কর্মকর্তাগণ এবং বিভিন্ন পদবির সেনা সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।

সর্বশেষ খবর