ধর্ষণের সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদন্ড এ ধরনের জঘন্য অপরাধ কিছুটা হলেও কমাতে পারবে বলে মনে করেন সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি এ এইচ এম শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিক। তিনি বলেন, মৃত্যুদন্ডের শাস্তি নিশ্চিতভাবে একটা ভীতি তৈরি করতে পারবে। গতকাল ধর্ষণের সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদন্ড যুক্ত করে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের খসড়া সংশোধনীতে মন্ত্রিসভার অনুমোদনের পর বাংলাদেশ প্রতিদিনকে তিনি এসব কথা বলেন।
বিচারপতি মানিক বলেন, পৃথিবীর যেসব দেশে এ ধরনের অপরাধে কঠোর সাজা রয়েছে, সেখানে অপরাধের সংখ্যা অনেক কম। বাংলাদেশেও আইনে কঠোর শাস্তি যুক্ত হওয়ায়, যারা ধর্ষণ করার কথা চিন্তা করছিল, তাদের মধ্যে আতঙ্ক তৈরি হবে। বিচার প্রক্রিয়ার মাধ্যমে দু-একজন ধর্ষককে যদি ফাঁসিতে ঝোলানো যায়, তাহলে এ ধরনের অপরাধের ঘটনা আরও কমবে। তবে শুধু শাস্তি বৃদ্ধি করাই যথেষ্ট নয়, তদন্ত ও বিচার যেন বিলম্বিত না হয়, এ বিষয়টি নিশ্চিত করতে হবে। তিনি বলেন, ‘আমাদের দেশে ধর্ষণের ঘটনার শাস্তির হার খুব কম। সবার আগে খুঁজে বের করতে হবে কী কারণে শাস্তি কম হচ্ছে। এরপর ধরে ধরে সব সমস্যা সমাধান করতে হবে। অবসরপ্রাপ্ত এই বিচারপতি বলেন, শাস্তি কম হওয়ার অন্যতম একটি কারণ হলো সাক্ষী হাজির না হওয়া। অনেক সময় ধর্ষিতা নিজেও সাক্ষ্য দিতে যান না। পরিবারের সদস্যরাও সাক্ষ্য দিতে যেতে চান না। ধর্ষক সব সময়ই ধর্ষিতা ও তার পরিবারকে হুমকি-ধমকি দেয়। সাক্ষীদের সুরক্ষার জন্য যথেষ্ট ব্যবস্থা নিতে হবে, যাতে সাক্ষীরা ভয়-ভীতির ঊর্ধ্বে উঠে সাক্ষ্য দিতে যেতে পারেন। ধর্ষকের জামিন ঠেকাতে রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবীদের সক্রিয় থাকতে হবে বলেও মনে করেন তিনি। বিচারপতি মানিক বলেন, ‘ধর্ষণ একটি আপস-অযোগ্য অপরাধ। এ জন্য এ ধরনের ঘটনায় গ্রাম্য শালিস বন্ধ করতে হবে। আমি বিচারপতি থাকাকালে অন্যায়ভাবে শালিস করার কারণে অনেককে জেলে দিয়েছিলাম।’ ধর্ষণের ঘটনা রোধে শালিসকারীদেরও আইনের আওতায় আনতে হবে বলে মনে করেন অবসরপ্রাপ্ত এই বিচারপতি।